মরদেহের খণ্ডাংশ ফেলার স্থান জিহাদের দেখানো স্থান আদৌ ঘটনাস্থল কি-না
- আপডেট সময়- ০৬:২১:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪ ১২১ বার পড়া হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত
জিহাদ-শিমুলের ভিডিও কল,বেরিয়ে এলো কিলিং মিশনের আদ্যোপান্ত..!
সমকালীন কাগজ ডেস্ক।।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যাকাণ্ডের সেই স্থান দেখালেন দুই দেশে গ্রেফতার হওয়া ৪ আসামি।
সঞ্জীবা গার্ডেনের ওই ফ্ল্যাটে এসময় ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ প্রতিনিধি দলের সামনে ঢাকা থেকে ভিডিও কলে যুক্ত করা হয় আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুলসহ গ্রেফতার ৩ জনকে।
ফ্ল্যাটের কোথায়, কিভাবে তাকে হত্যা করা হয়, মরদেহ কিভাবে খণ্ড খণ্ড করা হয়, কিভাবে বাইরে নেওয়া হয় তারা সবই বর্ণনা করেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে গ্রেফতার ৩ আসামি আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর ও সিলাস্তী রহমান। তদন্তের স্বার্থে এই তিন আসামির সঙ্গে কলকাতায় গ্রেফতার কসাই জিহাদের ভিডিও কলে এ কথোপকথন হয়। মূলত শিমুল ভূঁইয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যেসব তথ্য দিয়েছেন সেগুলো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কলকাতা আটক কসাই জিহাদকে ভিডিও কলে নেওয়া হয়।
এছাড়া মরদেহের খণ্ডাংশ ফেলার স্থান কসাই জিহাদ যেখানে দেখিয়েছেন আদৌ ঘটনাস্থল এক কিনা সে বিষয়েও কথা বলছিলেন।
ভিডিও কলে তাদের কথোপকথনের সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতে অবস্থানরত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ৩ সদস্যের দল ও কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগন।
সোমবার (২৭ মে) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার কাসাই জিহাদ কিলিং মিশনের শুরু থেকে দেহাংশ ফেলা পর্যন্ত সবকিছুর তথ্য জানেন। এজন্য তার সঙ্গে ভিডিও কলে কথোপকথন হয়েছে ঢাকায় গ্রেফতার নারী সহ ৩ আসামির।
উভয়েই নতুন চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য দিয়েছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে।
ভিডিও কলে ফ্ল্যাটের হত্যাকাণ্ডের স্থান, মাংস থেকে হাড় আলাদা করার জায়গা ও বেরিয়ে যাওয়ার স্থানসহ প্রত্যেকটি স্থানের বর্ণনা দেন আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া।
কসাই জিহাদ সহ তারা প্রায় সকলেই একই তথ্য জানান।
ডিবির কর্মকর্তারা জানান, ভারতীয় পুলিশের উপস্থিতিতে কসাই জিহাদকে নিয়ে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনের ওই ফ্ল্যাটে যায় ডিবির প্রতিনিধি দল।
আনোয়ারুল আজীম আনারের দেহ কিভাবে খণ্ড খণ্ড করা হয় তার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন কসাই জিহাদ। এসময় ডিবির প্রতিনিধি দল কসাই জিহাদকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। জিহাদকে ওই ফ্ল্যাটে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখালে তিনি সবকিছু অকপটে স্বীকার করেন।
প্রসঙ্গে,অপহরণ মামলার তদন্ত ও মরদেহ উদ্ধারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত দল রোববার সকালে কলকাতায় যায়। প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন ওয়ারী বিভাগের ডিসি মো. আব্দুল আহাদ ও এডিসি শাহীদুর রহমান।
সোমবার বেলা দুইটা পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের ১৪ দিন পার হলেও এমপি আনারের টুকরো টুকরো করা দেহের কোনো অংশই এখনো পর্যন্ত উদ্ধার হয়নি। খুনে ব্যবহার করা চাপাতিসহ অন্য ধারালো অস্ত্রও উদ্ধার করা যায়নি। আলামত উদ্ধারে কলকাতা পুলিশ ময়লার ভাগাড়, খাল ও ডোবায় গত কয়েক দিন ধরেই তল্লাশি চালাচ্ছে।
এদিকে পুলিশ রিমান্ডে থাকা ৩ আসামির জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত আরও কয়েকজনের সম্পৃক্ততার তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তারা বেশিরভাগই দেশ-বিদেশে অবস্থান করছেন। তথ্য যাচাই-বাছাই করে তাদের গ্রেফতারে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এবিষয়ে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘সঞ্জীবা গার্ডেন থেকে ঢাকায় রিমান্ডে থাকা কিলার শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ আমানকে ভিডিও কলে যুক্ত করা হয়। কিভাবে খুন করা হয়েছে, মরদেহ কোথায় টুকরো টুকরো করা হয়েছে তা ভিডিও কলে বিস্তারিত দেখান শিমুল ভূঁইয়া। খুনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে আমরা
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তদন্তে কী পেয়েছি তারা কী পেয়েছে, সেই তথ্য আদান-প্রদান করা হয়। এছাড়া কলকাতায় আটক কসাই জিহাদের সঙ্গেও কথা বলেছি।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক স্বর্ন ব্যবসায়ী বন্ধুর বাড়িতে।
পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন এমপি আনার। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার।