সর্বশেষ:-
মৌলভীবাজারের একমাত্র নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী চা-কন্যা গীতা কানু
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৩:৩৩:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪ ৮২ বার পড়া হয়েছে
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার(সিলেট) প্রতিনিধি।।
মৌলভীবাজার জেলার সাতটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একমাত্র নারী প্রার্থী গীতা রানী কানু (৪৩)। তিনি কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
উপজেলার কুরমা চা-বাগানে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। দারিদ্র্য সহ নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে অনেক ছাড়াই উত্তরাই পাড় করে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন পিছিয়ে থাকা চা জনগোষ্ঠীর এই নারী।
গীতা কানু থাকেন কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ইসলামপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্ত ঘেঁষা কুরমা চা-বাগানে।
গত বৃহস্পতিবার তাকে দেখা গেল কাকা সীতারাম কানু, কাকি শঙ্করী রায় কানুসহ আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইতে। আলাপকালে তিনি জানালেন, সাধারণ জনগণ চাঁদা তুলে আমাকে নির্বাচন করার জন্য জামানতের টাকা দিয়েছেন।
গীতা বলেন, কমলগঞ্জে ২২টি চা-বাগান। এই চা-বাগানসহ চা জনগোষ্ঠীর নানা অধিকারের কথা তিনি অনেক দিন ধরে বলছেন। চা জনগোষ্ঠীর দাবিদাওয়া আদায়, তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে নানা পর্যায়ের সংগঠনে যুক্ত হয়েছেন। জনপ্রতিনিধি হওয়ার এই ইচ্ছার পেছনেও আছে হতদরিদ্র, পিছিয়ে থাকা মানুষগুলোর জীবনমান উন্নয়নের চাওয়া।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার মতো সাহস অর্জন করতে অনেকটা বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে গীতা রানী কানুকে। বাড়ির কাছে ইসলামপুর পিএনপি হাইস্কুলে তিনি পড়ালেখা করেছেন। বাবার মুদি দোকান ছিল, পাশাপাশি ছিলেন চা-বাগানের শ্রমিক। মা ছিলেন গৃহিণী। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। স্কুল পর্যায় শেষে তিনি মুদি দোকানের ব্যবসায় যুক্ত হন।
গীতা বলেন, দোকানে অভাবী মানুষ আসেন। তাদের সাধ্যমতো সাহায্য করি। মানুষকে সাহায্য করতে আমি পছন্দ করি। ত্যাগেই আমার আনন্দ।
মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছা থেকে গীতা রানী কানু ২০১৪ সালে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদে মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। জয়ী হতে পারেননি। পরিবারের লোকজন তার পাশে থাকেননি। একপর্যায়ে কিছুটা অভিমান নিয়ে তিনি ২০১৬ সালে ভারতে চলে যান। তবে দুই মাস পর তিনি সেখানে থেকে ফিরে আসেন। অবহেলিত মানুষের জন্য কিছু করার তাগিদে বোধহয় মনস্থির করেন। এখন তিনি বাংলাদেশ চা-শ্রমিক নারী ফোরামের আহ্বায়ক, চা জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন পরিষদের সদস্যসচিব এবং চা-শ্রমিক মহা সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
এই প্রার্থীর কাকা সীতারাম কানু বলেন, মানুষ বেশ সাড়া দিচ্ছে। কাকি শঙ্করী রায় কানু বলেন, প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াইছে, এতেই ভালো লাগছে। এখন সবকিছু মানুষের হাতে। সাধারণ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে ভাগ্য নির্ধারণ।