ঢাকা ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
জুড়ীতে জমি নিয়ে বিরোধে যুবক’কে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার-১ আলফাডাঙ্গায় অধিক মূল্যে সার বিক্রির অপরাধে বিসিআইসি ডিলারকে জরিমানা রিমান্ড শেষে কারাগারে আতিক,আলেপ ও ফারুকী   নকলায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ড: ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কোটি টাকা ছাড়িয়েছে  কুলাউড়ায় মনু নদীর তীরে অবৈধভাবে মাটি কাটার দায়ে লাখ টাকা অর্থদন্ড আইজিপি ময়নুল ও ডিএমপি কমিশনার মাইনুল কোথায় বদলি হলেন ফের পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৫৪ কর্মকর্তাকে বদলি ঈশ্বরদীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে এসডি টিভির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হাফলং ভারতের সুইজারল্যান্ড মৃত্যুকূপের সন্ধানে সারা বিশ্বের পরিযায়ী পাখি টেকনাফে র‍্যাবের অভিযানে ১১৫ বোতল বিদেশি মদ জব্দ ভেড়ামারায় ভুয়া চিকিৎসকের ৩মাসের জেলসহ অর্থদন্ড কুষ্টিয়া জেলা নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত মুন্সীগঞ্জে ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ভিক্ষুকের দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না  নারায়ণগঞ্জে এক যুবকের গলাকাটা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার ভালুকায় পৌর শ্রমিকদলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত স্বপ্ন পূরন হলো না মৌলভীবাজারের লিটনের,বেলারুশে পিটিয়ে হত্যা  টংঙ্গীবাড়ীতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বীজ-আলু, মনিটরিংয়ে ইউএনও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য হলেন জাবি অধ্যাপক ভালুকার কৃত্তি সন্তান নতুন আইজিপি বাহারুল ও ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত নারায়ণগঞ্জে চুরির অভিযোগে একজনকে পিটিয়ে হত্যা ঈশ্বরদীতে এসডি টেলিভিশন ২য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত  বিআইডব্লিউটি’র সিভিল ও সার্ভেয়ার জটিলতার অবসান চায় কর্মকর্তারা মৌলভীবাজার পূজা উদযাপন পরিষদ সম্পাদক মহিম গ্রেপ্তার সিদ্ধিরগঞ্জে হেলিকপ্টার দেখতে গিয়ে গুলিতে নিহত সুমাইয়ার মরদেহ উত্তোলন যাত্রবাড়ি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র দৌলতপুরে উদ্ধার র‍্যাবের ২ অধিনায়ক এবং ৩ পরিচালককে নিজ বাহিনীতে ফেরত টংঙ্গীবাড়ীতে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু নির্মানে ধীরগতি গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার যানজট নিরসনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  সাতক্ষীরা-শ্যামনগর মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে আটক-৮ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতির পদত্যাগ মৌলভীবাজারে কমলা চাষে অভূতপূর্ব সাফল্য  মিরপুরে মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে স্বামী-স্ত্রী  সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ৮ দিনের রিমান্ডে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে ‘দ্য হিন্দু’কে ড. ইউনূস জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৩৭ জনের সদস্যপদ স্থগিত সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম উত্তরায় গ্রেপ্তার মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বালুমহালে অভিযানে আটক-৫  রায়পুরায় পূজামণ্ডপের প্যান্ডেল ভাঙচুর নিয়ে গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন কুষ্টিয়ায় ৮০ লাখ টাকা মুল্যের ভারতীয় কোকেন উদ্ধার নকলায় মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের ঝুঁলন্ত মরদেহ উদ্ধার ঈশ্বরদীতে গুলির পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে কুপিয়ে হত্যা ভালুকায় ইউএনও-এসিল্যান্ডের নেতৃত্বে বাজার মনিটরিং আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে আট মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে হাজির করা হলো ভালুকায় নয়াপাড়া স্কুলের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গসহ অনিয়মের অভিযোগ মেঘনাঘাটে টিস্যুর গোডাউনে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ঈশ্বরদীতে রুপপুর প্রকল্পের দোভাষীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসিসহ ৩ পুলিশ কর্মকর্তা ক্লোজড মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের লীজকৃত জমি আত্মসাতের চেষ্টা বন বিভাগ খোদ জানেন না জমির পরিমাণ  কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু মৌলভীবাজারে এক জমিতে ১১জাতের ধানের চাষ ঈশ্বরদীতে সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন  সিদ্ধিরগঞ্জে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত লম্পট হাকিম গ্রেপ্তার গিনেস বুকে বিশ্বের সবচেয়ে কৃপণ যে নারীর নাম রয়েছে জানা গেল পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজের কন্টেইনারে কী আছে পুলিশকে জনগণের বাহিনী হিসেবে গড়তে হবে : আইজিপি মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ দেবহাটায় ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উৎযাপন মুন্সিগঞ্জে হতে হাত বদলে আলু বিক্রি হচ্ছে দেড়গুণ বেশি দামে শ্রীমঙ্গলে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক তিন আসামি গ্রেপ্তার মিরপুরে ট্রাকের ধাক্কায় স্কুল ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু মৌলভীবাজারে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সভায় সকল উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ‘গলি থেকে রাজপথ’ শ্যামবাজারের রক থেকে উঠে প্রাসাদে মিঠুন চক্রবর্তী  বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ না’গঞ্জের ১১তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত  দৌলতপুরে অস্ত্র-গুলি ককটেলসহ যুবদল ও যুবলীগ নেতা আটক ভালুকায় পৌর বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা ও  দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত সাবেক ওয়াসার এমডি ও নাসিক মেয়রের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার কারন জানা গেলো এক কর্মস্থলে ৩ বছরের বেশি নয়, পরিপত্র জারি নাম-লোগো-পোশাকসহ বদলে যাচ্ছে র‍্যাব পরকীয়ার বলি হয়ে প্রেমিকার হাতেই খুন হন শিল্পপতি মাসুম ভালুকায় পৌর বিএনপির উদ্যোগে  আলোচনা ও দোয়া মাহফিল ভালুকায় স্কুল ছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ  বহু গুনে গুণান্বিত কাঁচালঙ্কা অকাতরে খান চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি সহ এনটিসিএল’র বাগান চালুর দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরে নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনারের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন সালাউদ্দিন চৌধুরী  মৌলভীবাজার কোর্টের বিপরীতে অবৈধ দখলদারদের দখলে সরকারি কোটি টাকার জমি  দৌলতপুরে অস্ত্র ও ১৩ রাউন্ড গুলিসহ দুই ভাই আটক মৌলভীবাজারে দ্রুতগামী মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক নারী নিহত ভারতীয় রেলওয়েতে টয়লেট চালুর অজানা ইতিহাস ঈশ্বরদীতে অনাড়ম্বর আয়োজনে বিআরইএল’র ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন বিএনপি নেতা-কর্মীদের হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন না’গঞ্জে কর্ণফুলী শিপইয়ার্ড পরিদর্শনে নৌ-উপদেষ্টা মুন্সীগঞ্জে বাংলাবাজার ইউনিয়ন সভাপতি ঘিরে বিএনপির দু’গ্রুপে উত্তেজনা ফরিদপুরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত দূর্নীতির রাজত্বের রাজা কানুনগো শ্রীপদ দীর্ঘ ৪ বছরেও চালু হয়নি সুন্দরগঞ্জের পানি শোধনাগার টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ইয়াবা ও অস্ত্রসহ রোহিঙ্গা যুবক আটক ইসলামী শরী’য়ার দৃষ্টিতে উশরের বিধান ও বাংলাদেশের ভূমি সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিলে ডিইউজের নিন্দা মৌলভীবাজার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে সেবাগ্রহীতা কর্মশালা অনুষ্ঠিত  উত্তরায় বিএনপি নেতা শিমুল-কামরুলের নেতৃত্বে আনন্দ মিছিল  মৌলভীবাজারে চিলের থাবায় ছাত্রী আহত ভালুকায় পৌর বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত গাজীপুরে আজও ১৪ কারখানা বন্ধ, ৩টিতে বিক্ষোভ-কর্মবিরতি চরভদ্রাসনে ইউএসএআইডি’র সবাই মিলে শিখি প্রকল্পের মেলা অনুষ্ঠিত মণিপুরিদের ঐতিহ্যবাহী রামলীলা উৎসব আগামী ১৫ নভেম্বর খাসি আদিবাসীদের ”খাসি সেং কুটস্নেম” উৎসব এবার হচ্ছে না  নবগঠিত উপদেষ্টা বশির বাণিজ্যে, ফারুকী সংস্কৃতি ও আসিফের দপ্তর পরিবর্তন ছয় উপদেষ্টার দপ্তর পুনর্বণ্টন, কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন

সবার উপরে ‘মায়ের আঁচল’ তাহার উপরে নাই

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৩:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪ ৯৬ বার পড়া হয়েছে

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
তখন খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!
আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।
আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।
আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ।
আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”।
 তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল।
 উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন । কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।
 মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত।
আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয় ।
 কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
 মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
 যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম ।
শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
 শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।
গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল।
মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা।
মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।
কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।
আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন।
 মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।
বাবার সেই ধুতি কোথায়???
 আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে।
শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।
ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।
আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন।
মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

সবার উপরে ‘মায়ের আঁচল’ তাহার উপরে নাই

আপডেট সময়- ০৩:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
তখন খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!
আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।
আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।
আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ।
আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”।
 তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল।
 উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন । কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।
 মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত।
আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয় ।
 কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
 মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
 যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম ।
শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
 শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।
গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল।
মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা।
মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।
কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।
আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন।
 মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।
বাবার সেই ধুতি কোথায়???
 আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে।
শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।
ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।
আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন।
মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।