সর্বশেষ:-
শ্রীমঙ্গলে আলু চাষে সাফল্যের হাতছানি
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৬:২৬:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪ ৭১ বার পড়া হয়েছে
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার উপজেলার শ্রীমঙ্গল বীজ আলু চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে এই অঞ্চলে আলু চাষে বিপ্লব ঘটানোর সম্ভব বলে ধারণা করছেন স্থানীয় বিএডিসি’র কর্মকর্তা। যদি প্রচলিত জাতের বাইরে গিয়ে শিল্পে ব্যবহার ও রপ্তানী যোগ্য আলু বেশী করে চাষ করা যায়, তাহলে আলু রপ্তানী করা যাবে। এতে যেমন কৃষকরা লাভবান হবে, তেমনি লাভবান হবে সরকার।
জানায়ায, শ্রীমঙ্গলের এতোঞ্চলের আওতায় রয়েছে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলা। এরমধ্যে এবার মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে ৩৫ একর জমিতে আলু বীজ চাষ করা হয়েছে। ফলন হয়েছে প্রায় ২৪৫ টন। এ থেকে ৭৫.৬০০ টন আলু বীজ সরকারি ভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আলুর ফলন দেখে খুশি কৃষকরা।
সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল উপজেলার পারেরটং গ্রামে মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে আলুর ফলন দেখে উচ্ছসিত হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুস শহীদ এমপি।
তবে সেচ ও কৃষকের জমির মালিকানা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে বিএডিসি। সেচের ব্যবস্থা না থাকায় এ অঞ্চলে অনেক জমি পতিত থাকে। অনেক জমি চা বাগানের মালিকানাধীন। অনেক জমির মালিক আবার প্রবাসী। এসব জমি বর্গা চাষ নিয়ে কৃষকরা ফসল ফলান। আর জমির মালিকানা না থাকায় অনেক কৃষক ব্যাংক ঋণ বা ভর্তুতি সুবিধা পান না। তাই ইচ্ছা থাকলেও কৃষকদের দিয়ে ব্যাংক ঋণের আওতায় আলু চাষ করাতে পারে না বিএডিসি।
জানা যায়, চলতি বীজ আলু সংরক্ষণ মৌসুমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের উদ্যোগে শ্রীমঙ্গল অঞ্চলে বীজ আলুর চাষ করা হয়েছে। উৎপাদিত এই বীজআলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা হবে। পরে নভেম্বর মাসে রোপন মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের মধ্যে এই বীজআলু বিরতণ করা হবে।
বিএডিসি’র শ্রীমঙ্গল অফিসের বরাতে জানা যায়, মানসন্মত বীজ আলু উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের লক্ষ্যে কৃষকদের দিয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৮ একর, মৌলভীবাজারের গিয়াসনগরে ৪ একর ও হবিগঞ্জের মাধরপুর উপজেলায় পরমানন্দ গ্রামে ৩৮ একর জমিতে বীজআলু চাষ করা হয়। এখান থেকে উৎপাদিত হবে প্রত্যায়িত শ্রেণির বীজআলু। এখানে সানসাইন ( বিএডিসি আল-ু১), এলুয়েট (বারি আলু-৯০) ও ডায়মন্ড জাতের উচ্চ ফলনশীল আলুর বীজ রোপন করা হয়েছিল। এরমধ্য সানসাইন আলুর ফলন খুব ভালো হয়েছে।
বিএডিসি জানায়, এ অঞ্চলের মাটি এসিডিক হওয়ায় সানসাইন বাদে অন্য আলুতে স্ক্যাব বা দাঁদ রোগ হয়ে থাকে। কিন্তু বিএডিসি আলু-১ (সাইনসাইন) স্ক্যাব প্রতিরোধী জাত হওয়ায় সানসাইন জাতের আলুতে স্ক্যাব হয় না। আলুর রং হয় সুন্দর।
আশিদ্রোন ইউনিয়নের পারেরটং গ্রামের চাষি নাজমুল হাসান জানান, তিনি গত বছরের নভেম্বর মাসে জমিতে বীজ আলু রোপন করেছেন। ৭০ শতাংশ সানসাইন আর ৩০ শতাংশ এলুয়েট জাতের বীজ আলু চাষ করেন। আলু তুলতে সময় লেগেছে ৬৫-৭০ দিন। ফলন খুব ভাল হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রতি শতাংশে প্রায় ৪ মণ। খরচ বাদ দিয়ে তার ২ লাখ টাকা লাভ হবে। আগামী মৌসুমের আগে সরকার থেকে পানি সমস্যার সমাধান করে দিলে এলাকার অন্য কৃষকরা আলু চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশেনর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, এ অঞ্চলে অন্য আলুর আবাদ খুব একটা না থাকার কারণে এই অঞ্চলে ভাইরাস ও রোগমুক্ত মানসন্মত আলু উৎপাদিত হবে। তাই আমরা কৃষকদের আলু চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। তবে সেচের ব্যবস্থা এবং জমির মালিকানার নিরসনে এ অঞ্চলে আলু চাষে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।