সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক), দেশজুড়ে, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, রাজনীতি
মুন্সীগঞ্জে যুবদল অনুসারীদের দখলে বালুর ব্যবসা,ভেঙে পরলো সড়ক
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৫:৫৩:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার সড়কের পাশে ড্রেজারের মাধ্যমে বালুর স্তুুপ করার সময় মুন্সীগঞ্জ-সাতানিখিল ব্যস্ত সড়কটির অর্ধেক অংশ খালে ভেঙে পড়েছে।অবশিষ্ট টুকুও রয়েছে ভাঙন ঝুঁকিতে।
গত সোমবার দিবাগত রাতে সড়কটি বিলীন হয়।অভিযোগ উঠেছে,জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মুজিবুর রহমান ও তার লোকজন বালুর ব্যবসা করার জন্য ড্রেজারের মাধ্যমে বালুর স্তুপ তৈরি করছিলেন।এতে ওই সড়ক দিয়ে গত দু-দিন ধরে ভারি যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।ছোট যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে।ভাঙন আতঙ্কে আছেন সড়কের পাশের বাসিন্দারা।বুধবার বিকেলে সাতানিখিল এলাকায় ১২ ফুট চওড়া উত্তর-দক্ষিণ লম্বালম্বি এই ভাঙা সড়কটিতে গিয়ে দেখাযায়, পশ্চিম পাশে সড়ক থেকে অন্তত তিনফুট উঁচু করে বালুর বিশাল স্তুপ করা হয়েছে।সে বালু পিচের সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বালুর সড়কে পরিণত হয়েছে।সড়কের পূর্ব পাশে খাল।খাল লাগোয়া এ সড়কটির পূর্বপাশ দিয়ে ৬ ফুট প্রস্থে এবং অন্তত ৭০-৮০ ফুট দৈর্ঘ্যে সড়কটি খালে ভেঙে পড়ে আছে। ভাঙা অংশে কয়েকটি গাছ ও পল্লীবিদুতের একটি খুঁটিও হেলে পড়েছে।সড়কের নীচ দিয়ে বালুর ত্মূপ থেকে পানি নির্গত হচ্ছে।এতে সড়কটির অবশিষ্ট অংশও নাজুক হয়ে পড়েছে।এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে পথচারী ও যানবাহন চলাচল করছে।এ সময় স্থানীয়দেন সঙ্গে কথা হলে তারা জানান,আ.লীগ সরকারের সময় মহাকালী ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরম্নল ব্যাপারী,আ.লীগ নেতা সালাউদ্দীন সিকদার,ইউনিয়নটির ৫ নম্বর ইউপি সদস্য মাসুদ মালরা ড্রেজার ও বালু বাণিজ্য করত। ৫ আগস্টের পর সেই বালু বাণিজ্য দখলে নেন উজ্জ্বল হালদার,জুয়েল দেওয়ান,কবির হালদার, মিরাজ হালদাররা।আর তাদের অšত্মরালে থেকে দখলের নেতৃত্ব দেন যুবদল নেতা মুজিবুর রহমান। প্রায় দেড় মাস ধরে মুজিবুরের নেতৃত্বেই বিভিন্ন জমি,জলাশয় দেদারসে ভরাট বাণিজ্য করে চলেছে চক্রটি।গত ১৫-২০ দিন আগে বালু ব্যবসার জন্য সাতানিখিল সড়কের পাশের বিশাল পুকুরটি ড্রেজার দিয়ে ভরাট শুরম্ন হয়।এতে তখনই বালুর চাপে সড়কের মধ্যখানে ফাটল দেখা দেয়।এর পরেও মুজিবুর বাহিনী কোনোভাবেই ভরাট বন্ধ করেনি।তাদের বালুর ত্মূপরাত্মা থেকে কয়েকফুট উঁচু করতে থাকেন তারা।গত সোমবার রাতে ভরাট কাজ চলা অবস্থায় তাদের বালু পানিসহ সড়কে ছড়িয়ে পড়ে।একদিকে সড়কের নীচ দিয়ে বালু ও পানির চাপ,অন্য দিকে উপর দিয়ে বালু ছুটে যায়। দুই দিকে পানির চাপে মাঝ রাতে সড়কটি গাছপালাসহ খালের পানিতে ভেঙে পড়েছে। সড়কের যে অবস্থা যেকোনো সময় সম্পূর্ণ অংশই ভেঙে পড়তে পারে।এতে যে কোন সময় সড়কের দড়্গণিপাশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বিএনপি নেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান,সড়কটির পাশের ৫-৬ টি পরিবারের বসত ঘরও ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে।একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়েছে।সড়ক সংকীর্ণ হওয়ায় যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। মুজিবুর ও তাঁর লোকজন স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ পর্যšত্ম করতে পারছেনাকয়েকজন ভাঙা সড়কটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছিল,এ কারণে তাদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়েছে।আমরা চাই দলীয় ভাবমূর্তি নষ্টকারী যেই হোক তার বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।তবে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো:মজিবুর রহমান দেওয়ান তার বিরম্নদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।তিনি বলেন,বালুর ব্যবসা সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন।রাজনৈতিকভাবে ড়্গতি করতে তার প্রতিপড়্গরে লোকজন তাঁর নাম ব্যবহার করছেন।যারা এ ব্যবসাটি করছেন তারা আপনার লোক,এলাকার মানুষও বলেছেন,এ ব্যবসার সঙ্গে আপনি জড়িত,এমনটা জানালে মুজিবুর রহমান বলেন,আমরার বাড়ি ওই ইউনিয়নে অনেকে নাম ভাঙিয়ে ফায়দা নিতে পারেন।বুধবার বিকেলে ভাঙন আতঙ্কে থাকা পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলতে গেলে কয়েকজন নারী-পুরম্নষ এগিয়ে আসেন।কথা শুরম্ন করার সময় সেখানে বালু ব্যবসার অন্যতম হোতা উজ্জ্বল হালদার উপস্থিত হন।সে সময় এ বিষয় নিয়ে কেউ কোন কথা বলতে চাননি।এ বালুর ব্যবসা সঙ্গে উজ্জ্বল হালদার নিজেসহ বেশ কয়েকজন জড়িত রয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন উজ্জ্বল।তবে কারা জড়িত রয়েছেন এ ব্যাপারটি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতে চাননি।রাস্তা ভেঙে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন,শুধু আমাদের বালুর জন্য রাস্তা ভেঙে পড়েনি। রাস্তা খালের পাশে,তাই আগে থেকেই ফাটল ধরা ছিল।আমরা খালের বিপরীত পাশে বালু ফেলেছিলাম।খালের পানি কিছুটা কমে গেছে। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে।এ জন্য খালের পাশে চাপ পড়ে রাস্তা ভেঙে পড়েছে।এ পথে নিয়মিত ব্যাটারি চালিত অটো চালান মো:সোলায়মান। সোলায়মান বলেন,প্রতিদিন হাজার হাজার ছোট বড় যানবাহন এ সড়ক দিয়ে সদরের মোলস্নাকান্দি, শিলই,চরকেওয়ার ইউনিয়ন এবং টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড়সহ দুই উপজেলার অšত্মত ১০টি ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াত।কৃষি উৎপাদিত পণ্য,আলুর হিমাগারসহ নদী কেন্দ্রিক গুরম্নত্বপূর্ণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকায় ট্রাক,পিক-আপ চলাচল করে।সোমবার সড়কটি ভেঙে পড়ায় যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে।যেকজন জরম্নরি প্রয়োজনে যাচ্ছেন তারাও খুব ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হচ্ছেন।তাই দ্রম্নত সড়ক সংস্কার, সড়কের পাশ থেকে বালুর ব্যবসা অপসারণ এবং দোষীদের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এ পথের যাত্রী ও যানবাহন চালকরা।মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)আফিফা খান বলেন,মঙ্গলবার রাতেই আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি।বুধবার সেখানে আমাদের লোকজন পাঠিয়েছি।ভেঙে যাওয়া অংশটুকু সংস্কার করতে দ্রম্নত পদড়্গপে নেওয়া হবে। জড়িতদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন,কারা জড়িত সেটি খতিয়ে দেখা হবে। তবে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব
কামরম্নজ্জামান রতন বলেন,আমাদের সহযোগী সংগঠন।বিষয়টি আমরা যুবদলকে এবং আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের অবহিত করবো।তদন্ত করা হবে।মজিবুর জড়িত থাকলে তার বিরম্নদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।