সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আন্তর্জাতিক, আবহাওয়া ও জলবায়ু, উপজেলা প্রশাসন, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, পূর্বাভাস, ফিচার, বাংলাদেশ, স্বাস্থ্য কথা
‘আমরা আদিবাসী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নই’ গাইবান্ধায় সাঁওতাল যুবাদের জোরালো দাবি

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৫:৪৩:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ ১০৩ বার পড়া হয়েছে

ফেরদৌস আলম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি।।
রঙিন পোশাকে সজ্জিত শতাধিক সাঁওতাল যুবক-যুবতীর কণ্ঠে একই স্লোগান: “আমাদের ভাষা, আমাদের সংস্কৃতি, আদিবাসী পরিচয় চাই!” গাইবান্ধা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শনিবার (২৪ মে) অনুষ্ঠিত আদিবাসী-বাঙালি যুব মিলনমেলায় সাঁওতালসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর তরুণরা তাদের অধিকার ও স্বকীয়তা রক্ষায় এই দাবি জানান।
“অধিকার, জীবিকা ও সংস্কৃতি রক্ষায় আদিবাসী-বাঙালি যুব মিলি একতায়” – এই স্লোগানকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড ও আর্টিকেল নাইনটিনের সহযোগিতায় বেসরকারি সংস্থা “অবলম্বন”এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, “সমাজে ‘আদিবাসী’ ও ‘দলিত’ শব্দ নিয়ে ব্যাপক বিভ্রান্তি রয়েছে। আমরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নই, আমরা আদিবাসী। আমাদের নিজস্ব ভাষা, বিবাহরীতি, চিকিৎসাপদ্ধতি, উৎসব ও লোকসংস্কৃতি রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় অবহেলা ও মূলধারার সমাজের অসচেতনতায় তা আজ বিলুপ্তির পথে।”
সাঁওতাল যুবনেত্রী ‘ললিতা কিস্কু’ বলেন, “আমাদের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে বাঙালি ভাই-বোনদের আরও সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি, সরকারকে আমাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।”
আলোচনায় উঠে আসে, বাংলাদেশে প্রায় ৫০টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে, যাদের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। অথচ দেশের মূলধারার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও প্রশাসনে তাদের উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “বৈচিত্র্যই বাংলাদেশের শক্তি। আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন সবসময় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।”
সকাল সাড়ে ৯টায় ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে সাঁওতাল, ওরাওঁ ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ৩০০ জনের বেশি তরুণ-তরুণী একটি শোভাযাত্রায় অংশ নেন। তারা হাতে বহন করেন রঙিন প্ল্যাকার্ড, যেখানে লেখা—”আদিবাসী পরিচয় চাই”, “সংস্কৃতি রক্ষায় আইন চাই।”
শোভাযাত্রা শেষে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। আদিবাসী শিল্পীরা তাদের লোকনৃত্য, গীতিকা ও নাট্যাভিনয় পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। বিশেষ করে সাঁওতালদের “ডাং ডাং” নাচ ও “বাহা উৎসব”-এর গান দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থা “অবলম্বন”- এর নির্বাহী পরিচালক ‘প্রবীর চক্রবর্তী’ বলেন, “আমরা দেড় দশক ধরে গাইবান্ধার আদিবাসী তরুণদের সঙ্গে কাজ করছি। তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সাংস্কৃতিক অধিকার রক্ষায় এই আয়োজন একটি মাইলফলক।”
নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগস:-

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ