ঢাকা ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
কুলাউড়ায় স্কুল পড়ুয়া তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু নির্দেশনা পেলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত: কর্নেল শফিকুল দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত মৌলভীবাজার সীমান্তে শিশুসহ ৭১ বাংলাদেশীকে ফেরত দিলো বিএসএফ শ্রীমঙ্গলে অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতে নতুন কারসাজিতে ও ঠিকাদার ব্যর্থ মৌলভীবাজারে জামিনের প্রলোভনে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক গ্রেপ্তার জুড়ীর কৃতি সন্তান শরীফ বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে প্রথম আ’লীগের সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার ৩৩ ডেপুটি জেলারকে একযোগে বদলি আমি জনগণের সেবক হতে চাই, কারো প্রতিযোগী না: মাসুদুজ্জামান জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে মর্গ্যান স্কুলের সংকট নিরসন মাদরাসার দুই শিক্ষার্থীর একই সাথে মৃত্যু;  শিক্ষক সমিতির শোক দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রথমবার কৃত্রিম বৃষ্টি এক নতুন দিগন্ত ভেড়ামারায় পদ্মায় তীব্র ভাঙন, আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা ভৈরবের পূর্বকান্দা সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক’কে অফিসে ডুকে মারধরের অভিযোগ সুন্দরবনে বিপুল পরিমাণ হরিণ শিকারের ফাঁদ জব্দ কুমিল্লায় ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত বিচারের দাবিতে মহিলা পরিষদের মানববন্ধন আজ ব্যাংক হলিডে, ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে সব লেনদেন বন্ধ জুলাই অভ্যুত্থানে বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের শহীদ হয়েছে ৭৩৪ নওগাঁয় অতিরিক্ত ধান-চাল মজুদ: দুই মিল ম্যানেজারের অর্থদন্ডসহ জেল নারায়ণগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে অস্ত্র-মাদক ও বিদেশি মুদ্রাসহ আটক-২ ফতুল্লায় আবির ফ্যাশনে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনায় বিক্ষোভে ৮ কারখানা বন্ধ সুন্দরবনে হরিণের ফাঁদসহ আটক-১ শিকারী  খোলপেটুয়া নদীরচর থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার শরণখোলায় ৪নং সাউথখালী ইউপি’র উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা বিমানবন্দরে চেকিংয়ে ম্যাগজিন পাওয়ার বিষয়ে যা বললেন উপদেষ্টা আসিফ না’ঞ্জকে সবুজে ঘেরা পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা।”-জেলা প্রশাসক ৫ আগস্টের পর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ১৩ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত না’গঞ্জে ‘আ’লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে সাবেক বিএনপি নেতাকে ‘মারধর’সহ হেনস্তা না’গঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে মাদক-অস্ত্রসহ আটক-২ নারী কারবারি কুষ্টিয়ায় মাদক কারবার নিয়ে বিরোধে যুবককে কুপিয়ে হত্যা কুষ্টিয়ায় বাসচাপায় পুলিশ সদস্য নিহত শরণখোলায় লাগসই প্রযুক্তি বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত আমার শিকড় এই মাটির অনেক গভীরে: মাসুদুজ্জামান মাসুদ ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ আজ না ফেরার দেশে ‘কাঁটা লাগা’ গার্লখ্যাত শেফালি জারিওয়ালা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে মাসুদ-পন্টি পরিষদ বিজয়ী ধর্ষণচেষ্টা মামলায় শিক্ষক আটক, পাঠানো হলো কারাগারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চালকদের ডাটাবেজ করছে না’গঞ্জ জেলা প্রশাসন ডিএমপির ৬ ডিসির দায়িত্বে রদবদল কুষ্টিয়ায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতের হানা, লাশের শরীর তল্লাশি গাইবান্ধায় এইচএসসি পরীক্ষার ১ম দিনে ১২ জন বহিষ্কার, ৪২৯ অনুপস্থিত কুষ্টিয়ায় মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী দিবস পালিত রায়পুরায় ছয় দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি শরণখোলায় পার্টনার স্কুল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম সবুজের মায়ের ১ম  মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া অনুষ্ঠিত আজ থেকে শুরু এইচএসসি পরীক্ষা,পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে বিশেষ গাইডলাইন নারায়ণগঞ্জে জোড়া খুন; সাবেক কাউন্সিলর হান্নান ও দুই পুত্রসহ আটক-৪ ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় খালাস পেলেন কুষ্টিয়ার দুই সাংবাদিক গ্লোবাল টিভির সাংবাদিক মনিরুল আলমকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি ‘মব জাস্টিস’ এক হিংস্র উন্মাদনা: তারেক রহমান দেশের সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা ফতুল্লায় তিতাসের অভিযান: অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ অর্থদন্ড রোটারি ক্লাব অব নারায়ণগঞ্জ মিডটাউনের বর্ষ সমাপ্তি সভা অনুষ্ঠিত ‘মব’ ঠেকাতে কঠোর বার্তা, ব্যর্থ হলেই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার সাবেক সিইসিকে ‘মব’ সৃষ্টি করে হেনস্থাকারী স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মুজাম্মেল আটক স্রোতের তোড়ে ২৮ যাত্রী নিয়ে মেঘনায় ডুবলো স্পিডবোট কর,কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ‘ কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আহত-৪ প্রধান উপদেষ্টাসহ দুদককে উকিল নোটিশ পাঠালেন টিউলিপ সিদ্দিক বিশ্ব পরিবেশ দিবসে মহিলা পরিষদের বৃক্ষরোপণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে ছদ্মবেশে গ্রেপ্তার করল পুলিশ সোনারগাঁয়ে প্রবাসীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার হুমকিদাতা বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার ‘মব’ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কড়া হুশিয়ারী দিলো সরকার সাবেক এমপি সাবিনা আক্তার তুহিন গ্রেপ্তার সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে ঘিরে ‘মব’ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার সাবেক আরেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার না’গঞ্জের প্রবেশমুখে স্থাপত্যশৈলীর ছোয়ায় নির্মিত হবে ‘গেট অব ড্যান্ডি’ শামীম ওসমানের ২টি প্লট ক্রোকসহ ২৯ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ সাবেক সিইসি কেএম নুরুল হুদা ডিবি হেফাজতে মুন্সিগঞ্জের সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লব গ্রেপ্তার বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করবে: মোস্তফা জামান কুষ্টিয়ায় পাউবোর জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না’গঞ্জে অটোরিকশার স্ট্যান্ড দখল নিতেই বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, নিহত-২ আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল, গ্রেপ্তার নয়: মেঘনা আলম  এডিসির সঙ্গেও অনৈতিক সম্পর্ক ছিল বিশ্বপ্রেমিক ডিসি আশরাফের নারায়ণগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জোড়া খুন দুই মাসেও ডিবি প্রধানের শূন্য পদ পূর্ণ হয়নি কর্মস্থলে অনুপস্থিত শরীয়তপুরের বিতর্কিত ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভিডিও বার্তায় প্রেমিকাকে যা বললেন শরীয়তপুরের সমালোচিত ডিসি আইআরজিসির কাছে যুদ্ধকালীন ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন খামেনি পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার ডিবি হেফাজতে পরিবেশ সংরক্ষণে জেলা প্রশাসনের গৃহীত পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন: জনপ্রশাসন সচিব বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ায় মাছ ধরতে পারছে না জেলেরা: নিরাপদ আশ্রয় ফিশিং ট্রলার শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল না’গঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় মাদক-ছিনতাই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ নারায়ণগঞ্জে মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনের শিকার বাবা-মার হাতেই পুত্র খুন সেনা অভিযানে তিন সপ্তাহে ৫৬ অবৈধ অস্ত্রসহ ৯৯৬ অপরাধী গ্রেপ্তার কমলগঞ্জে ৩ কেজি গাঁজাসহ দুই কারবারি পুলিশের জালে আদমজী বিহারি ক্যাম্পে সেনা অভিযান, অস্ত্রসহ ২ নারী আটক কুষ্টিয়ায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু কুষ্টিয়ায় ছাত্রাবাসে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে রহস্যের ধূম্রজাল শরণখোলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ায় পিতার সংবাদ সম্মেলন কমলগঞ্জে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা কুলাউড়ায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার দেশজুড়ে থেমে থেমে বজ্রসহ বৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস ট্রাম্পের হুমকির পর আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ির পাল্টা জবাব ‘যুদ্ধ শুরু হলো’ নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজে দুর্ধর্ষ চুরি সোনারগাঁয়ে খালপাড় বেড়িবাঁধ থেকে যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার নারায়ণগঞ্জে মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

কুষ্টিয়া বৃদ্ধাশ্রমের বদ্ধ ঘরে আধপেট খেয়ে রোজা রাখছেন ৩০ অসহায় মা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৫:০৮:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫ ১২৭ বার পড়া হয়েছে
হৃদয় রায়হান,কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
‘গরিব মানুষ, ট্যাকা পয়সা না থাকলেও খুব আদর করেই ছেলে মানুষ করছিলাম। বড় হওয়ার পর সেই ছাওয়ালের কাছেই এখন বোঝা হয়ে গেছি।’
এভাবেই নিজের কষ্টের কথা বলছিলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ক্যানাল পাড়া এলাকার ৭৫ বছর বয়সী আমেনা খাতুন। স্বামীর মৃত্যুর পর আমেনা খাতুনের ঠাঁই হয়েছে কুষ্টিয়া শহরের উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র নামে একটি বৃদ্ধাশ্রমে। সেখানে বসেই মা একমাত্র সন্তানের জন্য চোখের পানি ফেলেন এবং তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন। ৯ মাস গর্ভে ধারণ করে যে সন্তানকে পরম মমতায় লালন করে কর্মক্ষম করে তুলেছেন, স্বামীর মৃত্যুর পর সেই ছেলে আর পুত্রবধূর কাছেই বোঝা হয়ে যান আমেনা। ভ্যানচালক ছেলে আয় করে পরিবারের সবার খরচ চালাতে পারলেও হাঁপিয়ে ওঠেন মায়ের সামান্য কিছু ওষুধ কেনার টাকা দিতে। বৃদ্ধা শাশুড়ির সামনে ভাত বেড়ে দিতে কষ্ট হয় একমাত্র পুত্রবধূর। আমেনা বলেন, এখানে আসার আগে অনেক দিনই না খেয়ে দিন পার করতে হয়েছে। তাই না খেয়ে থাকলে বা আধা পেট খেয়ে রোজা থাকলে বেশি কষ্ট লাগে না, কষ্ট লাগে সন্তান এবং পরিবারের কথা মনে পড়লে। তিনি বলেন, যখন স্বামী বেঁচে ছিল, রোজায় সবাই একসঙ্গে ইফতার করতে বসতাম। যাই থাকতো স্বামী-সন্তান নিয়ে ভাগ করে খেতাম। কিন্তু এখন সেসব কেবলই স্মৃতি।
আমেনা খাতুন বলেন, শেষ বয়সে চাওয়া পাওয়ারতো কিছুই নেই। তবে সন্তানের কাছে থাকতে পারলে ভালো লাগতো, বেশি খারাপ লাগে ঈদের দিন। কিন্তু আমি থাকলে তাদের কষ্ট হয়, তাই এখানেই পড়ে থাকি। ওরাতো ভালো থাকুক।
কুষ্টিয়ার এই বৃদ্ধাশ্রমে থাকা ৩০ জন মায়ের প্রতিটি মুহূর্ত কাটে নিজের সংসারে কাটানো সোনালি দিনের কথা মনে করে। বৃদ্ধাশ্রমের জরাজীর্ণ বদ্ধ ঘরেই কোনো রকম মাথা গুঁজে কাটছে তাদের জীবন। কথা হয় গত দশ বছর ধরে এই বৃদ্ধাশ্রমে থাকা ৭৭ বছর বয়সী আয়েশা খাতুনের সঙ্গে। আয়েশা খাতুনের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উদিবাড়ী এলাকায়। এক সময় তার স্বামী সংসার সবই ছিল। ছিল না শুধু সন্তান। এরমধ্যেই বিধাতার ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে চলে যান আয়েশা খাতুনের স্বামী ইমতিয়াজ আলী। এর কিছুদিন পরই নিজের দুই ভাই প্রতারণার মাধ্যমে তার নামে থাকা অল্প কিছু জমি লিখে নেন। স্বামীর বাড়ির কোনো সম্পত্তির ভাগও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি তাকে। তাই আয়েশার শেষ আশ্রয়স্থল হয়েছে এই বৃদ্ধাশ্রম। চোখের জলে এখানে বসেই দিন পার করছেন আয়েশা। বৃদ্ধাশ্রমে থাকলেও অনেকের আত্মীয় স্বজন দেখতে আসেন। কিন্তু আয়েশাকে দেখতে কেউ আসে না। আয়েশার খবর নিতে আসে না কেউ। এখন আর কষ্ট হয় না আয়েশার। আপন করে নিয়েছেন বৃদ্ধাশ্রমের সবাইকে। তারাই এখন আয়েশার আপনজন।
আয়েশা বলেন, রোজা হোক বা ঈদ, একসময় খুব আনন্দে কাটিয়েছি। কিন্তু এখন আমার কেউ নেই। যখন সেহরি খাওয়ার জন্য মসজিদের মাইকে সবাইকে ডাকাডাকি করে, তখন বুকের ভেতরটা কেঁপে ওঠে। পরিবার পরিজনের কথা তখন খুব মনে পড়ে।
৩০ জন মায়ের থাকার জন্য বৃদ্ধাশ্রমটিতে রয়েছে মাত্র ৪টি রুম। যেগুলো ভাড়া নেওয়া। পুরোনো জরাজীর্ণ ঘরে কোনো রকম ঠাসাঠাসি করে থাকতে হয় তাদের। বাড়ির সামনে নেই কোনো হাঁটা-চলার জায়গা। নেই কোনো আধুনিক সুযোগ সুবিধা, পর্যাপ্ত শীত বস্ত্র বা পরিধানের কাপড়। খাদ্য, চিকিৎসাসহ নানা সংকটের মধ্য দিয়েই কোনোরকম কাটছে এসব মায়েদের সময়।
ব্যক্তি মালিকানার একটি জমিতে তাদের একুট হাঁটা-চলার ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে সেই জমিটি ঘিরে সেখানে বহুতল ভবনের কাজ শুরু করেছেন জমির মালিক।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কেউ বসে আছেন, কেউ রান্নার জন্য লাকড়ি কেটে প্রস্তুত করছেন। কেউ আবার বসে হাদিসের বই পড়ছেন। কয়েকজন রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্যাঁৎস্যাঁতে পুরোনো একটি বাড়ির দরজা জানালার ঠিক নেই। খসে পড়েছে দেওয়ালের পলেস্তারা। শুকনো মৌসুমেও সেখানে ঢোকার পথ ভিজে কাদা হয়ে আছে পাশের বাড়ি থেকে আসা মোটরের পানিতে। এর মধ্যেই চলাফেরা করতে হয় বৃদ্ধ মায়েদের। সেখানেই কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে।
তারা বলেন, এখানে আমরা নিজেদের সংসার গড়ে নিয়েছি। কিন্তু আমাদের মাথা গোঁজার কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই। বাড়িওয়ালা মাঝে মধ্যেই বাড়ি ছেড়ে দিতে বলে। তারপরও এখানকার দায়িত্বে যারা আছে তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করে আমাদের জন্য। পারুলা বেগম বলেন, এখানে আমরা ৩০ জন অসহায় নারী থাকি। সঙ্গে এই জায়গার (প্রতিষ্ঠানের) আরও দুইজনসহ মোট ৩২ জন। এই ৩২ জনের তিন বেলার খাবার দেওয়া হয়। খুব ভালো খাবার না পেলেও, যা পাই তা খেয়ে কোনো রকম বেঁচে থাকা যায়। বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে নানাবিধ সংকটে পড়েছেন বলে জানায় বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষ। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কমে গেছে সাহায্য সহযোগিতার পরিমাণও। তাই বৃদ্ধাশ্রমে থাকা মায়েদের তিন বেলার খাবার যোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। এসব অসহায় মায়েদের ভালোভাবে রাখতে সরকার ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আফরোজা ইসলাম। এতগুলো মানুষের থাকাসহ প্রতিদিনের ব্যয় কীভাবে নির্বাহ হয় এমন প্রশ্নের জবাবে উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন মিঠু বলেন, সবকিছুই আল্লাহ চালিয়ে নিচ্ছেন। কারণ বর্তমান সময়ে বাজারের যে ঊর্ধ্বগতি, সেইসঙ্গে কমেছে সাহায্য সহযোগিতার পরিমাণও। তারপরও অতিকষ্টে এখানকার মায়েদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছি। তিনি এক টুকরো সরকারি জায়গা এই প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

কুষ্টিয়া বৃদ্ধাশ্রমের বদ্ধ ঘরে আধপেট খেয়ে রোজা রাখছেন ৩০ অসহায় মা

আপডেট সময়- ০৫:০৮:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
হৃদয় রায়হান,কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।।
‘গরিব মানুষ, ট্যাকা পয়সা না থাকলেও খুব আদর করেই ছেলে মানুষ করছিলাম। বড় হওয়ার পর সেই ছাওয়ালের কাছেই এখন বোঝা হয়ে গেছি।’
এভাবেই নিজের কষ্টের কথা বলছিলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ক্যানাল পাড়া এলাকার ৭৫ বছর বয়সী আমেনা খাতুন। স্বামীর মৃত্যুর পর আমেনা খাতুনের ঠাঁই হয়েছে কুষ্টিয়া শহরের উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র নামে একটি বৃদ্ধাশ্রমে। সেখানে বসেই মা একমাত্র সন্তানের জন্য চোখের পানি ফেলেন এবং তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন। ৯ মাস গর্ভে ধারণ করে যে সন্তানকে পরম মমতায় লালন করে কর্মক্ষম করে তুলেছেন, স্বামীর মৃত্যুর পর সেই ছেলে আর পুত্রবধূর কাছেই বোঝা হয়ে যান আমেনা। ভ্যানচালক ছেলে আয় করে পরিবারের সবার খরচ চালাতে পারলেও হাঁপিয়ে ওঠেন মায়ের সামান্য কিছু ওষুধ কেনার টাকা দিতে। বৃদ্ধা শাশুড়ির সামনে ভাত বেড়ে দিতে কষ্ট হয় একমাত্র পুত্রবধূর। আমেনা বলেন, এখানে আসার আগে অনেক দিনই না খেয়ে দিন পার করতে হয়েছে। তাই না খেয়ে থাকলে বা আধা পেট খেয়ে রোজা থাকলে বেশি কষ্ট লাগে না, কষ্ট লাগে সন্তান এবং পরিবারের কথা মনে পড়লে। তিনি বলেন, যখন স্বামী বেঁচে ছিল, রোজায় সবাই একসঙ্গে ইফতার করতে বসতাম। যাই থাকতো স্বামী-সন্তান নিয়ে ভাগ করে খেতাম। কিন্তু এখন সেসব কেবলই স্মৃতি।
আমেনা খাতুন বলেন, শেষ বয়সে চাওয়া পাওয়ারতো কিছুই নেই। তবে সন্তানের কাছে থাকতে পারলে ভালো লাগতো, বেশি খারাপ লাগে ঈদের দিন। কিন্তু আমি থাকলে তাদের কষ্ট হয়, তাই এখানেই পড়ে থাকি। ওরাতো ভালো থাকুক।
কুষ্টিয়ার এই বৃদ্ধাশ্রমে থাকা ৩০ জন মায়ের প্রতিটি মুহূর্ত কাটে নিজের সংসারে কাটানো সোনালি দিনের কথা মনে করে। বৃদ্ধাশ্রমের জরাজীর্ণ বদ্ধ ঘরেই কোনো রকম মাথা গুঁজে কাটছে তাদের জীবন। কথা হয় গত দশ বছর ধরে এই বৃদ্ধাশ্রমে থাকা ৭৭ বছর বয়সী আয়েশা খাতুনের সঙ্গে। আয়েশা খাতুনের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উদিবাড়ী এলাকায়। এক সময় তার স্বামী সংসার সবই ছিল। ছিল না শুধু সন্তান। এরমধ্যেই বিধাতার ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে চলে যান আয়েশা খাতুনের স্বামী ইমতিয়াজ আলী। এর কিছুদিন পরই নিজের দুই ভাই প্রতারণার মাধ্যমে তার নামে থাকা অল্প কিছু জমি লিখে নেন। স্বামীর বাড়ির কোনো সম্পত্তির ভাগও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি তাকে। তাই আয়েশার শেষ আশ্রয়স্থল হয়েছে এই বৃদ্ধাশ্রম। চোখের জলে এখানে বসেই দিন পার করছেন আয়েশা। বৃদ্ধাশ্রমে থাকলেও অনেকের আত্মীয় স্বজন দেখতে আসেন। কিন্তু আয়েশাকে দেখতে কেউ আসে না। আয়েশার খবর নিতে আসে না কেউ। এখন আর কষ্ট হয় না আয়েশার। আপন করে নিয়েছেন বৃদ্ধাশ্রমের সবাইকে। তারাই এখন আয়েশার আপনজন।
আয়েশা বলেন, রোজা হোক বা ঈদ, একসময় খুব আনন্দে কাটিয়েছি। কিন্তু এখন আমার কেউ নেই। যখন সেহরি খাওয়ার জন্য মসজিদের মাইকে সবাইকে ডাকাডাকি করে, তখন বুকের ভেতরটা কেঁপে ওঠে। পরিবার পরিজনের কথা তখন খুব মনে পড়ে।
৩০ জন মায়ের থাকার জন্য বৃদ্ধাশ্রমটিতে রয়েছে মাত্র ৪টি রুম। যেগুলো ভাড়া নেওয়া। পুরোনো জরাজীর্ণ ঘরে কোনো রকম ঠাসাঠাসি করে থাকতে হয় তাদের। বাড়ির সামনে নেই কোনো হাঁটা-চলার জায়গা। নেই কোনো আধুনিক সুযোগ সুবিধা, পর্যাপ্ত শীত বস্ত্র বা পরিধানের কাপড়। খাদ্য, চিকিৎসাসহ নানা সংকটের মধ্য দিয়েই কোনোরকম কাটছে এসব মায়েদের সময়।
ব্যক্তি মালিকানার একটি জমিতে তাদের একুট হাঁটা-চলার ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে সেই জমিটি ঘিরে সেখানে বহুতল ভবনের কাজ শুরু করেছেন জমির মালিক।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কেউ বসে আছেন, কেউ রান্নার জন্য লাকড়ি কেটে প্রস্তুত করছেন। কেউ আবার বসে হাদিসের বই পড়ছেন। কয়েকজন রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্যাঁৎস্যাঁতে পুরোনো একটি বাড়ির দরজা জানালার ঠিক নেই। খসে পড়েছে দেওয়ালের পলেস্তারা। শুকনো মৌসুমেও সেখানে ঢোকার পথ ভিজে কাদা হয়ে আছে পাশের বাড়ি থেকে আসা মোটরের পানিতে। এর মধ্যেই চলাফেরা করতে হয় বৃদ্ধ মায়েদের। সেখানেই কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে।
তারা বলেন, এখানে আমরা নিজেদের সংসার গড়ে নিয়েছি। কিন্তু আমাদের মাথা গোঁজার কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই। বাড়িওয়ালা মাঝে মধ্যেই বাড়ি ছেড়ে দিতে বলে। তারপরও এখানকার দায়িত্বে যারা আছে তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করে আমাদের জন্য। পারুলা বেগম বলেন, এখানে আমরা ৩০ জন অসহায় নারী থাকি। সঙ্গে এই জায়গার (প্রতিষ্ঠানের) আরও দুইজনসহ মোট ৩২ জন। এই ৩২ জনের তিন বেলার খাবার দেওয়া হয়। খুব ভালো খাবার না পেলেও, যা পাই তা খেয়ে কোনো রকম বেঁচে থাকা যায়। বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে নানাবিধ সংকটে পড়েছেন বলে জানায় বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষ। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কমে গেছে সাহায্য সহযোগিতার পরিমাণও। তাই বৃদ্ধাশ্রমে থাকা মায়েদের তিন বেলার খাবার যোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। এসব অসহায় মায়েদের ভালোভাবে রাখতে সরকার ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আফরোজা ইসলাম। এতগুলো মানুষের থাকাসহ প্রতিদিনের ব্যয় কীভাবে নির্বাহ হয় এমন প্রশ্নের জবাবে উদয় মা ও শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ইফতেখার হোসেন মিঠু বলেন, সবকিছুই আল্লাহ চালিয়ে নিচ্ছেন। কারণ বর্তমান সময়ে বাজারের যে ঊর্ধ্বগতি, সেইসঙ্গে কমেছে সাহায্য সহযোগিতার পরিমাণও। তারপরও অতিকষ্টে এখানকার মায়েদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছি। তিনি এক টুকরো সরকারি জায়গা এই প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।