সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আবহাওয়া ও জলবায়ু, উপজেলা প্রশাসন, কুড়িগ্রাম, গণমাধ্যম, গাইবান্ধা, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, পূর্বাভাস, ফিচার, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ, রংপুর
তিস্তা সেতু উদ্বোধনে চতুর্থ বিলম্ব: স্থানীয়দের ক্ষোভ

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৪:৫৩:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে

ফেরদৌস আলম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি।।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতুর উদ্বোধন তারিখ আবারও পিছিয়ে ২৫ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। এটিই ১১ বছরের নির্মাণকালে চতুর্থবারের মতো উদ্বোধন বিলম্ব। গত ১৩ জুলাই মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ শামীম বেপারীর স্বাক্ষরিত চিঠিতে ২ আগস্ট উদ্বোধন নিশ্চিত করা হয়েছিল। কিন্তু মাত্র দুই সপ্তাহের মাথায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তী নতুন তারিখ ঘোষণা করেন।
বিলম্বের কারণ অস্পষ্ট থেকে গেছে। মন্ত্রণালয় এখনও কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি, যদিও গত ৪ জুলাই স্থানীয় সরকার সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী সরেজমিন পরিদর্শন শেষে জুলাই মাসেই উদ্বোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই অসঙ্গতি নিয়ে গাইবান্ধা-কুড়িগ্রামের স্থানীয় নেতা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলাম প্রশ্ন তোলেন, “এভাবে বারবার তারিখ পেছানোর অর্থ কী? সচিব থেকে উপসচিব কেউ নিজেদের কথার মর্যাদা রাখলেন না। ২৫ আগস্টও যে উদ্বোধন হবে, তার নিশ্চয়তা কী?”
এসএএস-এর নির্বাহী পরিচালক এ বি এম নূরুল আকতার মঞ্জুর মতে, ১১ বছরে চতুর্থবার উদ্বোধন পেছালো হলো। ২০১৪ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর থেকে চার বার উদ্বোধন তারিখ পিছিয়েছে কতৃপক্ষ। প্রথমে ২০১৮, পরে ২০২১, এরপর ২০২৪ এবং সর্বশেষ ২০২৫ সালের জুলাই-আগস্টে উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল।
তিস্তা নদীর উপরে ১,৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, যার অর্থায়ন করছে সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে চলা প্রকল্পটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারীকে সংযুক্ত করবে, যা কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার দূরত্ব ১৩৫ কিলোমিটার কমিয়ে আনবে।
তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন আন্দোলনের নেতা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আ.ব.ম শরীয়তুল্লাহ মাস্টার স্মরণ করিয়ে দেন, ২০০০ সাল থেকে এই সেতুর দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০২০ সালের ৬ জুলাই একনেক প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধিত অনুমোদন দেয়।
সেতুটি চালু হলে তিস্তার চরাঞ্চলের ৫০টিরও বেশি গ্রামের মানুষ সরাসরি সড়কপথে যাতায়াত করতে পারবেন, কৃষিপণ্য বিপণন সহজ হবে, এবং নদীভাঙনের সময় জরুরি সেবা নিশ্চিত হবে। কিন্তু ক্রমাগত বিলম্বে দুই জেলার ২০ লাখ মানুষ হতাশা প্রকাশ করছেন। স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, অনির্দিষ্টকালীন এই দেরি উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সংযোগ সড়ক ও বিদ্যুতায়নের কাজ শেষ না হওয়ায় উদ্বোধন পিছিয়েছে। তবে স্থানীয়রা দাবি করছেন, দীর্ঘ ১১ বছর পরও কাজ শেষ না হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের ব্যর্থতা স্পষ্ট। সকল প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও এখনো তিস্তা সেতুর উদ্বোধন নিশ্চিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন গাইবান্ধা-কুড়িগ্রামের সাধারণ মানুষ।
নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগস:-

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ