তদন্তে কোনো নিরপরাধ যেনো শাস্তির আওতায় না আসে : না’গঞ্জে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

- আপডেট সময়- ০৪:১৩:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫ ৩৯ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করলে ‘কোনো সমস্যা ছাড়াই’ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
উপদেষ্টা বলেন, “যারা ইলেকশন করবেন, অর্থ্যাৎ রাজনৈতিক দল বা স্বতন্ত্র হিসেবে যারা করতে চান, তারা কিন্তু মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। তারা যদি সবাই সহযোগিতা করে তাহলে আমাদের পক্ষে ইলেকশন করা সম্ভব, কোনো ধরনের সমস্যাই হবে না।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনস পরিদর্শনের শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
গত ৫ আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানের পর নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে লুট হওয়া সরকারি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সব অস্ত্র এখনও আমরা উদ্ধার করতে পারি নাই। অস্ত্রগুলো উদ্ধারের চেষ্টা আমরা করছি। এবং আল্লায় দিলে হয়তো নির্বাচনের আগে আরও অনেক অস্ত্র উদ্ধার হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনটা যেন আপনাদের সহযোগিতায়, জনগণের সহযোগিতায় ভালোভাবে সম্পন্ন হতে পারে সেই চেষ্টা অবশ্যই আমরা করবো। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটা অংশ, কিন্তু সবচেয়ে বড় অংশ হলো যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। দুই নম্বর হলো ইলেকশন কমিশন, তারপর প্রশাসন, তারপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘লজিস্টিক সাপোর্টের অভাব নাই’ বলেও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে আদমজীনগরে র্যাব-১১ এর সদরদপ্তর পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সেখানে তাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ‘পুশ-ইন’ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “যারা বাংলাদেশী নাগরিক ওইখানে আছেন তাদেরকে আমাদের নিতে হবে। দশ বছর বা বিশ বছর হোক; যদি ওইখানে গিয়ে থাকেন এবং বাংলাদেশী হয়ে থাকেন। কিন্তু যারা রোহিঙ্গা তাদেরকে অ্যাকসেপ্ট করছি না, ফেরত বা পুশ ব্যাক করে পাঠিয়ে দিচ্ছি।”
ভারত ‘প্রোপার চ্যানেলে’ বাংলাদেশীদের পাঠাচ্ছে না মন্তব্য করে এ উপদেষ্টা বলেন, “তারপরও যদি বাংলাদেশী কোনো নাগরিক সেখানে থাকে তাহলে নিয়ম অনুযায়ী প্রোপার চ্যানেলে পাঠানোর কথা বলেছি। ওদেরও যারা ভারত থেকে আসতেছে তাদের কিন্তু আমরা প্রোপার চ্যানেলে পাঠাই। কিন্তু ওরা প্রোপার চ্যানেলে না পাঠিয়ে জঙ্গলে, নদীর পাড়ে ফেলে রাখে। এটা কোন অবস্থায় গ্রহণযোগ্য না। এটা হিউমান রাইটসেরও ভায়োলেশন। এ ব্যাপারে আমরা প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। প্রতিবাদে কিছু কিছু কাজ হচ্ছে, এখন সংখ্যাটা একটু কমে আসছে। এসময় তিনি একটি বাদাম গাচ লাগান।
বিদ্যমান দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে পুলিশ লাইনসে এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এক্ষেত্রে যেইটা ঘটনা সেই সত্য সংবাদটি প্রকাশ করবেন। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের ডিরেকশন, যেই ঘটনা ঘটে ওইটার সত্যিটাই প্রকাশ করে দেওয়া, এইটার ভেতর লুকোচুরি করার কোনো কিছু নাই। জনগণ কিন্তু সচেতন। তারপরও কিছু স্বার্থান্বেষী লোকজন তো থাকবেই যারা সবসময় একটা প্রবলেম ক্রিয়েট করার জন্য চেষ্টা করবে।
‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের কোনো বিভেদ থাকার কথা না’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “যেসব রাজনৈতিক দল পুলিশের সাথে বা অন্যদের সাথে একটা বিভেদ করার চেষ্টা করছে, তাদের অনুরোধ করবো, বিভেদ আপনারা নিজেদের ভেতরে করবেন। কিন্তু আমাদের সাথে তো রাজনৈতিক দলের কোনো বিভেদ থাকার কথা না। আমাদের কাজ হলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। আর আপনাদের (রাজনীতিক) কাজ, জনগণের কাছে গিয়ে ভোট আদায় করা। আপনারা সেই চেষ্টা করবেন। জনগণ যাতে সুখে শান্তিতে থাকতে পারে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন অবনতি না হয়, সেইটা দেখার দায়িত্ব আমাদের।
গণঅভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা মামলাগুলোর অগ্রগতির প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মামলা গুলোর কিছু অগ্রগতি হয়েছে। অলরেডি কয়েকটা মামলা কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। আরেকটা বিষয় ছিল যে, একটা হত্যা মামলায় হয়তো ২০ জন আসামি হওয়ার দরকার ছিল, আপনারা ওইখানে ২০০ আসামি দিয়ে দিছেন। এতে তদন্তে তো বেশি সময় লাগছে। নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন কোনো অবস্থায়ই শাস্তির আওতায় না আসে, এইজন্য আমাদের কিন্তু বেশি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হয়।”
“অনেকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কিছু নিরীহ লোকের নাম ডুকিয়ে দিয়ে দিছে। এজন্যই কিন্তু সময় বেশি লাগছে। যদি তারা একচুয়াল আসামির নাম দিতো, তাহলে এত সময় লাগতো না”।
এই সময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগন।
নিউজটি শেয়ার করুন

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ