ঢাকা ০৫:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক আর নেই.!  গাইবান্ধায় দুই শতাধিক শ্রমিকদলের নেতাকর্মীর জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান নারায়ণগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জন ঘাটের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে ডিসি-এসপি সিদ্ধিরগঞ্জে সাত কেজি গাঁজাসহ এক কারবারি গ্রেপ্তার ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাক চালক নিহত  মহেশখালীতে অস্ত্র-গোলাবারুদসহ তিন সন্ত্রাসী আটক টেকনাফে গহীন পাহাড়ে নারী ও শিশুসহ ২১ জন উদ্ধার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুতে অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় ২ট্রাক চালক নিহত এনসিপি নেতাকর্মী কর্তৃক সাংবাদিক লাঞ্ছনা, বয়কট সংবাদ সম্মেলন আজ বিজয়া দশমী, দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব উত্তাল সাগর, দুপুরের মধ্যে ৮ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস কক্সবাজারে ১৬ হাজার ৪০০ ইয়াবাসহ তিন তৃতীয় লিঙ্গের হিজরা আটক আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশকে কামড়ে পালানো সেই আসামি র‍্যাবের জালে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট ১৯ কি: মি: মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট না’গঞ্জে র‍্যাবের হাতে আটক আসামীকে ছিনিয়ে নিল সহযোগীরা, র‍্যাব সদস্যসহ আহত-৪ শারদীয় দুর্গাপূজার মহানবমী আজ মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে যে নিয়মের কথা জানালেন পুলিশ প্রধান আমরা কোনো ধরণের দলীয় পদ ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করতে চাই না: মাসুদুজ্জামান টেকনাফে ২৪ হাজার ইয়াবা ও সিএনজিসহ পাচারকারী আটক  আ’লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা যেকোনো সময় তুলে নেওয়া হতে পারে আজ শারদীয় দুর্গাপুজার মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা টিসিবির পণ্য তালিকায় নতুন যুক্ত হচ্ছে চা-লবণ-ডিটারজেন্ট ও সাবান রাজধানীতে অনাবিল বাসে নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহানি, চালক-হেলপার আটক উখিয়ায় সাংবাদিক তানভীর শাহরিয়ার গ্রেপ্তার, সংবাদকর্মীদের কণ্ঠরোধের অভিযোগ পর্যটনবান্ধব নগরী গড়তে সবার ঐক্য চাই : কক্সবাজারের নতুন জেলা প্রশাসক গাইবান্ধার স্বাস্থ্যসেবায় অন্ধকার: ফুলছড়িতে সিজার বন্ধ, জনবল সংকট চরমে না’গঞ্জের আরএস কম্পোজিটে বিশ্বমানের কমপ্লায়েন্সের ভূয়সী প্রশংসা করেন শিল্প পুলিশ প্রধান প্রতিহিংসা ও বিভক্তি বর্জন করে সুশৃঙ্খল রাজনীতি করতে মাসুদুজ্জামানের আহবান দুর্গোৎসব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ: বন্দরে জেলা প্রশাসক শীর্ষস্থানীয় ব্রান্ড আড়ং’র শপিং ব্যাগের মূল্য নেয়া বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ না’গঞ্জে ওভারপাস থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যাওয়া ট্রাকের চাপায় রিকশা চালকের মৃত্যু আড়াইহাজারের সাবেক এমপি বাবুর অনুসারী ইউপি সদস্য গণপিটুনিতে নিহত নরসিংদীতে হাসপাতালে ভাংচুর ডাক্তার-নার্স ও কর্মচারীদের লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন থমথমে খাগড়াছড়ি: অনিদিৃষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা, ৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন আজ শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষষ্ঠী সম্প্রীতির মেলবন্ধনকে অটুট রাখতে ২২৪টি পূজামণ্ডপে অনুদান: ডিসি  আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস আজ বোধন’র মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা কক্সবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরীকে বিদায় সংবর্ধনা না’গঞ্জে কিশোরী অপহরণে মূল হোতা আট বছর পর পিবিআই’র জালে উৎসবমুখর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধনে দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে: জেলা প্রশাসক উখিয়ার তুমব্রু সীমান্তে ৮০ হাজার ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা যুবক আটক দুর্গোৎসব উপলক্ষে সারাদেশে র‍্যাবের ২৮১ টহল দল মোতায়েন দুর্গোৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে ২ প্লাটুন র‍্যাব সদস্য নিয়োজিত থাকবে: সিইও ষড়যন্ত্র হলে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জবাব দেবো, বিভক্ত হবো না;  মাসুদুজ্জামান আড়াইহাজারের নান্দনিক ইকোপার্ক প্রকৃতির সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিনত হবে শ্যালিকার সঙ্গে পরকিয়ার জেরে স্ত্রীকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা দুর্গোৎসব উপলক্ষে ফতুল্লার পুজামন্ডপসহ প্রতিমা বিসর্জন ঘাট পরিদর্শনে ইউএনও নারায়ণগঞ্জে শারদীয় দুর্গোৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে মণ্ডপ পরিদর্শনে র‍্যাব-১১ টেকনাফে মানব পাচারকারী আটক, তিন ভুক্তভোগী উদ্ধার না’গঞ্জে এবারের দুর্গোৎসবে ৭০টি পূজামণ্ডপে আর্থিক অনুদান দিবেন মাসুদুজ্জামান না’গঞ্জে ফের মাদকবিরোধী ব্লক রেইড, শীর্ষ কারবারি আলম চানসহ আটক-২৪ টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ৩৯ হাজার ২’শ ইয়াবা উদ্ধার গাইবান্ধায় সাঁওতাল শিশুদের স্কুল ও মাঠ দখলের চেষ্টা: তীব্র প্রতিবাদ গাইবান্ধায় স্কুল শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ দখল করে ধান ও মাছের চাষ ভাঙ্গায় ২ ইউনিয়নকে পূর্নবহালের দাবিতে মানববন্ধন, নিরীহ জনগণকে হয়রানি না করার আহ্বান শ্রীমঙ্গলে ৯দিন ব্যাপী নবদুর্গা পূজা শুরু কমলগঞ্জে দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  নারায়ণগঞ্জে টাইগার সিমেন্ট কারখানায় ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট শ্রীমঙ্গলে শেভরনে ভয়াবহ আগুনের লেলিহান শিখা নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত সন্ত্রাসী একাধিক মামলার আসামী আপেল গ্রেপ্তার  জলাবদ্ধতা নিরসনে ইউএনও তাসলিমা শিরিনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস না’গঞ্জে ডিপিডিসি ভবনে শ্রমিক ছব্দবেশে ডাকাতি ঘটনায় ৯ সদস র‍্যাবের জালে শ্রীমঙ্গলে ২৫ কেজি ওজনের ১৪ফুট অজগর সাপ উদ্ধার  গাইবান্ধায় একদিনে দুই যুবকের রহস্যজনক মৃ*ত্যু রায়পুরায় রেললাইনের পাশ থেকে অজ্ঞাত কিশোরের লাশ উদ্ধার সংসদীয় আসন বিচ্ছিন্নের প্রতিবাদে ভাঙ্গায় শান্তিপূর্ন মানববন্ধন অনুষ্ঠিত  নারায়ণগঞ্জে ডিপিডিসির নির্মানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডাকাতির ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা না’গঞ্জে মিশনপাড়া পঞ্চায়েত পরিষদ কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন গাইবান্ধা কারাগারে আ’লীগ নেতার মৃত্যু, পরিবারের দাবি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড টেকনাফে যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ তিন মানব পাচারকারী আটক, উদ্ধার-৮৪ নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জামানের বিএনপিতে আনুষ্ঠানিক যোগদান না’গঞ্জে ইন্টার্নি ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ: চিকিৎসক’কে মারধর কমলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানান অসংগতি; জেলা প্রশাসক  আসন্ন দুর্গাপূজা উদযাপনে নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনী সরঞ্জামসহ বিপুলসংখ্যক এনআইডি কার্ড উদ্ধার রাষ্ট্রদূত হলেন সেনাবাহিনীর দুই কর্মকর্তা ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ মুকুট বিজয়ী কে এই তানজিয়া মিথিলা? গাইবান্ধায় দেশের সর্বোচ্চ ও বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম শিবমূর্তি দূর্গোৎসবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী অফিসারগন পরিদর্শনে থাকবেন পুলিশের ৯ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বদলি কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানার প্রথম নারী ওসি হিসেবে ফরিদা ইয়াসমিন’র যোগদান সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি এবার জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমানকে সরিয়ে দেওয়া হলো চট্টগ্রামসহ ৩ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক শেখ হাসিনা ৫ আগষ্ট পদত্যাগ করেননি : দাবি স্টেট ডিফেন্সের জরাজীর্ণ সাঁকো, ২-যুগেও রাস্তা নির্মান হয়নি বৈদ্যের বাজার জেলে পল্লীতে লাগামহীন সবজির বাজার, বেশির ভাগ সবজিই ৮০ টাকার উপরে বিশ্বমানের ফুড রেস্টুরেন্ট ‘রেড চপস্টিক’-কে’স ক্যাফে এখন নারায়ণগঞ্জে ডিজিটাল সাংবাদিকতার দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দিল মিডিয়া ট্রেনিং ইনস্টিটিউট গাইবান্ধায় ৫’শ ৮৭ মণ্ডপে দুর্গোৎসবের আগমনী বার্তা, সর্বাত্মক প্রস্তুতি সম্পন্ন  গাইবান্ধায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব: মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন না’গঞ্জে উদ্ধারকৃত ২৩ একর জমিতে তৈরি করা হবে দৃষ্টিনন্দন ইকোপার্ক: ডিসি সোনারগাঁয়ে ১৫’শ ইয়াবাসহ এক মাদক কারবারি গ্রেপ্তার মিয়ানমারগামী বোটে বিপুল খাদ্যপণ্য পাচারকালে আটক-১০ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে এসি বিস্ফোরণ; একই পরিবারের দগ্ধ-৪ হতদরিদ্র মানুষের পাশে মানবতার ফেরিওয়ালা কাজী রুবায়েত হাসান।  বিএনপি নেতা এ্যাড. টিপুর পথশিশুদের নিয়ে ব্যতিক্রমী আয়োজন নারায়ণগঞ্জে সৎ বাবা কর্তৃক কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ: আটক-২ সোনারগাঁয়ে তুচ্ছ ঘটনায় ভাইয়ের ‘দাঁ’ এর কোপে ভাই খু*ন

যৌনপীড়ন, ধর্ষণ ও নারী সুরক্ষায় আমাদের করণীয়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৯:৩১:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫ ২৩৬ বার পড়া হয়েছে

 

মোঃ ফেরদৌস আলম।।

বাংলাদেশে যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নারীরা আজও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, নারী সুরক্ষা নীতিমালা এবং বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ সত্ত্বেও এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশে যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের বর্তমান অবস্থা, এর পেছনের কারণ, আইনি কাঠামো, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নারী সুরক্ষায় আমাদের করণীয় –

বাংলাদেশে যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের বর্তমান অবস্থা:
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার নারী ও শিশু যৌন সহিংসতার শিকার হয়। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য মতে, ২০২২ সালে ১,০০০ এরও বেশি ধর্ষণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে বাস্তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে, কারণ অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা সামাজিক লজ্জা, ভয় ও আইনি জটিলতার কারণে অভিযোগ দায়ের করে না।
ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা। তবে শহরাঞ্চলেও এই ধরনের ঘটনা কম নয়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবার, আদিবাসী সম্প্রদায় এবং প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু ঘটনা সমাজকে স্তম্ভিত করেছে। যেমন, স্কুলছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, এমনকি শিশুদেরও ধর্ষণের শিকার হওয়ার খবর নিয়মিত প্রকাশ পাচ্ছে।

যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের পেছনের কারণ:
যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি। বাংলাদেশের সমাজে এখনও নারীকে পুরুষের চেয়ে নিম্নস্তরের হিসেবে দেখা হয়। নারীরা পুরুষের সম্পত্তি বা ভোগের বস্তু হিসেবে বিবেচিত হয়। এই মানসিকতা যৌন সহিংসতাকে উৎসাহিত করে।
দ্বিতীয়ত, আইনের দুর্বল প্রয়োগ। বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ধর্ষণের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে আইনের সঠিক প্রয়োগ হয় না। পুলিশ ও আদালতের দীর্ঘসূত্রতা, সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাব এবং ভুক্তভোগীদের প্রতি সামাজিক চাপের কারণে অনেক অপরাধী শাস্তি এড়িয়ে যায়।

তৃতীয়ত, শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব। অনেক ক্ষেত্রে যৌন সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুরা জানেই না যে তাদের অধিকার কী এবং কীভাবে আইনি সহায়তা পাওয়া যায়। এছাড়া, পুরুষদের মধ্যে নারী অধিকার ও সম্মান সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে।
চতুর্থত, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা। দারিদ্র্য ও বেকারত্বের কারণে অনেক পুরুষ হতাশায় ভোগে, যা তাদের সহিংস আচরণের দিকে ঠেলে দেয়। এছাড়া, নিম্ন আয়ের পরিবারের নারী ও শিশুরা সহিংসতার শিকার হলে তাদের পক্ষে আইনি লড়াই চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।

আইনি কাঠামো ও এর সীমাবদ্ধতা:
বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। এই আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া, নারী ও শিশু নির্যাতনের অন্যান্য রূপ যেমন, যৌন হয়রানি, এসিড নিক্ষেপ, বাল্যবিবাহ ইত্যাদির বিরুদ্ধেও শাস্তির বিধান রয়েছে।
তবে আইনের সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। প্রথমত, অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা আইনি সহায়তা পায় না। দ্বিতীয়ত, পুলিশ ও আদালতের দীর্ঘসূত্রতা এবং দুর্নীতির কারণে অনেক অপরাধী শাস্তি এড়িয়ে যায়। তৃতীয়ত, আইনের প্রয়োগে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা আইনের ঊর্ধ্বে থেকে যায়।

গণমাধ্যমের ভূমিকা:
গণমাধ্যম যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টেলিভিশন, পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় যৌন সহিংসতার ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। এই আলোচনা সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে এবং ভুক্তভোগীদের সাহস জুগিয়েছে।
তবে গণমাধ্যমের কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা হয়, যা তাদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে। এছাড়া, কিছু মিডিয়া সংবাদকে সেনসেশনাল করে তোলে, যা ভুক্তভোগীর মানসিক অবস্থাকে আরও খারাপ করে।

নারী সুরক্ষায় আমাদের করণীয়:
যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। নারী নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও সমতা নিশ্চিত করা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। এ লক্ষ্যে আমাদের নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা উচিত:

১. সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন:
লিঙ্গ ভিত্তিক কুসংস্কার দূরীকরণ: নারীদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে কাজ করতে হবে। নারী ও পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। লিঙ্গ ভিত্তিক কুসংস্কার ও বৈষম্য দূর করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে।
পুরুষদের সম্পৃক্ততা: পুরুষদের নারী নিরাপত্তা ও সমতা বিষয়ে সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে হবে। নারী সুরক্ষা শুধু নারীদের বিষয় নয়, পুরুষদেরও এই লড়াইয়ে অংশ নিতে হবে। পুরুষদের মধ্যে নারী অধিকার ও সম্মান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

২. আইনি সংস্কার ও প্রয়োগ: নারী নির্যাতন ও বৈষম্য রোধে বিদ্যমান আইনগুলির সংস্কার ও প্রয়োগ কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ ও আদালতের দীর্ঘসূত্রতা কমাতে হবে এবং ভুক্তভোগীদের জন্য দ্রুত বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া, আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে। ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, গৃহস্থালি সহিংসতা ইত্যাদির বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত: নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুল, কলেজ ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এছাড়া, নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে হবে।নারীদের জন্য জরুরি হেল্পলাইন ও সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।
৪. শিক্ষা ও সচেতনতা: স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে লিঙ্গ সমতা ও নারী

অধিকার বিষয়ক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নারী নিরাপত্তা ও সমতা সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচারাভিযান চালানো প্রয়োজন। নারী সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। নারী ও শিশুদের তাদের অধিকার ও আইনি সহায়তা সম্পর্কে জানাতে হবে। এ জন্য বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার ও প্রচারণা চালাতে হবে।
৫. পরিবার ও সমাজের ভূমিকা: পরিবার থেকে নারীদের প্রতি সম্মান ও সমতা শিক্ষা দিতে হবে। সমাজের সকল স্তরে নারীদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে।
৬. নারী ক্ষমতায়ন:
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা: নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
রাজনৈতিক অংশগ্রহণ: নারীদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে তারা নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারে।

৭. সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ:
সরকারি নীতি: সরকারকে নারী নিরাপত্তা ও সমতা নিশ্চিত করতে কার্যকর নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
বেসরকারি সংস্থা: এনজিও ও সুশীল সমাজকে নারী অধিকার রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।

যৌনপীড়ন ও ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি, যা সমাজের প্রতিটি স্তরকে প্রভাবিত করে। এই সমস্যা সমাধানে নারী নিরাপত্তা ও সমতা নিশ্চিত করতে আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। আইনের সঠিক প্রয়োগ, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা একটি নিরাপদ ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে পারি। নারী সুরক্ষা শুধু নারীর বিষয় নয়, এটি সমগ্র সমাজের দায়িত্ব। আসুন, আমরা সবাই মিলে এই লড়াইয়ে অংশ নিই এবং একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

ট্যাগস:-

যৌনপীড়ন, ধর্ষণ ও নারী সুরক্ষায় আমাদের করণীয়

আপডেট সময়- ০৯:৩১:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

 

মোঃ ফেরদৌস আলম।।

বাংলাদেশে যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নারীরা আজও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, নারী সুরক্ষা নীতিমালা এবং বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ সত্ত্বেও এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশে যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের বর্তমান অবস্থা, এর পেছনের কারণ, আইনি কাঠামো, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নারী সুরক্ষায় আমাদের করণীয় –

বাংলাদেশে যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের বর্তমান অবস্থা:
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার নারী ও শিশু যৌন সহিংসতার শিকার হয়। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য মতে, ২০২২ সালে ১,০০০ এরও বেশি ধর্ষণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে বাস্তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে, কারণ অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা সামাজিক লজ্জা, ভয় ও আইনি জটিলতার কারণে অভিযোগ দায়ের করে না।
ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা। তবে শহরাঞ্চলেও এই ধরনের ঘটনা কম নয়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবার, আদিবাসী সম্প্রদায় এবং প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু ঘটনা সমাজকে স্তম্ভিত করেছে। যেমন, স্কুলছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, এমনকি শিশুদেরও ধর্ষণের শিকার হওয়ার খবর নিয়মিত প্রকাশ পাচ্ছে।

যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের পেছনের কারণ:
যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি। বাংলাদেশের সমাজে এখনও নারীকে পুরুষের চেয়ে নিম্নস্তরের হিসেবে দেখা হয়। নারীরা পুরুষের সম্পত্তি বা ভোগের বস্তু হিসেবে বিবেচিত হয়। এই মানসিকতা যৌন সহিংসতাকে উৎসাহিত করে।
দ্বিতীয়ত, আইনের দুর্বল প্রয়োগ। বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ধর্ষণের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে আইনের সঠিক প্রয়োগ হয় না। পুলিশ ও আদালতের দীর্ঘসূত্রতা, সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাব এবং ভুক্তভোগীদের প্রতি সামাজিক চাপের কারণে অনেক অপরাধী শাস্তি এড়িয়ে যায়।

তৃতীয়ত, শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব। অনেক ক্ষেত্রে যৌন সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুরা জানেই না যে তাদের অধিকার কী এবং কীভাবে আইনি সহায়তা পাওয়া যায়। এছাড়া, পুরুষদের মধ্যে নারী অধিকার ও সম্মান সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে।
চতুর্থত, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা। দারিদ্র্য ও বেকারত্বের কারণে অনেক পুরুষ হতাশায় ভোগে, যা তাদের সহিংস আচরণের দিকে ঠেলে দেয়। এছাড়া, নিম্ন আয়ের পরিবারের নারী ও শিশুরা সহিংসতার শিকার হলে তাদের পক্ষে আইনি লড়াই চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।

আইনি কাঠামো ও এর সীমাবদ্ধতা:
বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। এই আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া, নারী ও শিশু নির্যাতনের অন্যান্য রূপ যেমন, যৌন হয়রানি, এসিড নিক্ষেপ, বাল্যবিবাহ ইত্যাদির বিরুদ্ধেও শাস্তির বিধান রয়েছে।
তবে আইনের সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। প্রথমত, অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা আইনি সহায়তা পায় না। দ্বিতীয়ত, পুলিশ ও আদালতের দীর্ঘসূত্রতা এবং দুর্নীতির কারণে অনেক অপরাধী শাস্তি এড়িয়ে যায়। তৃতীয়ত, আইনের প্রয়োগে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা আইনের ঊর্ধ্বে থেকে যায়।

গণমাধ্যমের ভূমিকা:
গণমাধ্যম যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টেলিভিশন, পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় যৌন সহিংসতার ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। এই আলোচনা সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে এবং ভুক্তভোগীদের সাহস জুগিয়েছে।
তবে গণমাধ্যমের কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা হয়, যা তাদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে। এছাড়া, কিছু মিডিয়া সংবাদকে সেনসেশনাল করে তোলে, যা ভুক্তভোগীর মানসিক অবস্থাকে আরও খারাপ করে।

নারী সুরক্ষায় আমাদের করণীয়:
যৌনপীড়ন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। নারী নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও সমতা নিশ্চিত করা সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। এ লক্ষ্যে আমাদের নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা উচিত:

১. সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন:
লিঙ্গ ভিত্তিক কুসংস্কার দূরীকরণ: নারীদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে কাজ করতে হবে। নারী ও পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। লিঙ্গ ভিত্তিক কুসংস্কার ও বৈষম্য দূর করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে।
পুরুষদের সম্পৃক্ততা: পুরুষদের নারী নিরাপত্তা ও সমতা বিষয়ে সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে হবে। নারী সুরক্ষা শুধু নারীদের বিষয় নয়, পুরুষদেরও এই লড়াইয়ে অংশ নিতে হবে। পুরুষদের মধ্যে নারী অধিকার ও সম্মান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

২. আইনি সংস্কার ও প্রয়োগ: নারী নির্যাতন ও বৈষম্য রোধে বিদ্যমান আইনগুলির সংস্কার ও প্রয়োগ কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ ও আদালতের দীর্ঘসূত্রতা কমাতে হবে এবং ভুক্তভোগীদের জন্য দ্রুত বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া, আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে। ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, গৃহস্থালি সহিংসতা ইত্যাদির বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত: নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুল, কলেজ ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এছাড়া, নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে হবে।নারীদের জন্য জরুরি হেল্পলাইন ও সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।
৪. শিক্ষা ও সচেতনতা: স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে লিঙ্গ সমতা ও নারী

অধিকার বিষয়ক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নারী নিরাপত্তা ও সমতা সম্পর্কে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচারাভিযান চালানো প্রয়োজন। নারী সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। নারী ও শিশুদের তাদের অধিকার ও আইনি সহায়তা সম্পর্কে জানাতে হবে। এ জন্য বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার ও প্রচারণা চালাতে হবে।
৫. পরিবার ও সমাজের ভূমিকা: পরিবার থেকে নারীদের প্রতি সম্মান ও সমতা শিক্ষা দিতে হবে। সমাজের সকল স্তরে নারীদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে।
৬. নারী ক্ষমতায়ন:
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা: নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
রাজনৈতিক অংশগ্রহণ: নারীদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে তারা নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারে।

৭. সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ:
সরকারি নীতি: সরকারকে নারী নিরাপত্তা ও সমতা নিশ্চিত করতে কার্যকর নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
বেসরকারি সংস্থা: এনজিও ও সুশীল সমাজকে নারী অধিকার রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।

যৌনপীড়ন ও ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি, যা সমাজের প্রতিটি স্তরকে প্রভাবিত করে। এই সমস্যা সমাধানে নারী নিরাপত্তা ও সমতা নিশ্চিত করতে আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। আইনের সঠিক প্রয়োগ, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা একটি নিরাপদ ও সমতাভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে পারি। নারী সুরক্ষা শুধু নারীর বিষয় নয়, এটি সমগ্র সমাজের দায়িত্ব। আসুন, আমরা সবাই মিলে এই লড়াইয়ে অংশ নিই এবং একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।