কাঁদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে দলের স্বার্থে’ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মাসুদুজ্জামানের

- আপডেট সময়- ০৬:২৭:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫ ১০ বার পড়া হয়েছে

রাজনৈতিক আলোচনায় আমি প্রস্তুত আছি,সাখাওয়াত-টিপুকে মাসুদুজ্জামানের ইঙ্গিত..!
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দলটির কয়েকজন নেতা মাসুদুজ্জামান মাসুদকে নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনায় ব্যস্ত।
বিশেষ করে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এ্যাড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু’র বক্তব্যে একাধিকবার মাসুদুজ্জামানের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
তবে, মাসুদুজ্জামান এখনও পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো ধরনের বক্তব্য না রাখলেও শনিবার (৪ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট জানিয়েছেন ‘রাজনৈতিকভাবে গঠনমূলক আলোচনার’ জন্য তিনি প্রস্তুত আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে কারও নাম উল্লেখ না করলেও দলীয় নেতাদের ‘কাঁদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে দলের স্বার্থে’ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বিশিষ্ট সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জামান মাসুদ।
তিনি বলেছেন, আমাদের সবার দায়িত্ব দলের সম্মান অক্ষুন্ন রাখা এবং রাজনীতিকে গঠনমূলক পথে এগিয়ে নেওয়া। গঠনমূলক রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকবে, মতবিরোধ থাকবে কিন্তু তা যেন কখনও দলের ভেতর বিরোধ সৃষ্টি না করে। বিরোধীপক্ষ যেন কোনোভাবে সুযোগ নিতে না পারে, সে বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার( ৪ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদুজ্জামান শুরুতে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি বিএনপির একজন কর্মী। গত ২২ সেপ্টেম্বর আমি দলে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেছি। ওই অনুষ্ঠানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু যোগদানের পর থেকেই একটি পক্ষ আমাকে হেয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা কাঁদা ছোড়াছুড়ির মাধ্যমে আমার রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল করতে চাচ্ছে। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এই ধরনের অপপ্রচার মূলত বিরোধীপক্ষের উপকারে আসছে আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাবমূর্তি।
জেলা ও মহানগরের নেতাদের আলোচনার আহ্বান জানাই, রাজনৈতিক আলোচনা করতে আমি সবসময় প্রস্তুত। সামনের দিনে আরও সরব হয়ে শক্তিশালীভাবে আমি কাজ করতে চাই, যাতে নারায়ণগঞ্জে বিএনপিকে সুসংগঠিত করা যায়। এবং জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা পুনঃস্থাপন করা যায়। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে অচিরেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে।
তিনি আরও বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শ, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার ত্যাগ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী দল বিজয়ের পথে এগিয়ে যাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এই শহর-বন্দরের মানুষ আমার কর্মকাণ্ড, ব্যক্তি, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন সম্পর্কে জানেন এবং আমার যে অবদান তাও তারা জানে। বিগত ২০ বছরের অবদান ও মাটি-মানুষের সঙ্গে থাকার কারণেই লোকজন আমাকে ভোট দিবে।
তিনি বলেন, এই শহরের বাইরে আমার আর কোনো জায়গা নাই। সমস্ত ধ্যান-ধারণা আমার এই নারায়ণগঞ্জকে নিয়েই থাকে। এই কারণেই লোকজন সবসময় আমাকে পাবে। আমি এই শহরেরই মানুষ, এখানেই বেড়ে ওঠা। যারা আমার আশেপাশে থাকেন, তারা জানেন আমাকে খুব সহজেই পাওয়া যায়।
দলের কোনো নেতার সঙ্গে দূরত্ব নেই জানিয়ে মাসুদুজ্জামান বলেন, ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে আমি অনেকদিন দলের বাইরে ছিলাম। কিন্তু ১৫ বছর দলের পেছনে থেকে আমরা কাজ করেছি। আমাদের আজকে শিল্পপতি বলে আলাদা করা হচ্ছে, কিন্তু আমরা বিএনপিরই ছিলাম। ব্যবসায়ীরা পেছন থেকে বিভিন্ন রকম কাজ করেন। তাদেরও তো অধিকার থাকতে পারে দলীয় নমিনেশন চাওয়া।
আমি দল করি ৩৫ বছর হয়ে গেছে। আমার ধ্যান, জ্ঞান, মন সবসময় এই দলের ভেতরে ছিল। আমাদের ১৫ থেকে ২০ হাজার শ্রমিকের একটা ইন্ডাস্ট্রি, এদের দায়িত্বও আমার উপর আছে। এরাও জনগণেরই অংশ। তাদের কথা ভেবে কিছু বাধা-বিঘ্নতার কারণে কায়দা করে চলতে হয়, সেই কায়দা করে আমরা চলেছি,” যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, দ্বিধা-বিভক্তি কাটিয়ে উঠে এখন ঘরে ঘরে যাওয়ার সময়। দল যাকে মনোনয়ন দিকে তার পক্ষে সকলে কাজ করবে।
মাসুদ বলেন, খারাপ মানুষ খারাপ চিন্তা করবে, আর ভালো মানুষ ভালোটা করবে। কিন্তু আমরা পজেটিভ মানুষ, আমরা পজেটিভলি এগোবো।মনোনয়ন না পেলেও দলের হয়ে আগের মতো কাজ করে যাবেন বলেও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
মাসুদুজ্জামান বলেন, আমি দল ছেড়ে কখনও যাই নাই। দলের পদ-পদবী নিয়ে আমার উচ্চাকাঙ্খা নাই। আমি ইচ্ছা প্রকাশ করেছি, দল যদি মনে দিবে। না দিলেও আমি দলে আছি। আমি ছিলাম, আছি এবং থাকবো। আমি দুঃসময়েও ছিলাম। বরং সুসময়ে আমাকে নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে। দুঃসময়ে কিন্তু আমাকে নিয়ে প্রশ্ন করা হয় নাই। দুঃসময়ে আমি পকেট ভরে ভরে দিছি, আমি মামলা চালিয়েছি। যাদের বউ-বাচ্চার সঙ্গে দেখা করতে পারে নাই, বাসায় আসতে পারে নাই, তাদের বাড়িতেও টাকা পৌঁছে দিয়েছি, অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছি। আজকে এইসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়, এইটা দুঃখজনক। কেবল নমিনেশন চাওয়ার কারণেই এত কথা আমাকে বলতে হচ্ছে। নাহলে ওনারাই উপকারের সাক্ষ্য দিতেন।