রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ১৬ জেলায় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন
- আপডেট সময়- ০৪:৫১:৩১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৫৮ বার পড়া হয়েছে
অনলাইন ডেস্ক।।
রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পরছে জনজীবন।বিশেষ করে এই দুই বিভাগের ১৬টি জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে নর্দান ইলেকট্রিসিটি পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)।
প্রতিষ্ঠানটির সূত্রে জানা গেছে, আগামী সোমবার থেকে জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তারা গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সর্বরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
সূত্র মতে, লোডশেডিং বাড়তে থাকলে বিদ্যুতের চাহিদাও প্রচুর বেড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়।
রংপুরের জেলাগুলোতে প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর এক থেকে দেড় ঘণ্টারও অধিক সময় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। রাজশাহীর পরিস্থিতিও একই।
জেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। তাদের অবস্থা আরো ভয়াবহ। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পিকআওয়ারে চাহিদার ৩০ শতাংশ বিদ্যুতও মিলছে না বলে পল্লী বিদ্যুতায়ন সমিতি জানিয়েছে।
রাজশাহীর শালবাগান আসাম কলোনির বাসিন্দা আনোয়ার নামে এক গ্রাহক নিজ ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, এলাকায় গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় বিদ্যুৎ যায়। তারপর বিদ্যুৎ আসে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে। বহুদিন পর টানা সাড়ে ৫ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে থাকলেন বলে তিনি জানিয়েছেন। একই অবস্থা ছিল নগরের দড়িখড়বোনা-উপশহর এলাকাতেও।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার নগরের বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং হয়েছে। ভ্যাপসা গরমে এমন লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। রাজশাহী জেলায়ও কয়েকটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। তাদের লোডশেডিং নেসকোর চেয়ে আরো বেশি খারাপ অবস্থা। বিশেষ করে সেচ সংকটে পড়েছেন গ্রামের কৃষকগন।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রাজশাহীর সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক রমেন্দ্র চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নেই না। আমাদের বিদ্যুৎ আসে রাজশাহীর কাঁটাখালী উপকেন্দ্র থেকে। ওখান থেকেও আমরা চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পিক আওয়ারে বড়জোর ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। বাকি সময়ও লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দিনের বেলা তাদের বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ৪৫ থেকে ৫০ মেগাওয়াট। আর রাতে পিকআওয়ারে চাহিদা থাকে ৬০ থেকে ৭০ মেগাওয়াট।
নেসকোর রংপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলী (অপারেশন) আশরাফুল মণ্ডল বলেন, ‘বুধবার থেকে পরিস্থিতির খারাপ হয়ে গেছে। আমাদের আট জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। জাতীয় গ্রিড থেকে এখন আমরা পাচ্ছি মাত্র ৭০০ মেগাওয়াট।
প্রতি ৩ ঘণ্টা পরপর সব এলাকায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা লোডশেডিং বাধ্য হয়েই করতে হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের লোডশেডিং বাড়লে চাহিদা কমে না; বরংচ আরো বেশি বাড়ে। ফলে আমরা সে চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি। পরিস্থিতির কবে থেকে উন্নতি হবে কেনো কিছুই বলতে পারছি না। কেন এই অবস্থা সেটাও জানি না।’
নেসকোর রাজশাহী জোনের প্রধান প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘রাজশাহী বিভাগের আট জেলায়ও চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। প্রতি ঘণ্টায় ১০৭ থেকে ১১০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হচ্ছে।’ তিনি আরো জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াট।অথচ জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ পাওয়া যায় ১ হাজার ১৭০ মেগাওয়াট। বাকিটা লোডশেডিং এর মধ্যে কভার করতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সর্বরাহ বা মজুদ পাচ্ছি না। উৎপান্ন কম হচ্ছে বলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে আরেকটা পাওয়ার স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। তাই সমস্যা বেশি হচ্ছে। কবে সমস্যার সমাধান হবে সেটা আমরা কিছুই বলতে পারছি না। কবে নাগাত এই সমস্যার সমাধান হবে সে ব্যাপারে কিছুই বলতে পারলেন এ কর্মকর্তা।
নিউজটি শেয়ার করুন
-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ