খালেদা জিয়ার কিডনি জটিলতায় উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা, অবস্থা অপরিবর্তিত
- আপডেট সময়- ০৪:৫০:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন নিউজ ডেস্ক।।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুব ধীরে উন্নতি করছে। পুরোনো লিভারের জটিলতা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তাঁর কিডনি নিয়ে উদ্বেগ আছে চিকিৎসক দলের। এক সমস্যা কমলে আরেকটি জটিলতা দেখা দিচ্ছে। শারীরিক অবস্থার কাঙ্ক্ষিত উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিবেচনায় আনছে না মেডিকেল বোর্ড। দেশেই চলবে চিকিৎসা।
৮০ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন থেকে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসের পাশাপাশি কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। পরে অবস্থার অবনতি হলে ২৭ নভেম্বর তাঁকে নেওয়া হয় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত দেশি-বিদেশি দুই ডজনের মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড প্রতিদিন বৈঠক করে চিকিৎসায় পরিবর্তন আনছে।
সোমবার সন্ধ্যায় বোর্ডের এক চিকিৎসক বলেন, ‘ম্যাডামের উন্নতি আছে। তবে আহামরি বলা যাবে না। বয়সজনিত কারণে সেরে উঠতে সময় লাগবে। এই দফায় তাঁর উন্নতি হচ্ছে খুবই ধীরগতিতে। তাঁর মাল্টিপল ডিজিজ (বহুমুখী জটিলতা) থাকায় একটি রোগ থেকে সেরে উঠলে আরেকটি দেখা দেয়। লিভার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কিডনি জটিলতায় বেশ ভুগছেন। কিডনির ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বর্ডার লাইন অতিক্রম করেছে বেশ আগেই। এটি নিয়ন্ত্রণে রাখাই কষ্ট হচ্ছে। এখানে বয়স একটা বড় ফ্যাক্টর। প্রতিনিয়ত ডায়ালাইসিস দিতে হচ্ছে। ডায়ালাইসিস বন্ধ করলেই কিডনির অবস্থা অবনতি হয়।’
তিনি বলেন, সিসিইউতে নেওয়ার পর থেকে প্রতিদিন নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। প্যারামিটারগুলো খারাপ আসছে না, তবে একেবারে ঝুঁকিমুক্তও হচ্ছেন না। সিসিইউতে অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট দেওয়া হচ্ছে। মেডিকেল বোর্ড প্রতি রাতে বৈঠকে বসে, যেখানে প্রত্যেক চিকিৎসক আলাদা রোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
ওই চিকিৎসক আরও জানান, দেশে ফেরার পর বোর্ডে সশরীরে অংশ নেন খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান। দিনের বেশির ভাগ সময় হাসপাতালে শাশুড়ির শয্যাপাশে কাটান। চিকিৎসার বিষয়গুলো তিনি সমন্বয় করেন। তিনি বেশ কয়েক দিন দেশেই থাকবেন।
মেডিকেল বোর্ডের আরেকজন সদস্য জানান, চিকিৎসকদের পরামর্শে গুলশানের বাসা থেকে খালেদা জিয়ার জন্য প্রতিদিন খাবার পাঠানো হচ্ছে। সার্বক্ষণিক তাঁর সঙ্গে আছেন পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা ও শর্মিলা রহমান, গৃহপরিচারিকা ফাতেমা এবং স্টাফ রূপা আক্তার। বিএনপির চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার ও ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা সার্বক্ষণিক পাশে আছেন। তাদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কথা বলার চেষ্টা করেন খালেদা জিয়া।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের এক ডজন চিকিৎসক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারক করছে।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য কাতার আমিরের পক্ষ থেকে জার্মানভিত্তিক এয়ারলাইনস এফএআই এভিয়েশন গ্রুপ একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে। নিয়ম অনুযায়ী এফএআই এভিয়েশন গত শনিবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতির জন্য আবেদন করে। সে অনুযায়ী, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি বিমানবন্দরে নামার অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু এ সূচির পরিবর্তন হয়েছে।
এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা। বিএনপি নেতারা বলছেন, তাঁর লন্ডনযাত্রার বিষয়টি নির্ভর করছে শারীরিক অবস্থার ওপর। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তাঁর চিকিৎসক দল।
নিউজটি শেয়ার করুন..

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ



































































































