না’গঞ্জের আদালতপাড়ায় শেখ মুজিব কর্ণার-ম্যুরালসহ ভাস্কর্য ভাঙল বিএনপি

- আপডেট সময়- ১২:৫১:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৪১ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়ায় ডিসি-এসপি অফিস প্রাঙ্গণে থাকা শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণার সহ ম্যুরাল ও ভাস্কর্য ভেঙে দিয়েছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার(৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে নির্মাণ শ্রমিকদের ডেকে হাতুড়ি-শাবল দিয়ে এসব কর্ণার- ম্যুরাল ও ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হয়।এ সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদেরকেও হাত লাগাতে দেখা যায়।
জেলা ও দায়রা জজ আদালত, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় প্রাঙ্গণে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের কয়েকটি ম্যুরাল ও স্থাপনা এবং কর্ণার ভাঙচুর করা হয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা আবক্ষ ভাস্কর্যটিও ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এসময় আইনজীবীদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোটেক আবু আল ইউসুফ খান টিপু।এ সময় মহানগর বিএনপির আহ্ববায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন,(শেখ মুজিবের) এইসব ছবি দিয়ে আওয়ামী লীগ পবিত্র বিচারাঙ্গণকে কলুষিত করেছে।এই ম্যুরালের দোহাই দিয়ে প্রশাসনের সকলকে দলীয়করণ করা হয়েছিল। বাংলাদেশে বিপ্লব সাধিত হয়েছে এবং এখন দেশে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠিত। এখন প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে। ভবিষ্যতে আর কেউ যেন প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে কলঙ্কিত করতে না পারে সেজন্য জেলার সাধারণ আইনজীবীরা এইসব ছবি অপসারণ করেছে। আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত নারায়ণগঞ্জ চাই
প্রসঙ্গ উল্লেখ্য যে, এর আগে বুধবার(৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানী ঢাকায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাসভবন গুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর রাতভর দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামীলীগ নেতাদের বাসভবন ও মুজিবের ম্যুরাল ভাঙা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। পরে তারা নির্মাণ শ্রমিকদের খবর দেন। এরপর বেলা ১২টার দিকে বড় আকারের হাতুড়ি, শাবল নিয়ে নির্মাণ শ্রমিকরা পৌঁছালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি ভাঙা শুরু করেন আইনজীবীরা। বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হেসেন খান ও আবু আল ইউসুফ টিপু নিজেও শাবল ও হাতুড়ি দিয়ে ম্যুরাল ভাঙা কার্যক্রমে অংশ নেন। প্রথমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ভাস্কর্যটিও ভাঙা হয়।
পরে পাশে জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনের দুটি ম্যুরালও একইভাবে ভাঙা হয়। যদিও এ ম্যুরালগুলো ৫ অগাস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কালো কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে থাকা নীচতলার ‘বঙ্গবন্ধু কর্নারেও’ ভাঙচুর চলে। সেখানে থাকা ছবি ও ফটোফ্রেম ভাঙচুর করা হয়।
ভাঙচুরের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার হুমায়ূন কবির, আইনজীবী সমিতি ও সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আনোয়ার প্রধান, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়া, মহানগর বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক আহমেদসহ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতারা।
জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ও জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জাকিরকেও সেখানে দেখা গেছে।
তবে ভাঙচুর চলাকালীন সময়ে পুলিশ বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বাধা আসেনি।
এবিষয়ে আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, গতকাল দেখেছেন শেখ মুজিবের ৩২ নম্বরের বাড়ি ভেঙেছে ছাত্র জনতারা। আমরা তারই ধারাবাহিকতায় শেখ মুজিবের ম্যুরাল বা ছবি ভেঙে দিচ্ছি। এটি নারায়ণগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। যেখানে যেখানে আওয়ামীলীগ ও শেখ মুজিবের ছবি বা স্মৃতিচিহ্ন আছে সবগুলো ভেঙে ফেলা হবে।
বিকালে শহরের চাষাঢ়ায় আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পৈত্রিক বাড়ি বায়তুল আমান ভাঙার কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির এ নেতা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক(ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমি একটি প্রোগ্রামে সকালেই আড়াইহাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যাই। ঘটনার সময় আমি কার্যালয়ে ছিলাম না । বিষয়টি সম্পর্কে আমি পুরোপুরি অবগত নই। এ সম্পর্কে খোঁজখবর করার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নিউজটি শেয়ার করুন

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ