সর্বশেষ:-
চিঠি হাতে আর ডাকপিয়ন আসে না
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৫:২৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ৮ বার পড়া হয়েছে
হৃদয় রায়হান,কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
জীবন অনেক সহজ হয়ে গেছে। এখনও অনুভব করি যে, একটা সময় ছিল আমাদের, তা হয়ত আর আসবে না। হলুদ খামের ব্যক্তিগত চিঠি এখন ইতিহাস প্রায়।
এখন মোবাইল ফোন আসছে, কিন্তু আগের আবেগ-অনুভূতিটা ছিল একেবারেই অন্যরকম।
প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের আগে মানুষের যোগাযোগের ভরসা ছিল চিঠি। গ্রামে ঢুকলেই ডাকপিয়নকে ঘিরে ধরত লোকজন, যা এখন স্মৃতি। ইন্টারনেট আর মোবাইল ফোনের ব্যাপক প্রসারে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ঘটেছে উন্নয়ন। ফলে চাকরি-বাকরি আর দাপ্তরিক কাজের বাইরে আর চিঠির চল নেই। ডাকঘরের কাজও আটকে গেছে অফিস-আদালত ঘিরে।
ডাক বিভাগের কথা উঠলে স্মৃতি ঝুড়ি খুলে বসেন দেশের বয়স্ক নাগরিকেরা। অন্যদিকে এই প্রজন্মের তরুণ, কিশোরদের কাছে অনেকটাই অপরিচিত একসময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের এই মাধ্যম। তাই নতুন প্রজন্মের অনেকেই ডাক পিয়ন পেশাটির সঙ্গে পরিচিত নয়। স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের যুগে এই চিঠি আদান প্রদানের ডাক পিয়নের এই নামটাই তারা শুনেনি। টেক্সট, অডিও আর ভিডিও কলের যুগে কাগজে কলমে চিঠি লিখে অপেক্ষা করার ধৈর্য তেমন কারো নাই। তাই ব্যক্তিগত যোগাযোগের জন্য চিঠির প্রয়োজন ফুরিয়েছে অনেক আগেই। ডিজিটাল যুগের আগে চিঠির বাহক হিসেবে যারা পৌঁছে দিতেন প্রিয়জনের বার্তা। সেই ডাক পিয়নদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ডাক পিয়ন হিসেবে খাকি পোশাক পড়ে সাইকেলে চেপে যে মানুষের ছবি আমাদের কল্পনার চোখে ভাসে। শহরের ডাকঘর গুলোতে এখন তার প্রতিফলন দেখা যায় না। ইউনিফর্মের বদলে সাধারণ জামা কাপড় পড়ে তারা কাজে নামেন।
যখন দেশে চিঠির প্রচলন অনেক বেশি ছিল তখন প্রিয় মানুষের চিঠি বা মানি অর্ডার নিয়ে গেলে সবাই খুশি হয়ে ডাক পিয়নদের বকশিষ দিতো। এই রীতিই ছিল দেশের সব জায়গাতেই। কিন্তু এখন সেই প্রচলনও নেই। এক সময় প্রেম, ভালোবাসা বা বন্ধুত্বের জন্য প্রধান মাধ্যম ছিল চিঠি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে সবই। প্রেমপত্রের আদান-প্রদান একেবারে থেমে না গেলেও তা হাতে হাতে বা ডিজিটাল মাধ্যমে পাঠানোই সুবিধাজনক মনে করে বর্তমান প্রজন্ম। সেজন্য যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি নির্ভর করা হচ্ছে ডাক বিভাগ কে। এর প্রভাব পড়েছে ডাক পিয়নদের কাজেও। বর্তমান রেজিস্ট্রি করা চিঠি, পার্সেল বিতরণ করা হচ্ছে ইলেকট্রনিক পিওএস মেশিনের মাধ্যমে।
ডিভাইসটির মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করা চিঠি বা পার্সেল কোথায় আছে প্রেরক তা সহজেই সনাক্ত করতে পারেন। ডাক পিয়নদের কাছ থেকে চিঠি হস্তান্তর কাজ শেষ হয়ে গেলে তা এন্ট্রি করা হয় ডিভাইসে। ফলে চিঠিপত্র বা পার্সেল হারানোর অনেকাংশেই কমে গেছে। শহরের ডাক গুলোর কার্যক্রম এখনো চোখে পড়লেও গ্রামে তার খুব একটা প্রতিফলন নেই। তাই একসময় সকলের যোগাযোগের এই মাধ্যম এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। কয়েক বছর পরে হয়তো ডাক পিয়ন শব্দটি সোনালী অতীত হয়ে থাকবে।
নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগস:-
-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ