পুলিশে ইতিবাচক পরিবর্তন: দুরত্ব কমিয়ে জনগণের দোরগোড়ায়
- আপডেট সময়- ০৬:৪৯:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৮ বার পড়া হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক।।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর স্বল্পসময়েই পুলিশ বাহিনীতে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বিপ্লবোত্তরকালে ভেঙে পড়া পুলিশের চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে জোর দাবি করছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ মনে করছে, সময়ের দাবিতে মেট্রোপলিটন, জেলাসহ অন্য নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের পদগুলোতে যৌক্তিক কারণে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। এর মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব পুলিশের ভেঙেপড়া মনোবল আবার নতুন করে চাঙ্গা করে নব উদ্দীপনায় কাজে ফেরাতে পেরেছে।
সূত্র জানায়, কয়েক দফায় পদোন্নতির মাধ্যমে এ বাহিনীর যোগ্য অফিসারদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। অধ:স্তনদের সার্বিক কল্যাণ এবং কর্মোদ্দীপনা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে জোর দেওয়া হয়েছে। এভাবেই পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি ঘটেছে।
জনসাধারণের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। হারানো অস্ত্র এবং গুলির বড় অংশ এরই মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকতা জানান, জুলাই-আগস্টে পুলিশের বিধ্বস্ত ইউনিটগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার করে পুনরায় কর্মোপযোগী করা হয়েছে। একই সঙ্গে জনগণের প্রয়োজনীয় সেবা দিতে পূর্ণোদ্যমে প্রতিটি ইউনিট নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে।
একই সঙ্গে আন্দোলনে পুলিশ সদস্যের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
অপরাধ ও সমাজবিশ্লেষকদের মতে, নতুন সরকার গঠনের পর সব থেকে বেশি চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন সাধন করা। কারণ পুলিশের ৪৬০টি স্থাপনা ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাঙচুর ও লুটপাট করে থানা জ্বালিয়ে দেওয়া, অস্ত্র ও মালপত্র লুটসহ পুলিশ সদস্যরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
প্রাণভয়ে অনেক পুলিশ সদস্য আত্মগোপনে চলে যান। ফলে সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার সময়কালে দেশের থানাগুলো অনেকটাই অরক্ষিত ও পুলিশবিহীন ছিল। এতে চুরি-ডাকাতির ঘটনা বেড়ে যাওয়াসহ দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে।
এ অবস্থায় জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে পুনরুজ্জীবিত করে মাঠে নামানোর ব্যাপারে সর্বোচ্চ সহযোগিতা ও প্রতিশ্রুতি দেয় সরকার। ফলে ধীরে ধীরে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিশ সদস্যরা এতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেন।
হেডকোয়ার্টার সূত্রমতে জানায়, পুলিশের ১৪৩টি থানাসহ মোট ৪৫৪টি ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাসমূহের মেরামত করা হয়েছে। এর মধ্যে কোনো স্থাপনার কাজ এখনো চলমান। এ ছাড়া পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সারা দেশে অনলাইন জিডির (সাধারণ ডায়েরি) কার্যক্রম চালু আগের চেয়ে আরো গতিশীল ও বেগবান করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন ব্যবহার করে নাগরিকরা ঘরে বসেই জিডিসংক্রান্ত বিষয়ে তাৎক্ষণিক সেবা পাচ্ছেন। সাধারণ নাগরিকরা অনলাইন জিডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ জিডির বিপরীতে আইনি সেবা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশে প্রযুক্তিনির্ভর সেবাসমূহ আন্তরিকতা ও পেশাদারির সঙ্গে পালন করা হচ্ছে।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) ইনামুল হক সাগর বলেন, অপরাধ নির্মূলে প্রো-অ্যাকটিভ পুলিশিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তা ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি পেট্রোলিংও বাড়ানো হয়েছে।
হত্যা মামলার আসামিসহ নিয়মিত মামলার আসামি গ্রেপ্তার, নারী-শিশু মামলার ভিকটিম উদ্ধার, মৃতদেহ শনাক্ত, আলামত উদ্ধার, অজ্ঞাত ব্যক্তি ও অজ্ঞাত মৃতদেহ শনাক্তকরণের কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সাইবারজগতের অপরাধ শনাক্ত ও অপরাধী ধরতে সাইবার পেট্রোলিংও জোরদার করা হয়েছে।
সূত্র সংগৃহীত :ই/ফা