গাইবান্ধায় ঘাঘট-ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপরে: পানি বন্দি ৩০ হাজার
- আপডেট সময়- ০৬:৪৫:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪ ৭৯ বার পড়া হয়েছে
ফেরদৌস আলম, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
উজানের ঢল ও টানা রিমঝিম বৃষ্টির ফলে গাইবান্ধার যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার চার উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে ইতোমধ্যে বন্যার দেখা দিয়েছে। সরকারি হিসেবে চার উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গাইবান্ধার সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন, সুন্দরগঞ্জের ৭টি, সাঘাটার ৮টি ও ফুলছড়ি উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে। এই ২৭ ইউনিয়নে পানিবন্দি প্রায় ৩০হাজার পরিবার। এরমধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৫১৮টি, সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় চার হাজার ৭০০টি, সাঘাটা উপজেলায় ১৩ হাজার ২৯০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার ৭ হাজার ৪২০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার, ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জেলার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া, ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, জেলার করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলেও বিপৎসীমার ১৩৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং তিস্তা নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গুলোর ভিতরে বন্যার পানি ডুকে পড়েছে। ইতোমধ্যে সদর উপজেলার ১৭টি, ফুলছড়িতে ১৪টি, সাঘাটায় ২১টি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ১২টিসহ জেলার মোট ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। এছাড়া, ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৩টি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রমও বন্ধ ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বিভাগ।
পানিবন্দি বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়েছে ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে তারা ধীরে ধীরে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন।
গাইবান্ধা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, চলমান বন্যায় ইতোমধ্যে ৪ উপজেলায় ২ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, বীজতলা ও শাকসবজি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। যদি দ্রুত পানি নেমে যায়, তাহলে ক্ষতি কম হবে। আর যদি বন্যা স্থায়ী হয়, কিংবা আরও বাড়ে তাহলে ক্ষতির পরিমাণ অসহনীয় হয়ে দাঁড়াবে।
গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক জানান, উজানের ঢলে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।