ঢাকা ১১:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
না’গঞ্জ জেলা প্রশাসনের ‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন’ কার্যক্রমে দৃষ্টিনন্দন পুরো নগরী ধর্ষণ প্রতিরোধে নতুন আইন রোববারের মধ্যেই, থাকছে আলাদা ট্রাইব্যুনাল: আইন উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক মারা গেছেন পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সারাদেশের ন্যায় না’গঞ্জেও স্বতঃস্ফূর্তভাবে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পালিত হবে এনায়েতনগরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা আসাদুজ্জামান গ্রেপ্তার  সকল শ্রেণিপেশার প্রানবন্ত উপস্থিতে নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠিত সোনারগাঁয়ে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার-১ রূপগঞ্জে বিএনপির উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিল করল সরকার কুষ্টিয়ায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে যুবকের আত্নহত্যা বাউফলে বিএনপি নেতার বাড়িতে মিলল টিসিবির পণ্য গাইবান্ধায় বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ টেকনাফে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা  সোনারগাঁয়ে প্রতিবন্ধী তরুনী ধর্ষণ: র‍্যাবের ছায়া তদন্তে ঝিনাইদহে গ্রেপ্তার ধর্ষক না’গঞ্জে অপহৃত কিশোরীকে ৬০দিন পর টাঙ্গাইল থেকে উদ্ধার করলো পিবিআই না’গঞ্জকে পরিচ্ছন্ন-পরিবেশবান্ধব গড়তে ‘গ্রীন এন্ড ক্লিন জোন’ পরিকল্পনা গ্রহণ  সরকারি সম্পত্তিতে কোন অবৈধ স্থাপনা থাকতে পারবে না: ডিসি জাহিদুল  ভেড়ামারায় দ্রব্যমুল্য সহনীয় পর্যায় রাখতে বাজার মনিটরিং ভিডিও-ছবি ধারন করায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা করলেন সাবেক এসপি এবার জনপ্রতি সাদাকাতুল ফিতরা সর্বনিম্ন ১১০ টাকা কারাগারে ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৭৭, বন্দি ৭০ হাজারের বেশি: কারা মহাপরিদর্শক টাকা ছাড়া সুন্দরগঞ্জের প্রশাসন কাজ করে না: অধ্যাপক মাজেদুর রহমান মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি পেল ঢাকাগামী বুড়িমারী এক্সপ্রেস বড়লেখায় ও মাগুরায় শিশু ধর্ষণে জড়িতদের ফাঁ’সি’র দাবিতে বি’ক্ষো’ভ ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুন হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান জেল ভেঙে পলাতক ৭’শ জনকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশের গাড়ি নিয়ে ডাকাতি: দুই বাহিনীর সাবেক-বর্তমানসহ গ্রেপ্তার-৫ নারায়ণগঞ্জের অদম্য জেলা প্রশাসক এগিয়ে চলছে মানবসেবায় ব্রত হয়ে সৎ ব্যবসায়ীদের নবীদের সাথে হাশর হবে: মাওলানা হাফিজুর রহমান না’গঞ্জে হাসপাতালে যৌথবাহিনীর অভিযানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠকসহ আটক-২ শিশু আছিয়া ধর্ষণ ইস্যুতে গাইবান্ধায় ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন যৌনপীড়ন, ধর্ষণ ও নারী সুরক্ষায় আমাদের করণীয় কমলগঞ্জে সাবেক কৃষিমন্ত্রীর ভাইয়ের অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিলো ভ্রাম্যমাণ আদালত নারী দিবসে শ্রীমঙ্গলে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের র‍্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত কুলাউড়ায় ইস্টার্ন রেস্টুরেন্টসহ ৪ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলমান; অবৈধভাবে শিক্ষকের নাম এমপিও ভুক্ত নারীরা সমাজের বোঝা না হয়ে, সম্পদ হয়ে উঠতে পারে: নারী দিবসে ডিসি জাহিদুল আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ কুলাউড়ায় ডেভিল হান্টের অ’ভি’যা’নে চেয়ারম্যান পিতাসহ পুত্র গ্রে’প্তা’র ভালুকায় হবিরবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত  জুড়ীতে কু’খ্যাত ডাকাত সোহেল গ্রেপ্তার  সিদ্ধিরগঞ্জে ডিএনডি লেকের পানিতে যুবকের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার  মহাসড়কে উচ্ছেদ অভিযানে যানজট মুক্ত রূপগঞ্জ রূপগঞ্জের নূর ম্যানশন মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত-১৫ সোনারগাঁয়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধে একই পরিবারের আহত-৩ জনসাধারণের নির্বিঘ্নে চলাচলে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ উচ্ছেদ অভিযান অব্যহত জেলা প্রশাসকের আহ্বানে মেঘনা গ্রুপের ভোজ্যতেলসহ নিত্যপন্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু না’গঞ্জে ফের তিন নারীকে আর্থিক সহায়তা দিলেন মানবিক ডিসি জাহিদুল  মৌলভীবাজারে পর্যটন শিল্প বিকাশ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত  ঈশ্বরদীতে অগ্নিকাণ্ডে এক নারী নিহত, ১২টি ছাগলসহ বসতঘর ভস্মীভূত কুষ্টিয়ার লালন স্মরণোৎসবে গাঁজা-মাদক সেবন নিষিদ্ধ শমশের নগরে ট্রেনে কাঁটা পড়ে একজনের মৃত্যু  শেষ রক্ষা হলো না.! অবশেষে গ্রেপ্তার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদ  না’গঞ্জ শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে ব্যবসায়িক সংগঠনের ২৫ লাখ টাকা অনুদান সিদ্ধিরগঞ্জে বিদেশী অস্ত্রসহ এক যুবক গ্রেপ্তার দু-হাত বিহীন অসহায় রহিমের পাশে দাড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপনা করলেন ডিসি জাহিদুল  সিআইডি প্রধানসহ পুলিশে বড় রদবদল গাইবান্ধায় নতুন সিভিল সার্জন হিসেবে দায়িত্ব নিলেন ডা. রফিকুজ্জামান    বড়লেখায় ৩ বছরের শিশু ধর্ষণের দায়ে তরুণ আটক  শ্রীমঙ্গলে পৌনে ২ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার-১ কুলাউড়ায় বাড়তি দামে সয়াবিন তেল বিক্রির দায়ে ৭ জনকে জরিমানা কুলাউড়ায় মনু নদী থেকে মায়ানমারের নারীর লাশ উদ্ধার কমলগঞ্জে আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী দিবস পালিত  কুষ্টিয়ায় বালুভর্তি বস্তার নিচে মিলল শিশুর লাশ দ্রুততম সময়ে ভোজ্য তেলে স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করছি: ডিসি জাহিদুল কুলাউড়ায় চড় মারার প্রতিশোধ নিতেই হত্যাকান্ড সংঘটিত, গ্রেপ্তার-৪ নারায়ণগঞ্জে গ্যাস বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৮ কুমারখালীতে ইট ভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান সীমান্তে চোরাকারবারিদের দ্বন্ধে সালিশে ১জনকে কুপিয়ে হত্যা,আহত-৩ না’গঞ্জে এবার নতুন ভোটার যুক্ত হয়ে মোট সংখ্যা ২৩ লাখ ৫১ হাজার ৯২৯ জন।  না’গঞ্জে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণসহ অধিক মূল্যে সয়াবিন তেল বিক্রির দায়ে অর্থদন্ড সোনারগাঁয়ে সিজারের প্রসূতিকে নরমাল ডেলিভারি করাতে গিয়ে নবজাতকের মৃত্যু আজ থেকে টানা ৪০ দিনের ছুটি পাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘তোমার আমার বাংলাদেশে, ভোট দিব মিলেমিশে’:ইসি সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার কানাডার নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মৌলভীবাজারের সন্তান ডলি নির্বাচিত  কুষ্টিয়ায় নিখোঁজের একদিন পর গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে ঈশ্বরদীতে জামায়াতের বর্ণাঢ্য র‍্যালী ‘কাউকে অ্যারেস্ট করতে হলে আমাদের অনুমতি নিতে হবে’ নইলে থানা ঘেরাও করা হবে’ বিএনপিতে ‘গণতন্ত্র’ নাই, কেন্দ্র নেতা দেয় আমরা দাসত্ব করি: গিয়াস উদ্দিন  শ্রীমঙ্গলে টাস্কফোর্সের অভিযানে চার প্রতিষ্ঠানকে ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা কুষ্টিয়ায় গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে মৌ মৌ ঘ্রাণ টেকনাফে বিজিবি-২’র অভিযানে ৪০হাজার ইয়াবা ও ২৩ কেজি গাঁজাসহ আটক-২ বড়লেখায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্টে তরুণ তরুণীদের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার-৩ শ্রীমঙ্গলে মায়ের ওপর অভিমান করে তরুণীর আত্মহত্যা না’গঞ্জে স্বামীকে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ: গ্রেপ্তার-২ সাংবাদিকদের ভাগ্যোন্নয়নে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব নিরলস কাজ করে যাচ্ছে: দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ফরিদ খান কুষ্টিয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আ’লীগপন্থী রশিদ ও সম্পাদক বিএনপিপন্থী মাহমুদ রমজানে রাস্তা দখল করে কোনো ধরনের দোকান বসানো চলবে না; ডিসির হুশিয়ারি বনবিভাগের বাধার মুখেও জোরপূর্বক মাটি ভরাট করে বনভূমি দখলের চেষ্টা সাবেক পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন নিজ কর্মস্থল আদালতপাড়ায় আটক না’গঞ্জ শহরকে যানজট মুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান অব্যহত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা সুস্থ শিশুদের চেয়ে মেধা-মননে এগিয়ে: জেলা প্রশাসক অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব পেলেন মাহফুজ আলম নারায়ণগঞ্জে শীর্ষ সন্ত্রাসী একাধিক মামলার আসামী কাদির সিপাহি গ্রেপ্তার পুলিশ প্রশাসন ও সামাজিকভাবে বিবাদমান সমস্যার সমাধান করতে হবে; পুলিশ সুপার  কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার টঙ্গীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

বাংলার স্বাধীনতা আদায়ে ঋত্বিক ঘটক-উত্তম কুমার পথে প্রান্তরে ভিক্ষা করেছিলেন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৭:১৯:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪ ১৬৮ বার পড়া হয়েছে

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
প্রথমে ভাষা আন্দোলন দিয়ে স্বাধীনতার আঁতুড় ঘরের সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশে। তারপর থেকেই বাংলা বিরোধী পাকিস্তানি শাসক আপামর জনসাধারণের ওপর স্টিম রোলার চালাতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যখন তার আওয়ামী লীগ পার্টি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তখন বাঙালিদের হাতে শাসন ক্ষমতা তুলে দিতে অস্বীকার করেছিল পাকিস্তান। গণতন্ত্রকে পদদলিত করে ব্যাপক হত্যা লীলা শুরু করে। ভারতে তখন প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। কোটি কোটি বাঙালি পাকিস্তানের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এপারে ভারতে চলে এলে পশ্চিমবঙ্গ,ত্রিপুরা, অসম সহ সারা ভারতের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। খাদ্য,বাসস্থান ভাগ করে নিয়েছিলেন। সেই কারনে ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। যুদ্ধ যখন মধ্যগগনে তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিতে সারা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উঠেছিল উত্তাল। সেটা সকলেই জানেন। কিন্তু বাংলার সিনেমা জগতের অবদান অনস্বীকার্য। জনগণের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহের সবচেয়ে সহজ উপায় ছিল চলচ্চিত্র জগতের নায়ক,মহানায়ক,পরিচালক দের উপস্থিতি। মহানায়ক উত্তম কুমার এক ঝাঁক অভিনেতা,অভিনেত্রীদের নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। তাকে দেখতে ভিড় জমে যাওয়া স্বাভাবিক। বৃষ্টির মতো টাকা পড়ছিল উত্তম কুমারের ঝুলিতে। শুধু তাই নয়, শুনলে অনেকেই অবাক হবেন, কলকাতার নিষিদ্ধ পল্লীতে পর্যন্ত উত্তম কুমার হাজির হলে যৌনকর্মীরা ছুটে এসে তাদের কাছে যা কিছু ছিল উদার হস্তে উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। মহানায়ক সেদিন সত্যিই কেঁদে ফেলেছিলেন। মহানায়ক উত্তম কুমার তার অর্থ সংগ্রহের কাজে দুয়েকবার আমার বাবাকেও ডেকে নিয়ে গেছেন।সেসময় বাবা মানস বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত পার্ক সার্কাসে অস্থায়ী বাংলাদেশ মিশনে যেতেন শেখ কামাল, এম এন এ রুবেয়া আখতার ওরফে ডলি আখতার, আওয়ামী লীগের ঝাঁটু সাহার সঙ্গে দেখা করতে। উত্তম কুমার বাবার কাছ থেকে বাংলাদেশের সর্বশেষ খবর নিতেন। আপনারা অনেকেই জানেন,বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকর নিজেও মুম্বাইতে চাঁদা চাইতেই এক কথায় সবাইকে চমকে দিয়ে কোটি টাকার ওপর একটি চেক লিখে দিয়েছিলেন। দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে দেখাও করেছেন। ঋত্বিক ঘটক তখন চিত্র পরিচালনায় গগনচুম্বী নামী পরিচালক। তিনি রাস্তায় নেমে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ধুতি,পাঞ্জাবি পড়ে মানুষের কাছে হাত পেতে কাতর আবেদন করেছেন।সেই কাহিনীও তুলে ধরছি এখানে। বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড থেকে শুরু করে সর্বত্র রাস্তায়, পার্কে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভিক্ষার হাত পেতে হাজির হয়েছিলেন। ভিক্ষা করতে করতে ঋত্বিক হঠাৎ একটি গাড়িতে চড়ে সুচিত্রা দেবীকে চলতে দেখেন। ঋত্বিক ঘটকের বেশভূষা দেখে চেনা মুস্কিল ছিল। তিনি সুচিত্রা দেবীকে দেখেই বলেন, ” এলেই যখন, দুটো টাকা দিয়ে যাও’, বলে ঋত্বিক হাত বাড়ালেন। লজ্জায় মাথা নিচু করে সুচিত্রা বললেন ‘ছিঃ দাদা। এমন করে বলছেন কেন ? আমি কি দূরের কেউ ?’। বলেই কড়কড়া কয়েকটা ১০০টাকার নোট দিলেন ঋত্বিকের হাতে …সাদা রংয়ের একটা এ্যাম্বাসেডরের পিছের সিটে হেলান দিয়ে বসে আছেন সুচিত্রা। তীব্র দাবদাহ, পুরা কলকাতা পুড়ছে। এ্যাম্বাসেডর পার্ক স্ট্রিটে ঢুকে একটু আগাতেই ফুটপাতে একজনকে দেখে সোজা হয়ে সিটে বসলেন সুচিত্রা। ড্রাইভারকে গাড়ি সাইড করতে বলে নিজেই নেমে এগিয়ে গেলেন সেই মানুষটার দিকে। এই কাঠফাটা গরমে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছেন স্বয়ং ঋত্বিক ঘটক।
 হাত জোর করে প্রণাম করতে করতে সুচিত্রা বললেন,
 – আমাকে চিনতে পারছেন না ঋত্বিক দা ? আমি সুচিত্রা, গত বছর শান্তিনিকেতনে দেখা হলো। চশমার উপর দিকে তাকিয়ে ভালো করে মুখটা দেখলেন ঋত্বিক, তারপরে বললেনঃ
– ও হ্যা। তুমি সুচিত্রা রায় তো ? টালিগঞ্জ বাড়ি। অন্নদাশঙ্কর রায় তোমার কী রকম জ্যাঠা হন না ? ঠিক বলেছি তো ?
সুচিত্রা আপ্লুত হলেন। কি সৌভাগ্য! এত বড় মানুষটা সব মনে রেখেছে। সুচিত্রা কলকাতার শিল্পপ্রেমী বনেদি পরিবারের মেয়ে, জন্মের পর থেকেই কলকাতার সব মহিরুহদের সামনে দেখে বড় হয়েছেন; ইদানিং প্রায়ই বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় চলচ্চিত্র বিষয়ে প্রবন্ধনিবন্ধ লেখেন। ঋত্বিক ঘটক এর মূল্য তিনি বোঝেন। ঋত্বিক ঘটক কে মনে মনে গুরু মানেন সুচিত্রা। ঋত্বিকদার পরনে ধুলিমলিন পাজামা-পাঞ্জাবি। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। এক মাথা এলোমেলো চুল। মুখে খোঁচা খোঁচা। সে মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম।এই জবুথবু অবস্থাতেও ঋত্বিকের চোখের আগুন একফোটা কমে নি, ঋত্বিক ঘটক মানেই এক আগুনের নাম। মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার, সুবর্ণরেখা-এসব ছবিগুলোয় যে আগুনের ছাপ স্পষ্ট। সুচিত্রা খেয়াল করলেন ঋত্বিকের পিছনে একটা ব্যানারে বড় করে লেখা :
  “বাংলা দেশের শরণার্থীদের জন্য দান করুন।”।
ব্যানারের পাশেই একটা বড় বাক্স, সেখানে রাস্তার মানুষ টাকা ফেলে যাচ্ছে। বাক্সের পাশেই লম্বা একটি টুল। তার ওপর গিটার হাতে এক বিদেশি তরুণ বসে আছে। গায়ের রং তামাটে, হিপিদের মতো লম্বাচুল, চোখে সানগ্লাস আর মুখ ভর্তি লালচে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। পরনে ঢোলা বেলবটম প্যান্ট আর রঙ্গিন হাওয়াই শার্ট। মাথায় একটি সাদা রঙের সোলার হ্যাট। গিটার আর মাউথ অর্গান বাজিয়ে নাকি গলায় তরুণটি গাইছে:
“Come senators, congressmen
 Please heed the call
Don’t stand in the doorway
Don’t block up the hall”
গানটা সুচিত্রার পরিচিত, কিংবদন্তি গায়ক বব ডিলানের গান। ঋত্বিক তরুণকে দেখিয়ে বললেন, ও হল স্টিভ টার্নার। গায়ক ও সাংবাদিক। সপ্তাহ খানেক হল আমেরিকা থেকে এসেছে। স্টিভ-এর সঙ্গে কবি অ্যালান গিনসবার্গও কলকাতা এসেছেন। স্টিভকে হ্যালো বলে কৌতুহলী সুচিত্রা জানতে চাইলেন গিনসবার্গ কোথায়। ঋত্বিক বললেন,অ্যালান আজ সকালে শক্তির সঙ্গে বারাসাত শরনার্থী শিবিরে গিয়েছে।
 – শক্তি ? মানে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ?
  – হ্যা। গতকাল অবধি টাকাপয়সা যা জমেছিল তা দিয়ে ওরা ওষুধ আর খাবার কিনে নিয়ে এলো।
  হঠাৎ করে ঋত্বিক সুচিত্রাকে প্রশ্ন করলেনঃ
– সুচিত্রা তুমি একসঙ্গে কত লাশ দেখেছ ? ১০০? ২০০? ৩০০? ৪০০? ৫০০? ৬০০? ৭০০? ৮০০? ৯০০? লাখ লাখ, বিশ লাখ? সুচিত্রা চোখ ছানাবড়া। ঘোরলাগা নিয়ে সুচিত্রা আবার এ্যাম্বাসেডরে চড়ে বসলেন। যে ভূখন্ডের অসহায় মানুষের জন্য এই পাগলাটে মানুষটা তীব্র তাপদাহে পুড়েছেন, কেঁদেছেন,চিৎকার করেছেন সেই ভূখন্ডে তো ঋত্বিকদা আর কখনোই ফিরে যাবেন না জেনেও। ঋত্বিকদারা পরিবারসহ ’৪৭ সালেই এ পাড়ে চলে এসেছেন । তার আসল মাটি ছিল ওপার বাংলায়। তবুও … এত বড় ফিল্ম ডিরেক্টর, ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়, যে ঋত্বিক ঘটককে জগদ্বিখ্যাত চলচ্চিত্রকারদের সঙ্গে তুলনা করা হয় সে মানুষটি কেমন নাওয়াখাওয়া ভুলে জ্বলন্ত ফুটপাতে দাঁড়িয়ে তৎকালীন পূর্ব বাংলার শরণার্থীদের জন্য ভিক্ষে করছেন। এমন অনেকেই রয়েছেন। বাবার মুখে শুনেছি টালিগঞ্জে স্টুডিও পাড়ায় তখন আলোচনার বিষয়বস্তুই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতীয় সেনার দুর্বার অভিযান পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধে মুক্তি যোদ্ধাদের মরণপণ যুদ্ধও তখন ছিল আলোচনার বিষয়।ভাবতে পারেন, কলকাতার সোনাগাছির যৌন কর্মীরাও বিনা স্বার্থেই তাদের একেক দিনের সম্বল উজাড় করে মহানায়ক উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। জয় বাংলা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

বাংলার স্বাধীনতা আদায়ে ঋত্বিক ঘটক-উত্তম কুমার পথে প্রান্তরে ভিক্ষা করেছিলেন

আপডেট সময়- ০৭:১৯:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
প্রথমে ভাষা আন্দোলন দিয়ে স্বাধীনতার আঁতুড় ঘরের সৃষ্টি হয়েছিল বাংলাদেশে। তারপর থেকেই বাংলা বিরোধী পাকিস্তানি শাসক আপামর জনসাধারণের ওপর স্টিম রোলার চালাতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যখন তার আওয়ামী লীগ পার্টি নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তখন বাঙালিদের হাতে শাসন ক্ষমতা তুলে দিতে অস্বীকার করেছিল পাকিস্তান। গণতন্ত্রকে পদদলিত করে ব্যাপক হত্যা লীলা শুরু করে। ভারতে তখন প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। কোটি কোটি বাঙালি পাকিস্তানের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এপারে ভারতে চলে এলে পশ্চিমবঙ্গ,ত্রিপুরা, অসম সহ সারা ভারতের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। খাদ্য,বাসস্থান ভাগ করে নিয়েছিলেন। সেই কারনে ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। যুদ্ধ যখন মধ্যগগনে তখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিতে সারা পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উঠেছিল উত্তাল। সেটা সকলেই জানেন। কিন্তু বাংলার সিনেমা জগতের অবদান অনস্বীকার্য। জনগণের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহের সবচেয়ে সহজ উপায় ছিল চলচ্চিত্র জগতের নায়ক,মহানায়ক,পরিচালক দের উপস্থিতি। মহানায়ক উত্তম কুমার এক ঝাঁক অভিনেতা,অভিনেত্রীদের নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। তাকে দেখতে ভিড় জমে যাওয়া স্বাভাবিক। বৃষ্টির মতো টাকা পড়ছিল উত্তম কুমারের ঝুলিতে। শুধু তাই নয়, শুনলে অনেকেই অবাক হবেন, কলকাতার নিষিদ্ধ পল্লীতে পর্যন্ত উত্তম কুমার হাজির হলে যৌনকর্মীরা ছুটে এসে তাদের কাছে যা কিছু ছিল উদার হস্তে উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। মহানায়ক সেদিন সত্যিই কেঁদে ফেলেছিলেন। মহানায়ক উত্তম কুমার তার অর্থ সংগ্রহের কাজে দুয়েকবার আমার বাবাকেও ডেকে নিয়ে গেছেন।সেসময় বাবা মানস বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত পার্ক সার্কাসে অস্থায়ী বাংলাদেশ মিশনে যেতেন শেখ কামাল, এম এন এ রুবেয়া আখতার ওরফে ডলি আখতার, আওয়ামী লীগের ঝাঁটু সাহার সঙ্গে দেখা করতে। উত্তম কুমার বাবার কাছ থেকে বাংলাদেশের সর্বশেষ খবর নিতেন। আপনারা অনেকেই জানেন,বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকর নিজেও মুম্বাইতে চাঁদা চাইতেই এক কথায় সবাইকে চমকে দিয়ে কোটি টাকার ওপর একটি চেক লিখে দিয়েছিলেন। দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে দেখাও করেছেন। ঋত্বিক ঘটক তখন চিত্র পরিচালনায় গগনচুম্বী নামী পরিচালক। তিনি রাস্তায় নেমে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ধুতি,পাঞ্জাবি পড়ে মানুষের কাছে হাত পেতে কাতর আবেদন করেছেন।সেই কাহিনীও তুলে ধরছি এখানে। বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড থেকে শুরু করে সর্বত্র রাস্তায়, পার্কে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভিক্ষার হাত পেতে হাজির হয়েছিলেন। ভিক্ষা করতে করতে ঋত্বিক হঠাৎ একটি গাড়িতে চড়ে সুচিত্রা দেবীকে চলতে দেখেন। ঋত্বিক ঘটকের বেশভূষা দেখে চেনা মুস্কিল ছিল। তিনি সুচিত্রা দেবীকে দেখেই বলেন, ” এলেই যখন, দুটো টাকা দিয়ে যাও’, বলে ঋত্বিক হাত বাড়ালেন। লজ্জায় মাথা নিচু করে সুচিত্রা বললেন ‘ছিঃ দাদা। এমন করে বলছেন কেন ? আমি কি দূরের কেউ ?’। বলেই কড়কড়া কয়েকটা ১০০টাকার নোট দিলেন ঋত্বিকের হাতে …সাদা রংয়ের একটা এ্যাম্বাসেডরের পিছের সিটে হেলান দিয়ে বসে আছেন সুচিত্রা। তীব্র দাবদাহ, পুরা কলকাতা পুড়ছে। এ্যাম্বাসেডর পার্ক স্ট্রিটে ঢুকে একটু আগাতেই ফুটপাতে একজনকে দেখে সোজা হয়ে সিটে বসলেন সুচিত্রা। ড্রাইভারকে গাড়ি সাইড করতে বলে নিজেই নেমে এগিয়ে গেলেন সেই মানুষটার দিকে। এই কাঠফাটা গরমে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছেন স্বয়ং ঋত্বিক ঘটক।
 হাত জোর করে প্রণাম করতে করতে সুচিত্রা বললেন,
 – আমাকে চিনতে পারছেন না ঋত্বিক দা ? আমি সুচিত্রা, গত বছর শান্তিনিকেতনে দেখা হলো। চশমার উপর দিকে তাকিয়ে ভালো করে মুখটা দেখলেন ঋত্বিক, তারপরে বললেনঃ
– ও হ্যা। তুমি সুচিত্রা রায় তো ? টালিগঞ্জ বাড়ি। অন্নদাশঙ্কর রায় তোমার কী রকম জ্যাঠা হন না ? ঠিক বলেছি তো ?
সুচিত্রা আপ্লুত হলেন। কি সৌভাগ্য! এত বড় মানুষটা সব মনে রেখেছে। সুচিত্রা কলকাতার শিল্পপ্রেমী বনেদি পরিবারের মেয়ে, জন্মের পর থেকেই কলকাতার সব মহিরুহদের সামনে দেখে বড় হয়েছেন; ইদানিং প্রায়ই বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকায় চলচ্চিত্র বিষয়ে প্রবন্ধনিবন্ধ লেখেন। ঋত্বিক ঘটক এর মূল্য তিনি বোঝেন। ঋত্বিক ঘটক কে মনে মনে গুরু মানেন সুচিত্রা। ঋত্বিকদার পরনে ধুলিমলিন পাজামা-পাঞ্জাবি। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। এক মাথা এলোমেলো চুল। মুখে খোঁচা খোঁচা। সে মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম।এই জবুথবু অবস্থাতেও ঋত্বিকের চোখের আগুন একফোটা কমে নি, ঋত্বিক ঘটক মানেই এক আগুনের নাম। মেঘে ঢাকা তারা, কোমল গান্ধার, সুবর্ণরেখা-এসব ছবিগুলোয় যে আগুনের ছাপ স্পষ্ট। সুচিত্রা খেয়াল করলেন ঋত্বিকের পিছনে একটা ব্যানারে বড় করে লেখা :
  “বাংলা দেশের শরণার্থীদের জন্য দান করুন।”।
ব্যানারের পাশেই একটা বড় বাক্স, সেখানে রাস্তার মানুষ টাকা ফেলে যাচ্ছে। বাক্সের পাশেই লম্বা একটি টুল। তার ওপর গিটার হাতে এক বিদেশি তরুণ বসে আছে। গায়ের রং তামাটে, হিপিদের মতো লম্বাচুল, চোখে সানগ্লাস আর মুখ ভর্তি লালচে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। পরনে ঢোলা বেলবটম প্যান্ট আর রঙ্গিন হাওয়াই শার্ট। মাথায় একটি সাদা রঙের সোলার হ্যাট। গিটার আর মাউথ অর্গান বাজিয়ে নাকি গলায় তরুণটি গাইছে:
“Come senators, congressmen
 Please heed the call
Don’t stand in the doorway
Don’t block up the hall”
গানটা সুচিত্রার পরিচিত, কিংবদন্তি গায়ক বব ডিলানের গান। ঋত্বিক তরুণকে দেখিয়ে বললেন, ও হল স্টিভ টার্নার। গায়ক ও সাংবাদিক। সপ্তাহ খানেক হল আমেরিকা থেকে এসেছে। স্টিভ-এর সঙ্গে কবি অ্যালান গিনসবার্গও কলকাতা এসেছেন। স্টিভকে হ্যালো বলে কৌতুহলী সুচিত্রা জানতে চাইলেন গিনসবার্গ কোথায়। ঋত্বিক বললেন,অ্যালান আজ সকালে শক্তির সঙ্গে বারাসাত শরনার্থী শিবিরে গিয়েছে।
 – শক্তি ? মানে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ?
  – হ্যা। গতকাল অবধি টাকাপয়সা যা জমেছিল তা দিয়ে ওরা ওষুধ আর খাবার কিনে নিয়ে এলো।
  হঠাৎ করে ঋত্বিক সুচিত্রাকে প্রশ্ন করলেনঃ
– সুচিত্রা তুমি একসঙ্গে কত লাশ দেখেছ ? ১০০? ২০০? ৩০০? ৪০০? ৫০০? ৬০০? ৭০০? ৮০০? ৯০০? লাখ লাখ, বিশ লাখ? সুচিত্রা চোখ ছানাবড়া। ঘোরলাগা নিয়ে সুচিত্রা আবার এ্যাম্বাসেডরে চড়ে বসলেন। যে ভূখন্ডের অসহায় মানুষের জন্য এই পাগলাটে মানুষটা তীব্র তাপদাহে পুড়েছেন, কেঁদেছেন,চিৎকার করেছেন সেই ভূখন্ডে তো ঋত্বিকদা আর কখনোই ফিরে যাবেন না জেনেও। ঋত্বিকদারা পরিবারসহ ’৪৭ সালেই এ পাড়ে চলে এসেছেন । তার আসল মাটি ছিল ওপার বাংলায়। তবুও … এত বড় ফিল্ম ডিরেক্টর, ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়, যে ঋত্বিক ঘটককে জগদ্বিখ্যাত চলচ্চিত্রকারদের সঙ্গে তুলনা করা হয় সে মানুষটি কেমন নাওয়াখাওয়া ভুলে জ্বলন্ত ফুটপাতে দাঁড়িয়ে তৎকালীন পূর্ব বাংলার শরণার্থীদের জন্য ভিক্ষে করছেন। এমন অনেকেই রয়েছেন। বাবার মুখে শুনেছি টালিগঞ্জে স্টুডিও পাড়ায় তখন আলোচনার বিষয়বস্তুই ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতীয় সেনার দুর্বার অভিযান পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধে মুক্তি যোদ্ধাদের মরণপণ যুদ্ধও তখন ছিল আলোচনার বিষয়।ভাবতে পারেন, কলকাতার সোনাগাছির যৌন কর্মীরাও বিনা স্বার্থেই তাদের একেক দিনের সম্বল উজাড় করে মহানায়ক উত্তম কুমারের হাতে তুলে দিয়েছেন। জয় বাংলা।