জেলা প্রশাসকের নাম ভাঙিয়ে অধিগ্রহনের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

- আপডেট সময়- ১১:১১:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৯১ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
নারায়ণগঞ্জে সম্পত্তি বিক্রির প্রক্রিয়ায় নগদ ও চেকের বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জামান হোসেন জাকি নামে এক ভুক্তভোগী।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রানকেন্দ্র উত্তর চাষাড়ার বাসিন্দা জামান ওরফে জাকি গত ২৮ আগস্ট পিবিআই নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার(এসপি) বরাবর অভিযোগটি দায়ের করেন।
তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জে থাকা সম্পত্তি বিক্রির জন্য তিনি মো. আরিফ পাঠান ও মো. মাহবুবুল আজিম পাঠানের সঙ্গে সাফ কবলা দলিলমূলে দায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে এ চুক্তিতে তিনি সৈয়দ আহাম্মদ সাঈদকেও যুক্ত করেন। ভুক্তভোগী জাকি জানান ৫ম তলার ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হওয়ায় নিজে সম্পত্তি বিক্রির কাজ করতে সক্ষম ছিলেন না বিধায়। এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত সৈয়দ আহাম্মদ সাঈদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল যাতে কোনো টাকা না নিয়ে সম্পত্তি বিক্রি করে প্রাপ্য অর্থ চারজনের মধ্যে সমানভাগে বন্টন করা হয়।
তিনি আরও জানান, রূপগঞ্জ উপজেলার পুর্বাচল কাঞ্চন ব্রীজের কাছে সারে ২৭ শতাংশ জায়গা অধিগ্রহনের তিনকোটি পয়ষট্টি লক্ষ চুরানব্বই হাজার পাচঁশত অষ্টাশি টাকা এক পয়সার মধ্যে ঘুষ দেওয়ার নাম করে ৪৩ নং উত্তর চাষাঢ়ার বাসিন্দা (ময়না ভবন) আমির হোসেনের ছেলে সৈয়দআহম্মেদ ও রুপগঞ্জ কাঞ্চন রোডস এন্ড হাইওয়ের ইঞ্জিনিয়ার সিদ্দিক হাতিয়ে নিয়েছে কোটি টাকা। টাকা আত্মসাৎকারীদের বিরূদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা ও টাকা আদায়ের জন্য পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার বরাবরে গত ২৮ আগষ্ট অভিযোগ করেছে ৪৪ নং উত্তর চাষাঢ়ার বাসিন্দা সুবেদ আলির ছেলে জামান হোসেন জাকি।
পিবিআই’র অভিযোগ থেকে জানা যায়, শাহানাজ বেগম, সাং- ৮৪/২ এইচ এম সেন রোড দক্ষিণ বন্দর কাঞ্চন ব্রীজের কাছে সাড়ে সাতাইশ শতাংশ জায়গার মালিক। শাহানাজ বেগম উক্ত জায়গা জামান হোসেন জাকি ও তার দুই পুত্র মোঃ আরিফ পাঠান ও মোঃ মাহাবুবুল আজিম পাঠানকে জায়গা বিক্রি করার জন্য প্রস্তাব দিলে জামান হোসেন বিনা টাকায় সাঈদকে র্পাটনার করে এবং বিশ্বাস করে ১নং গ্রহিতা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে দলিল নং ২৪৬৩/২৩ রেজিষ্ট্রি করে।
ধুরন্দর সাইদ তখন সুকৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে তিন পার্টনারকে বলে চেক নিতে হলে ইঞ্জিনিয়ার সিদ্দিকের মাধ্যমে ‘জেলা প্রশাসককে’ এক কোটি চার লক্ষ আটাত্তর হাজার টাকা পূর্বের র্শত মোতাবেক দিতে হবে। এসময় সাঈদের চাপে তখন বাধ্য হয়ে তিনজন আইএফআইসি ব্যাংক বন্দর শাখা হিসাব নং- ০২৩০১৭৭৭৯৮৮১১ চেকের মাধ্যমে এক কোটি পয়ষট্টি লক্ষ সাত হাজার টাকা যৌথ হিসাব থেকে নেয় এবং বলে ইঞ্জিনিয়ার সিদ্দিকের মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে(ডিসি) এক কোটি চার লক্ষ আটাত্তর হাজার দিবে বলে তিনজনের কাছ থেকে চেকের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিয়ে যায়।
কিন্তু অভিযোগে বলা হয়েছে, সৈয়দ আহাম্মদ সাঈদ ও ইঞ্জিনিয়ার সিদ্দিক, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক(ডিসি) ও সড়ক ও জনপদের কর্মকর্তার যোগসাজশে বাকী তিনজনের অনুমতি ব্যাতিত ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৫৮৮ টাকা চেক ইস্যু করেন। এছাড়াও নগদ ৫ লাখ টাকা এবং ১ কোটি ৬৫ লাখ ৭ হাজার টাকা চেকের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়েছে।তবে অভিযোগ অনুযায়ী, স্বাক্ষর ও চেক ইস্যু করার সময় অন্যান্য ৩ জনকে জানানো হয়নি এবং তথ্য গোপন রাখা হয়েছিল।
অভিযোগকারী জামান হোসেন আরও জানান, ইঞ্জিনিয়ার সিদ্দিক ও জেলা প্রশাসকের(ডিসি) মাধ্যমে চুক্তি ও লেনদেন সম্পন্ন হলেও প্রকৃতপক্ষে তাদের বৈধ প্রাপ্য অর্থের অংশ তাদের অগোচরে রাখা হয়েছে। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, প্রত্যেকের ভাগের অর্থ যথাযথভাবে বিতরণ করা হয়নি বিধায় তাদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
তিনি পিবিআই পুলিশ সুপারকে(এসপি) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাশেদকে( বিপিএম,বিপি)এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত, আত্মসাতকৃত অর্থ ফেরত এবং অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী জামান।
এ বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাশেদ( বিপিএম,বিপি) এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের মাধ্যমে বিস্তারিত পরবর্তীতে জানানো যাবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের(ডিসি) কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না, তবে সুস্পষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।