সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আবহাওয়া ও জলবায়ু, উপজেলা প্রশাসন, কুড়িগ্রাম, গণমাধ্যম, গাইবান্ধা, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, প্রেসক্রিপশন, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ, স্বাস্থ্য কথা
গাইবান্ধায় অ্যানথ্রাক্সে নারীর মৃত্যু: স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি এটা গুজব

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৬:৫৪:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫ ৬ বার পড়া হয়েছে

ফেরদৌস আলম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি।।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যানথ্রাক্সে এক নারীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লেও, স্বাস্থ্য বিভাগ স্পষ্ট করে বলেছে, এটি সম্পূর্ণ গুজব এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য। তাদের দাবি, রোজিনা বেগম (৪৫) নামের ওই নারী আগে থেকেই বহু জটিল রোগে ভুগছিলেন, এবং সেসব রোগের জটিলতাই তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ।
ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রোজিনা বেগম নিজের অসুস্থ ছাগলের বাচ্চা জবাই ও মাংস কাটাকাটির সময় একটি হাড়ের আঘাতে তার হাতের আঙুলে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সেখানে ফোসকা দেখা দেয়। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেওয়ার পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতে তার মৃত্যু হয়।
তার হাতে অ্যানথ্রাক্সের মতো ফোসকা থাকায় এবং এলাকায় অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কিছু গণমাধ্যম দ্রুত তার মৃত্যুর কারণ অ্যানথ্রাক্স বলে প্রচার করতে শুরু করে। এই প্রচারণায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
তবে গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. মো. রফিকুজ্জামান এই দাবি পুরোপুরি খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ওই নারী অ্যানথ্রাক্সের কারণে মারা গেছে—বিষয়টি সঠিক নয়, এটি বিভ্রান্তিমূলক। চামড়ায় অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ থাকলেও, সেটিতে মানুষের মৃত্যুর কোনো কারণ নেই। তার প্রেশার কমে গিয়েছিল এবং হার্টসহ অন্যান্য জটিল রোগ ছিল। মূলত সেসব কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।”
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাকও একই সুরে বলেন, “রোজিনা বেগম যখন আমাদের কাছে আসেন, তার অবস্থা অত্যন্ত জটিল ছিল। প্রেশার অনেক নিচে ছিল এবং শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। হাতে ফোসকা থাকলেও সেটাই তার মৃত্যুর কারণ নয় বলে আমরা মনে করি। নিশ্চিত হতে নমুনা পরীক্ষা করা প্রয়োজন।”
এদিকে, গত এক সপ্তাহে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই প্রাদুর্ভাবের সূচনা হয় গত ২৭ সেপ্টেম্বর, যখন বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রামে মাহাবুর রহমানের একটি অসুস্থ গরু জবাই করে তার মাংস কমপক্ষে ১১ জনের মধ্যে বণ্টন করা হয়। ওই সময় মাংস কাটায় যুক্ত ব্যক্তিরা আক্রান্ত হন।
স্থানীয় প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ ইতিমধ্যে অ্যানথ্রাক্স মোকাবিলায় টিকাদান কার্যক্রম, মাইকিং ও সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ শুরু করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস আক্রান্ত পশু জবাই না করতে সকলকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জনগণের কাছে আবেদন করা হয়েছে, কোনো ধরনের গুজব বা অপ্রমাণিত খবর ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে এবং অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি আতঙ্কিত না হওয়ার।
নিউজটি শেয়ার করুন..
ট্যাগস:-

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ