ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক আর নেই.!

- আপডেট সময়- ০৬:২৬:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫ ৩ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন নিউজ ডেস্ক।।
ভাষাসৈনিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক আর নেই। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত ১০টা ১২ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মোহন রায়হান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মোহন রায়হান জানান, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকা আহমদ রফিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেষ দিকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আগামীকাল সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কবিতা পরিষদের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে।
আহমদ রফিক দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। কিডনির সমস্যা ছাড়াও তিনি একাধিক মাইল্ড স্ট্রোকের শিকার হন। চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তাকে ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৯ সেপ্টেম্বর বারডেমে স্থানান্তর করা হয়। তিনি তখন থেকেই সংজ্ঞাহীন ছিলেন এবং অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন।
আহমদ রফিকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। একাধারে কবি, গবেষক, প্রাবন্ধিক, ভাষাসংগ্রামী ও রবীন্দ্রচিন্তাবিদ হিসেবে তিনি দুই বাংলাতেই সমাদৃত ছিলেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকা এই মনীষী একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাঁকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধিতে ভূষিত করে।
তার রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি, সমাজ ভাবনা, বহুমাত্রিক চিন্তাধারায় নির্মিত ছিল তাঁর লেখনী।
আহমদ রফিক নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের একটি ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন। ২০০৬ সালে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি নিঃসন্তান ও একাকী জীবনযাপন করতেন। তার একমাত্র সঙ্গী ছিল বই, নিজের লেখা ও সংগ্রহ করা অগণিত বইপত্র।
২০১৯ সাল থেকে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে থাকে, ২০২৩ সাল নাগাদ প্রায় দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন। ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যাওয়ার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।