সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আন্তর্জাতিক, আবহাওয়া ও জলবায়ু, উপজেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, টেকনাফ, দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক), দেশজুড়ে, পূর্বাভাস, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ
টেকনাফ সীমান্তে নতুন বিতর্ক: ওসির বিরুদ্ধে ঘুষসহ অভিযানের ইয়াবা গায়েবের অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৪:৫৮:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ৩২ বার পড়া হয়েছে

ফরহাদ রহমান,
টেকনাফ(কক্সবাজার)প্রতিনিধি।।
কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ড ঘিরে আবারও বিতর্কে মুখর সীমান্ত এলাকা। একদিকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নূরের বিরুদ্ধে ইয়াবা কারবারির কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, অন্যদিকে সাম্প্রতিক এক অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা গায়েব হয়ে যাওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়েছে এলাকায়।
ঘুষের বিনিময়ে ‘এসি গাড়ি’
স্থানীয় সূত্র ও একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, আলোচিত মাদক কারবারি জুবাইরের স্ত্রী ফাইজাকে আদালতে হাজির করতে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে বিশেষ এসি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। শনিবার দুপুরে তাকে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার আদালতে নেওয়ার সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে একটি নোহা গাড়িতে দেখা যায়।
অভিযোগ রয়েছে—ওসি আবু জায়েদ মো. নূরের নির্দেশেই ওই বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। তবে এ অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন তিনি।
“এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন,” বলেন ওসি আবু জায়েদ। “কোনো টাকা লেনদেন হয়নি।”
তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—একজন মাদক মামলার আসামিকে কেন সাধারণ প্রিজন ভ্যানে না নিয়ে বিশেষ গাড়িতে পাঠানো হলো?
বিজিবির অভিযানে বিপুল ইয়াবা উদ্ধার
গত বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফের জুবাইরের বাড়িতে টানা আট ঘণ্টার অভিযান চালায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় ফাইজাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার ঘর থেকে ১৯ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা, ১৩০ গ্রাম ইয়াবা পাউডার ও ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পরে ফাইজাসহ আটক অন্য অভিযুক্তকে থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি।
ওসি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই থানার কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে বলে দাবি স্থানীয়দের। সম্প্রতি এক অভিযানে বড় ইয়াবা চালান গায়েব হওয়ার ঘটনাতেও তার নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে টেকনাফে।
দুই লাখ ইয়াবা থেকে মিলল মাত্র ৫০ হাজার
টেকনাফের সাম্প্রতিক এক অভিযানে ইয়াবার পরিমাণ নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন রহস্য। স্থানীয়দের দাবি, অভিযানে প্রায় দুই লাখ ইয়াবা উদ্ধার হলেও পুলিশের সিজার লিস্টে দেখানো হয়েছে মাত্র ৫০ হাজার পিস।
অভিযোগের সূত্রধর একটি অডিও ক্লিপে স্থানীয় দুজন ব্যবসায়ীকে বলতে শোনা যায়, “সব ইয়াবা গাড়িতে তোলা হলো, পরে শুধু ৫০ হাজার দেখাল।”
ওসি জায়েদ নূর অবশ্য এই অভিযোগও অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “অভিযানে যত ইয়াবা পাওয়া গেছে, সবই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়া ভিডিও করা আছে।”
তবে সেই ভিডিও এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ।
রহস্য ঘনীভূত সীমান্ত
মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চল থেকে শুরু করে টেকনাফের উপকূলজুড়ে দীর্ঘদিন ধরেই ইয়াবা পাচার চলছে। প্রতিদিনই ধরা পড়ছে ছোট-বড় চালান, আবার অনেক চালান অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার অভিযোগও মিলছে।
স্থানীয়রা বলছেন, কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে এ ব্যবসা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
প্রশ্ন রয়ে গেছে
কেন অভিযানের ভিডিও এখনো প্রকাশ করা হয়নি?
একজন মাদক আসামিকে আদালতে নিতে এসি গাড়ির প্রয়োজন পড়ল কেন?
থানার অভ্যন্তরে কি ঘুষের বিনিময়ে সুবিধা পাচ্ছে কেউ?
এসব প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা। তবে টেকনাফের সীমান্ত আবারও দেখাচ্ছে—মাদক ও ক্ষমতার ছায়ায় ঢাকা এই এলাকায় সত্য-মিথ্যা আলাদা করা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।
নিউজটি শেয়ার করুন..
ট্যাগস:-

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ