সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, উপজেলা প্রশাসন, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ, রংপুর
গাইবান্ধায় দুর্গাপূজার প্রতিমায় দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগ

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৫:৩০:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৪২ বার পড়া হয়েছে

ফেরদৌস আলম, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি উপেক্ষা করে একদল দুর্বৃত্ত প্রতিমায় আগুন দিয়েছে। এ ঘটনায় তৈরি হওয়া দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের প্রতিমাসহ সকল পূজার সরঞ্জাম ভস্মীভূত হয়ে যায়।
সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের হামিন্দপুর গ্রামের কামারপাড়া সর্বজনীন দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে এ হামলা চালানো হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তাদের তৎপরতা শুরু করার আগেই মূল প্রতিমাগুলো সম্পূর্ণরূপে পুড়ে যায়।
ঘটনার পেছনে মন্দির পরিচালনা নিয়ে দীর্ঘদিনের একটি অন্তর্দ্বন্দ্বকে দায়ী করা হচ্ছে। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মন্দিরের বর্তমান কমিটি ও সাবেক কমিটির সদস্যদের মধ্যে বিরোধের জেরে দুই পক্ষ আলাদাভাবে পূজার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই বিরোধ তুঙ্গে ওঠে যখন গত শনিবার মন্দির কমিটির বর্তমান ক্যাশিয়ার কার্তিক চন্দ্র সরকার মন্দিরের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এরপরই সাবেক কমিটির পক্ষ থেকে মন্দিরের দক্ষিণ পাশের একটি খোলা জায়গায় অস্থায়ীভাবে ছাপড়া টাঙিয়ে পূজার প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করা হয়। গত পাঁচ থেকে ছয় দিন ধরে বাঁশ, কাঠ ও খড়ের কাজ দিয়ে প্রতিমাগুলোর কাঠামো তৈরি করা হচ্ছিল। কিন্তু রাতের অন্ধকারে অজ্ঞাত পরিচয় দুর্বৃত্তরা সেখানে অগ্নিসংযোগ করে চলে যায়।
মন্দির কমিটির সাবেক সভাপতি অনুকুল চন্দ্র রনু অভিযোগ করেন যে, এই ঘটনাটি পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে এবং এতে বর্তমান ক্যাশিয়ার কার্তিক চন্দ্র সরকারের সম্পৃক্ততা রয়েছে। অন্যদিকে, বর্তমান কমিটির সভাপতি কুন্তল চন্দ্র দাস বলেন, তাদের পক্ষ থেকে পূজার প্রতিমা কার্তিক চন্দ্রের বাড়িতেই তৈরি হচ্ছে। তিনি জানান, কে বা কারা এই অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দীপ্তি রানী জানান, এই ঘটনায় পুরো এলাকার মানুষের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার তদন্তে ইতোমধ্যে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তাজউদ্দীন খন্দকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, রাতের অন্ধকারে এই হামলা চালানো হয়েছে এবং গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এনিয়ে উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে বিরোধ নিষ্পত্তিরও চেষ্টা চলছে।
সাদুল্লাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাত চন্দ্র অধিকারী বলেন, মন্দির নিয়ে হওয়া এই বিরোধের বিষয়টি আগেও থানায় আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি দ্রুত উভয় পক্ষকে একত্র করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।