সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আবহাওয়া ও জলবায়ু, ইসলাম ও জীবন, উপজেলা প্রশাসন, কুড়িগ্রাম, গণমাধ্যম, গাইবান্ধা, জাতীয়, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, পূর্বাভাস, বাংলাদেশ, রংপুর
তিস্তার নামেই সেতু চায় স্থানীয়রা, ‘মাওলানা ভাসানী’ নামে আপত্তি

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৪:২০:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫ ৩৭ বার পড়া হয়েছে

ফেরদৌস আলম, গাইবান্ধা প্রতিনিধি।।
গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার সীমান্তে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম সেতুটির নামকরণ নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক। ১,৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে চললেও সরকারি নামকরণের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর সরকারিভাবে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘মওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ দাবি করছেন, নদীর নামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সেতুটির নাম ‘তিস্তা সেতু’ রাখা হোক। তাদের যুক্তি, এই নামকরণে স্থানীয় ইতিহাস ও ভৌগোলিক পরিচয় ফুটে উঠবে।
তিস্তা নদী এই অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে নদী পারাপারে খেয়ার ওপর নির্ভরশীল মানুষের জন্য এই সেতু যাতায়াতের সুবিধা যেমন বাড়াবে, তেমনি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও গতি সঞ্চার করবে। স্থানীয় কৃষক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ সকল পেশার মানুষ তাদের এই দাবিতে একমত।
তিস্তা পাড়ের কৃষক আব্দুল হাকিম বলেন, “তিস্তা আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত। সেতুর নামও তিস্তার নামে হোক।”
নদীপাড়ের গৃহিণী রওশন আরা বেগম বলেন, “রাজনৈতিক নামকরণ না করে নদীর নামেই পরিচিতি হোক এই সেতুটি।”
তিস্তা সেতু দর্শনার্থীদের নদীপাড়ে পৌঁছে দিতে সহায়তাকারী অটোরিকশা চালক এমদাদুল হক বলেন, “তিস্তা সেতু নামে সহজে মনে রাখবে সবাই, এতে এলাকার পরিচয়ও ফুটে উঠবে।”
এক স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা অনেক দিন আগে থেকেই হরিপুর তিস্তা সেতু নাম শুনে আসছি, আর এ নামটাই আমাদের ভালো লাগে।”
স্থানীয় সরকার বিভাগ গত ১০ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটির নাম ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, জনগণের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হলে নাম পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, “সরকারি প্রজ্ঞাপন ইস্যু হয়েছে, তবে স্থানীয়দের দাবি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা যেতে পারে।”
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল চৌধুরী বলেন, “নামকরণ সরকারের সিদ্ধান্ত, তবে স্থানীয়দের মতামত গুরুত্বপূর্ণ।”
৯২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু চালু হলে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার কমবে। যাতায়াত সময় ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সাশ্রয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে উত্তরাঞ্চলের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
স্থানীয়দের একাংশ দীর্ঘদিন ধরে ‘শরিতুল্যাহ মাস্টার তিস্তা সেতু’ নামে সেতুটির নামকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন। শরিতুল্যাহ মাস্টার তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করে সেতুর জন্য আন্দোলন করেছিলেন বলে জানা যায়।
নামকরণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্তৃপক্ষের হাতে ন্যস্ত থাকলেও, স্থানীয়দের দাবি জোরালো হলে তা পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনা রয়েছে। উদ্বোধনের আগে এই ইস্যুতে আরও আলোচনা হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
নিউজটি শেয়ার করুন..
ট্যাগস:-

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ