সিলেট থেকে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী। ট্রেনে মায়ের সঙ্গে ভ্রমণ করার সময় ভুল করে কুলাউড়া জংশন স্টেশনে নেমে মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সে। পরে এক প্রাইভেটকার চালক তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে অপহরণ ও ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ অভিযুক্ত চালক আক্তার আলীকে (২৮) গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত আক্তার আলীর বাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কায়স্থ গ্রামে। তিনি পেশায় প্রাইভেটকার চালক এবং প্রতিদিন কুলাউড়া রেলস্টেশন থেকে সিলেটে যাত্রী পরিবহন করতেন।
ভুক্তভোগী কিশোরী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুন কিশোরী তার অসুস্থ এক স্বজনকে দেখতে মায়ের সঙ্গে সিলেট হাসপাতালে গিয়েছিল। চিকিৎসা শেষে তারা সিলেট থেকে ট্রেনে করে নিজ বাড়িতে ফিরছিল। সিলেট থেকে ভানুগাছ স্টেশন পর্যন্ত আসনবিহীন টিকিট কাটেন তারা। ট্রেনের বগিতে প্রচণ্ড ভিড় থাকায় কিশোরী ভুল করে কুলাউড়া জংশন স্টেশনে নেমে পড়ে এবং মাকে খুঁজে পায় না। ততক্ষণে ট্রেনটি স্টেশন ছেড়ে চলে যায়।
এরপর কিশোরী যখন পরবর্তী ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিল, তখন প্রাইভেটকার চালক আক্তার আলী তার সঙ্গে পরিচিত হন। আক্তার তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। সরল বিশ্বাসে কিশোরী তার গাড়িতে ওঠে। কিন্তু আক্তার তাকে বাড়িতে না নিয়ে সিলেটের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে তিনি নিজেকে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখান এবং একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, নিখোঁজ হওয়ার সময় কিশোরীর কাছে একটি মোবাইল ফোন ছিল। আক্তার সিলেটে নিয়ে তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। এরপর তিনি ওই মোবাইল ফোনে থাকা কিশোরীর এক আত্মীয়ের সঙ্গে ইমোতে যোগাযোগ করেন। নিজেকে সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে তিনি জানান, কিশোরী তার হেফাজতে আছে এবং তাকে ফেরত পেতে ২০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠাতে বলেন।
পরে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় গত সোমবার (৭ জুলাই) রাতে সিলেট নগরের কদমতলী এলাকা থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয় এবং একই সঙ্গে অভিযুক্ত আক্তার আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কুলাউড়া রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দিপক দেওয়ান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আক্তার আলী তার অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হয়েছে। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কিশোরীকে মৌলভীবাজারের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।