গোপালগঞ্জের ঘটনা নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলো সেনাসদর

- আপডেট সময়- ০১:২৬:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫ ৬৬ বার পড়া হয়েছে

গোপালগঞ্জে কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি সেনাবাহিনী- সেনাসদর
অনলাইন নিউজ ডেস্ক।।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সেনাবাহিনী কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি বলে জানিয়েছেন মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এনসিপি নেতাদের জীবননাশের হুমকি থাকায় সেনাবাহিনী কেবল তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে মাত্র। এখানে কোনো দলকে বিশেষভাবে সহায়তা করার প্রশ্নই ওঠে না।
তিনি বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করলে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারত। জীবন রক্ষাই প্রধান বিবেচনায় নিয়েছি, কোনো রাজনৈতিক পক্ষ নয়।’
বৃহস্পতিবার(৩১ জুলাই) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন কর্নেল শফিকুল ইসলাম। সেখানে সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পার্বত্য অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং গোপালগঞ্জে সংঘর্ষসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কোনো দলের প্রতি আলাদা নজরে দেখি না। দায়িত্ব পালনে আমাদের কাছে সবাই সমান। গোপালগঞ্জে যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা থেকে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতেই সেনাবাহিনী সক্রিয়ভাবে ভূমিকা পালন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওখানে শুধু ইট-পাটকেলই নয়, ককটেলও ছোড়া হয়েছিল। যখন প্রাণনাশের হুমকি থাকে, তখন আমরা বল প্রয়োগ করি। তবে প্রাণঘাতী কোনো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি।’
গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের সমাবেশে বারবার হামলা এবং তা রোধে সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সমাবেশের অনুমতি স্থানীয় প্রশাসনের বিষয়। সেনাবাহিনীর কাছে সে ধরনের কোনো তথ্য ছিল না। যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়, তখনই আমরা হস্তক্ষেপ করি।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত ১৬ জুলাই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা গোপালগঞ্জে গেলে তাদের কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভর ককটেল বিস্ফোরণ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে যুবলীগ সদস্যসহ চারজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজন মারা যান।
পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘কুকি-চিন’ ও ‘আরাকান আর্মি’র অস্ত্র কেনাবেচা এবং সন্ত্রাসী তৎপরতার খবরের বিষয়ে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেনাবাহিনী পার্বত্য এলাকায় প্রোটেকশন দিচ্ছে এবং আভিযানিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যদি কোনো এলাকায় ক্যাম্পের প্রয়োজন হয়, আমরা সেখানে টেম্পোরারি অপারেটিং বেজ স্থাপন করি।’
এক মেজরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কর্নেল শফিকুল বলেন, ‘আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত মাদক ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ৫ হাজার ৫৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। এসব অপরাধ দমনে সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্মিলিতভাবে কাজ করলে আরও ভালো ফল পাওয়া যাবে। আমরা অভিযানে আছি এবং থাকব।