ঢাকা ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক আর নেই.!  গাইবান্ধায় দুই শতাধিক শ্রমিকদলের নেতাকর্মীর জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান নারায়ণগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জন ঘাটের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষনে ডিসি-এসপি সিদ্ধিরগঞ্জে সাত কেজি গাঁজাসহ এক কারবারি গ্রেপ্তার ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাক চালক নিহত  মহেশখালীতে অস্ত্র-গোলাবারুদসহ তিন সন্ত্রাসী আটক টেকনাফে গহীন পাহাড়ে নারী ও শিশুসহ ২১ জন উদ্ধার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুতে অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় ২ট্রাক চালক নিহত এনসিপি নেতাকর্মী কর্তৃক সাংবাদিক লাঞ্ছনা, বয়কট সংবাদ সম্মেলন আজ বিজয়া দশমী, দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব উত্তাল সাগর, দুপুরের মধ্যে ৮ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস কক্সবাজারে ১৬ হাজার ৪০০ ইয়াবাসহ তিন তৃতীয় লিঙ্গের হিজরা আটক আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশকে কামড়ে পালানো সেই আসামি র‍্যাবের জালে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট ১৯ কি: মি: মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট না’গঞ্জে র‍্যাবের হাতে আটক আসামীকে ছিনিয়ে নিল সহযোগীরা, র‍্যাব সদস্যসহ আহত-৪ শারদীয় দুর্গাপূজার মহানবমী আজ মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে যে নিয়মের কথা জানালেন পুলিশ প্রধান আমরা কোনো ধরণের দলীয় পদ ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করতে চাই না: মাসুদুজ্জামান টেকনাফে ২৪ হাজার ইয়াবা ও সিএনজিসহ পাচারকারী আটক  আ’লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা যেকোনো সময় তুলে নেওয়া হতে পারে আজ শারদীয় দুর্গাপুজার মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা টিসিবির পণ্য তালিকায় নতুন যুক্ত হচ্ছে চা-লবণ-ডিটারজেন্ট ও সাবান রাজধানীতে অনাবিল বাসে নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহানি, চালক-হেলপার আটক উখিয়ায় সাংবাদিক তানভীর শাহরিয়ার গ্রেপ্তার, সংবাদকর্মীদের কণ্ঠরোধের অভিযোগ পর্যটনবান্ধব নগরী গড়তে সবার ঐক্য চাই : কক্সবাজারের নতুন জেলা প্রশাসক গাইবান্ধার স্বাস্থ্যসেবায় অন্ধকার: ফুলছড়িতে সিজার বন্ধ, জনবল সংকট চরমে না’গঞ্জের আরএস কম্পোজিটে বিশ্বমানের কমপ্লায়েন্সের ভূয়সী প্রশংসা করেন শিল্প পুলিশ প্রধান প্রতিহিংসা ও বিভক্তি বর্জন করে সুশৃঙ্খল রাজনীতি করতে মাসুদুজ্জামানের আহবান দুর্গোৎসব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ: বন্দরে জেলা প্রশাসক শীর্ষস্থানীয় ব্রান্ড আড়ং’র শপিং ব্যাগের মূল্য নেয়া বন্ধে লিগ্যাল নোটিশ না’গঞ্জে ওভারপাস থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যাওয়া ট্রাকের চাপায় রিকশা চালকের মৃত্যু আড়াইহাজারের সাবেক এমপি বাবুর অনুসারী ইউপি সদস্য গণপিটুনিতে নিহত নরসিংদীতে হাসপাতালে ভাংচুর ডাক্তার-নার্স ও কর্মচারীদের লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন থমথমে খাগড়াছড়ি: অনিদিৃষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা, ৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন আজ শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষষ্ঠী সম্প্রীতির মেলবন্ধনকে অটুট রাখতে ২২৪টি পূজামণ্ডপে অনুদান: ডিসি  আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস আজ বোধন’র মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা কক্সবাজারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরীকে বিদায় সংবর্ধনা না’গঞ্জে কিশোরী অপহরণে মূল হোতা আট বছর পর পিবিআই’র জালে উৎসবমুখর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধনে দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে: জেলা প্রশাসক উখিয়ার তুমব্রু সীমান্তে ৮০ হাজার ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা যুবক আটক দুর্গোৎসব উপলক্ষে সারাদেশে র‍্যাবের ২৮১ টহল দল মোতায়েন দুর্গোৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে ২ প্লাটুন র‍্যাব সদস্য নিয়োজিত থাকবে: সিইও ষড়যন্ত্র হলে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জবাব দেবো, বিভক্ত হবো না;  মাসুদুজ্জামান আড়াইহাজারের নান্দনিক ইকোপার্ক প্রকৃতির সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিনত হবে শ্যালিকার সঙ্গে পরকিয়ার জেরে স্ত্রীকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা দুর্গোৎসব উপলক্ষে ফতুল্লার পুজামন্ডপসহ প্রতিমা বিসর্জন ঘাট পরিদর্শনে ইউএনও নারায়ণগঞ্জে শারদীয় দুর্গোৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে মণ্ডপ পরিদর্শনে র‍্যাব-১১ টেকনাফে মানব পাচারকারী আটক, তিন ভুক্তভোগী উদ্ধার না’গঞ্জে এবারের দুর্গোৎসবে ৭০টি পূজামণ্ডপে আর্থিক অনুদান দিবেন মাসুদুজ্জামান না’গঞ্জে ফের মাদকবিরোধী ব্লক রেইড, শীর্ষ কারবারি আলম চানসহ আটক-২৪ টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ৩৯ হাজার ২’শ ইয়াবা উদ্ধার গাইবান্ধায় সাঁওতাল শিশুদের স্কুল ও মাঠ দখলের চেষ্টা: তীব্র প্রতিবাদ গাইবান্ধায় স্কুল শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ দখল করে ধান ও মাছের চাষ ভাঙ্গায় ২ ইউনিয়নকে পূর্নবহালের দাবিতে মানববন্ধন, নিরীহ জনগণকে হয়রানি না করার আহ্বান শ্রীমঙ্গলে ৯দিন ব্যাপী নবদুর্গা পূজা শুরু কমলগঞ্জে দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  নারায়ণগঞ্জে টাইগার সিমেন্ট কারখানায় ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট শ্রীমঙ্গলে শেভরনে ভয়াবহ আগুনের লেলিহান শিখা নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত সন্ত্রাসী একাধিক মামলার আসামী আপেল গ্রেপ্তার  জলাবদ্ধতা নিরসনে ইউএনও তাসলিমা শিরিনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস না’গঞ্জে ডিপিডিসি ভবনে শ্রমিক ছব্দবেশে ডাকাতি ঘটনায় ৯ সদস র‍্যাবের জালে শ্রীমঙ্গলে ২৫ কেজি ওজনের ১৪ফুট অজগর সাপ উদ্ধার  গাইবান্ধায় একদিনে দুই যুবকের রহস্যজনক মৃ*ত্যু রায়পুরায় রেললাইনের পাশ থেকে অজ্ঞাত কিশোরের লাশ উদ্ধার সংসদীয় আসন বিচ্ছিন্নের প্রতিবাদে ভাঙ্গায় শান্তিপূর্ন মানববন্ধন অনুষ্ঠিত  নারায়ণগঞ্জে ডিপিডিসির নির্মানাধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ডাকাতির ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা না’গঞ্জে মিশনপাড়া পঞ্চায়েত পরিষদ কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন গাইবান্ধা কারাগারে আ’লীগ নেতার মৃত্যু, পরিবারের দাবি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড টেকনাফে যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ তিন মানব পাচারকারী আটক, উদ্ধার-৮৪ নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাসুদুজ্জামানের বিএনপিতে আনুষ্ঠানিক যোগদান না’গঞ্জে ইন্টার্নি ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ: চিকিৎসক’কে মারধর কমলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানান অসংগতি; জেলা প্রশাসক  আসন্ন দুর্গাপূজা উদযাপনে নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নারায়ণগঞ্জে নির্বাচনী সরঞ্জামসহ বিপুলসংখ্যক এনআইডি কার্ড উদ্ধার রাষ্ট্রদূত হলেন সেনাবাহিনীর দুই কর্মকর্তা ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ মুকুট বিজয়ী কে এই তানজিয়া মিথিলা? গাইবান্ধায় দেশের সর্বোচ্চ ও বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম শিবমূর্তি দূর্গোৎসবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী অফিসারগন পরিদর্শনে থাকবেন পুলিশের ৯ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বদলি কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানার প্রথম নারী ওসি হিসেবে ফরিদা ইয়াসমিন’র যোগদান সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি এবার জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস উর রহমানকে সরিয়ে দেওয়া হলো চট্টগ্রামসহ ৩ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক শেখ হাসিনা ৫ আগষ্ট পদত্যাগ করেননি : দাবি স্টেট ডিফেন্সের জরাজীর্ণ সাঁকো, ২-যুগেও রাস্তা নির্মান হয়নি বৈদ্যের বাজার জেলে পল্লীতে লাগামহীন সবজির বাজার, বেশির ভাগ সবজিই ৮০ টাকার উপরে বিশ্বমানের ফুড রেস্টুরেন্ট ‘রেড চপস্টিক’-কে’স ক্যাফে এখন নারায়ণগঞ্জে ডিজিটাল সাংবাদিকতার দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দিল মিডিয়া ট্রেনিং ইনস্টিটিউট গাইবান্ধায় ৫’শ ৮৭ মণ্ডপে দুর্গোৎসবের আগমনী বার্তা, সর্বাত্মক প্রস্তুতি সম্পন্ন  গাইবান্ধায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব: মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন না’গঞ্জে উদ্ধারকৃত ২৩ একর জমিতে তৈরি করা হবে দৃষ্টিনন্দন ইকোপার্ক: ডিসি সোনারগাঁয়ে ১৫’শ ইয়াবাসহ এক মাদক কারবারি গ্রেপ্তার মিয়ানমারগামী বোটে বিপুল খাদ্যপণ্য পাচারকালে আটক-১০ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে এসি বিস্ফোরণ; একই পরিবারের দগ্ধ-৪ হতদরিদ্র মানুষের পাশে মানবতার ফেরিওয়ালা কাজী রুবায়েত হাসান।  বিএনপি নেতা এ্যাড. টিপুর পথশিশুদের নিয়ে ব্যতিক্রমী আয়োজন নারায়ণগঞ্জে সৎ বাবা কর্তৃক কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ: আটক-২ সোনারগাঁয়ে তুচ্ছ ঘটনায় ভাইয়ের ‘দাঁ’ এর কোপে ভাই খু*ন

সাতক্ষীরায় ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধিতে: জনমনে কষ্ট ব্যবসায়িদের বাঁচার লড়াই

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০১:৪৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫ ২১০ বার পড়া হয়েছে

ইব্রাহীম হোসেন,সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি।।

গত ১লা মে ২০২৫ থেকে সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী সরকার নির্ধারিত মূল্যের উপর ৫ শতাংশ কম দামে ঔষধ বিক্রি শুরু হয়েছে। যা ইতিপূর্বে ১০ শতাংশ কম দামে বিক্রি হচ্ছিল। হঠাৎ করে সাতক্ষীরার জনগণের কোন কারণ ছাড়াই এই দামে ঔষধ ক্রয় করার জন্য সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ওযুধের এই দাম‌ বৃদ্ধির ব্যাপারে বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ দ্বীনি আলী জানান, বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখা ইতিপূর্বে বিগত ফ্যাসিস্টদের দখলে ছিল, অর্থনৈতিকভাবে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধে সাতক্ষীরা জেলা ভরে গেছিল। সাতক্ষীরা জেলার জনগণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী সকল ফার্মেসিতে ফিজিশিয়ান স্যাম্পল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রয় বন্ধ, লাইসেন্স বিহীন দোকান বন্ধ করা, নির্ধারিত তাপমাত্রায় ঔষধ সংরক্ষণ করা, প্রতিটি দোকানে ফার্মাসিস্ট রাখা, ব্রোকার বা ফরিয়াদের কাছ থেকে ঔষধ ক্রয় না করে সরাসরি কোম্পানির কাছ থেকে ওষুধ ক্রয় করা এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যে থেকে জনস্বার্থে পাঁচ শতাংশ কম দামে ওষুধ বিক্রয় করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যা ১মে ২০২৫ তারিখ থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে ভেজাল ও নিম্নমানের নকল ওষুধ ব্যবসায়ীদের অপপ্রচারে না চালিয়ে সরকারি সকল নীতিমালার আলোকে সঠিক নিয়মে ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য সমিতির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

এটি সাধারণ দৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধি মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে জনস্বার্থে কম নেয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমান আদালত, ভোক্তা অধিকার সহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ সরকার নির্ধারিত মূল্যের পণ্য বিক্রির ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। দেশের অধিকাংশ জেলায় সরকার নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রি করা হয়। কোন ছাড় দেয়া হচ্ছে না। সেখানে জনস্বার্থ ও ব্যবসায়ীদের উভয়দিক বিবেচনা করে ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম জীবন জীবিকা নির্বাহ এবং ওষুধের ব্যবসাটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরী। অন্যথায় সাতক্ষীরায় ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করা দুর্বিষহ হয়ে পড়বে।

এ ব্যাপারে তিনি জেলা সকল ওষুধের ব্যবসায়ী এবং ওষুধ ক্রেতাদের কাছে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছেন।

এদিকে সাতক্ষীরার মানুষের জন্য এটি অত্যন্ত কষ্টের ব্যাপার বলে সমিতির সিদ্ধান্তে কোন কারণ ছাড়াই এই দামে ঔষধ বিক্রি শুরু করার জন্য বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের মতামত পরিলক্ষিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য ঔষধ ব্যবসায়ীদের সমিতির নিকট পুনরায় পূর্বের মূল্যে ঔষধ বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে।

শহরের রফিকুল ইসলাম নামের (৬৮) একজন রোগী জানান তিনি হাই ডায়াবেটিসের রোগী। নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয় এবং ওষুধ খেতে হয়। পেশাই তিনি ছিলেন একজন রং মিস্ত্রি। বর্তমানে অক্ষম শরীরে কোন কাজ করতে পারেন না। একমাত্র ছেলে ছোট্ট একটি মুদি দোকানদার। দ্রব্যমূল্যের বাজারে ছেলেটির একার আয়ে সংসারের ব্যায়ভার বহন করা এবং ওষুধ ক্রাই করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

রওশন আলী নামের (৭৫) একজন জানান তিনি হাই প্রেসারের রোগী। নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। ছেলে ভাড়ার পিকআপ চালান। এ কারণে তিনি নিয়মিত ওষুধ খেতে পারেন না। অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমান দাম বৃদ্ধিতে আরো কষ্টকর হয়ে গেছে। আগে যে ওষুধ ৯০ টাকায় কিনতেন এখন সেটি ৯৫ টাকা কিনতে হচ্ছে।

অপর দিকে শহরের একজন ওষুধ ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি উচ্চশিক্ষিত, চাকরি না পেয়ে আত্ম কর্মসংস্থানের জন্য তিনি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের সামনে একটি ওষুধের দোকান করেন। ২০ লক্ষ টাকার পুঁজি নিয়ে শুরু করা ব্যবসাটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে আসলে তিনি সেখান থেকে ব্যবসা বন্ধ করে মাত্র ২ লক্ষ টাকা নিয়ে গ্রামের ভিতরে ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে ওষুধ ব্যবসার পাশাপাশি গ্রাম্য চিকিৎসক হিসেবে কাজ করে কোনরকম জীবিকা নির্বাহ করছে। তার অনেক ওষুধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে বছরের পর বছর পড়ে আছে। দুই একটি কোম্পানি ছাড়া অধিকাংশ কোম্পানির প্রতিনিধিরা মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ গুলো যথা সময়ে ফেরত নেননি। কিছু মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ নিয়ে গেলেও তার পরিবর্তে অন্য ঔষধ প্রদান বা ইনভয়েচ এ এডজাস্ট করেনি। আবার অনেক কোম্পানি অর্ডার নেয়ার সময় একজন প্রতিনিধি ওই কোম্পানির সমস্ত গ্রুপের ওষুধ অর্ডার নেন এবং একসাথে এক কাটুনে সরবরাহ করেন। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে এটি অন্য গ্রুপের, ওটি অন্য গ্রুপের, এটা আমার গ্রুপের না এমন তালবাহানা করে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ গুলো উঠায় নিয়ে যায় না। পাতা কাটা ওষুধ, বক্সের ত্রুটি, কোম্পানির পলিসি ইত্যাদি বলে বহুত মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পরিবর্তন করতে উঠায় নিয়ে যায় না। তিনি আরো জানান বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন সময় কিছু বিশেষ ওষুধের জন্য ক্যাম্পেইন করে ডাক্তারদেরকে দিয়ে প্রেসক্রিপশন করান। সাময়িক সময় সে ঔষধ গুলো প্রচুর বিক্রি হয়। যার ফলে ফার্মেসি গুলো ঐ ওষুধ রাখতে বাধ্য হয়। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, একটি প্রেসক্রিপশনে একজন কাস্টমারের যে কয়টি ওষুধ থাকে তার মধ্যে একটি ওষুধ না পাইলে ওই দোকান থেকে তিনি অন্য দোকানে চলে যান। ক্যাম্পেইন শেষ হলে ডাক্তারেরা ঐ ওষুধ আর লেখেন না। ফলে ঐ ওষুধগুলো বছরের পর বছর পরে থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। মূলধনের বড় একটি অংশ বছরের পর বছর বসে থাকে।

এসব কারণে তিনি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তার মত এমন ক্ষতিগ্রস্ত ঔষধ ব্যবসায়ীর অনেক আছে বলে তিনি জানান।

পারুলিয়া এলাকার একজন ঔষধ ব্যবসায়ী নাহিদ হাসান জানান, অত্র এলাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দেশীয় ওষুধের পাশাপাশি ইন্ডিয়ান ওষুধ বিক্রি করে। দেশী ওষুধ ক্রয় মূল্য থেকেও কম দামে বিক্রি করে ইন্ডিয়ান ওষুধ দিগুন থেকে তিন গুণ দামে বিক্রি করেন। এটিতে তারা লাভবান হলেও পার্শ্ববর্তী দোকানগুলোতে টিকে থাকার জন্য দেশী ওষুধ বিক্রয় করতে ব্যবসায়ীদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হচ্ছে। যে কারণে ১০ থেকে ১২ শতাংশ ছাড়েও তারা ওষুধ বিক্রি করে এসেছে। দেশের ভালো মানের ওষুধ কোম্পানিগুলো সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়ে দোকানগুলোতে ওষুধ সরবরাহ করে থাকে। ১০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ বিক্রয় করলে ৫ শতাংশ লাভ থাকে। যে লভ্যাংশ দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার। সে কারণে নিম্নমানের ওষুধ বিক্রয় করতে অনেক ব্যবসায়ী বাধ্য হয়েছে।

আর যারা অসৎ উপায় অবলম্বন করিনি এখন তারা মুলধন হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

আলিপুর এলাকার একজন ওষুধ ব্যবসায় আক্তারুল ইসলাম জানান, এলাকার মুদিখানার বিভিন্ন দোকানে কোন প্রকার লাইসেন্স ছাড়াই নিম্নমানের ঔষধ বিক্রয় হচ্ছে। এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীরা দোকানে দোকানে গিয়ে ফেরি করে ওইসব নিম্নমানের কোম্পানির ঔষধ মুদিখানার দোকানদারদের কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করেন। কোন প্রকার প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স ছাড়াই মুদিখানার দোকানদারদের কাছ থেকে এলাকার সহজ সরল মানুষ নিম্নমানের ওই ধরনের সব ওষুধ খেয়ে প্রতারিত হচ্ছে। অপরদিকে প্রকৃত ঔষধ ব্যবসায়ীদের টিকে থাকার জন্য বাধ্য হয়ে নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি করতে হচ্ছে।

নওয়াপাড়া এলাকার ঔষধ ব্যবসায়ী উচ্চশিক্ষিত আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী রনি জানান, সকল প্রকার লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও গ্রামের ভিতরে বলে কোয়ালিটি সম্পন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা সেখানে জান না বা অর্ডার কাটেন না। অনেক সময় অর্ডার কাটলেও ঠিকমতো ঔষধ ডেলিভারি দেন না। যে কারণে ভালো মানের ঔষধের জন্য দোকান বন্ধ রেখে অথবা বাড়তি একজন লোক শহরে গিয়ে যাতায়াতের বাড়তি খরচ করে শহরের দোকানগুলো থেকে পাইকারি ওষুধ কিনে অতি সামান্য লাভে বিক্রি করতে হয়। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শহরের বড় দোকানগুলো বেশি বিক্রি করার সুযোগ পেয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা নিয়ে তাদের লাভ পুষিয়ে নেন। অনেক সময় বড় দোকানগুলো মিটফোর্ড বা হেরাজ মার্কেটের মত জায়গা থেকে নিম্নমানের ওষুধ কুরিয়ারের মাধ্যমে নিয়ে এসে নিয়ে ছোট ছোট দোকানদার ও সাধারণ জনগনের কাছে বিক্রি করে তাদের লাভ পুষিয়ে নেন। এ সকল ওষুধ কোথা থেকে নিয়ে আসা হয় তার জন্য কোম্পানির নির্ধারিত এলাকা কোডের সিল কেটে ফেলা হয়। এছাড়া ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ডাক্তারদের কাছে প্রমোশনের জন্য দেয়া ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষেধ থাকলেও টার্গেট পূরণের জন্য বড় দোকানগুলোতে ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বাড়তি সুবিধা হিসেবে দিয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিরা অর্ডার নেন। এছাড়া অনেক বড় বড় দোকানগুলোর অসাধু ব্যবসায়ীরা পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ শতাংশ ছাড় দিয়ে ওষুধ বিক্রি করে। অপরদিকে প্রেসক্রিপশন ঠিকানা দেখে বা যেকোনো ভবে বুঝতে পেরে দূর থেকে আসা অপরিচিত মানুষদের কাছে ওষুধের মূল্য না জানাই তাদের সাথে প্রতারণা করে ছাড় না দেওয়ার অভিযোগ আছে। এসব কারণে বড় দোকানগুলো ১০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ বিক্রি করে আসছে। অপরদিকে ছোট ছোট দোকানগুলো দিন দিন লস করতে থেকে মূলধন হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। বন্ধ হয়ে গেছে বহু দোকান। দিশেহারা হয়ে পড়েছে বহু ওষুধ ব্যবসায়ী। ঋণের জর্জরিত হয়ে ঠিকমতো ঋণের কিস্তি না দিতে পারে তারা অনেকেই এখন বাড়ি ছাড়া। এছাড়া গ্রামে ওষুধ কিনতে আসা ওষুধ অধিকাংশ মানুষই বাকি লেনদেন করেন। যা বছরে পর বছর হালখাতা করেও পরিশোধ করে না। চলমান এই অবস্থায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত কঠিন বলে তিনি জানান।

সুলতানপুর এলাকায় ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান জানান, নিয়মতান্ত্রিকভাবে একটি ফার্মেসি পরিচালনা করতে হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং তিন ধরনের লাইসেন্স প্রয়োজন। একটি ট্রেড লাইসেন্স, একটি ড্রাগ লাইসেন্স, একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত সনদধরী ফার্মাসিস্ট। সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় ছোট ফার্মেসির জন্য সাইনবোর্ড কর সহ ট্রেড লাইসেন্স প্রতি বছর নবায়ন করতে তিন হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। প্রতি দুই বছর পর পর ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য প্রায় তিন হাজার টাকার পাশাপাশি বিভিন্ন কাগজপত্র প্রদান করতে হয়। যেখানে প্রতিবছর আয়কর পরিষদের সনদপত্র প্রদান করতে হয়। প্রতি বছর সর্বনিম্ন তিন হাজার টাকা আই কর পরিশোধ করতে হয়। এছাড়া প্রতিটি সাধারণ ফার্মেসির জন্য একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত সি ক্যাটাগরি সনদধরী ফার্মাসিস্ট এবং মডেল ফার্মেসির জন্য এ ক্যাটাগরি সনদধরী ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক। এই ফার্মাসিস্ট সনদপত্র পাঁচ বছর পর পর বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল থেকে নবায়ন করতে হয়। অনলাইনে আবেদনের ১৫ দিন পর সনদধারীকে সশরীরে ঢাকার বাংলা মোটর এলাকায় বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলে সরাসরি উপস্থিত হয়ে সনদপত্র নবায়ন করতে হয়। অনেক সময় একাধিকবার আবেদন করা প্রয়োজন হয়। এছাড়া ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে ঔষধ সংরক্ষণ করার নিয়ম আছে। বর্তমান আবহাওয়ায় এসি ব্যবহার অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও ব্যায় বহুল।

সর্বোপরি সাতক্ষীরায় চলমান ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধিতে একদিকে জনগণের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্যদিকে ব্যাবসায়ীদের বাঁচার লড়াই এর বিকল্প নেই বলে তারা জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

ট্যাগস:-

সাতক্ষীরায় ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধিতে: জনমনে কষ্ট ব্যবসায়িদের বাঁচার লড়াই

আপডেট সময়- ০১:৪৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

ইব্রাহীম হোসেন,সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি।।

গত ১লা মে ২০২৫ থেকে সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী সরকার নির্ধারিত মূল্যের উপর ৫ শতাংশ কম দামে ঔষধ বিক্রি শুরু হয়েছে। যা ইতিপূর্বে ১০ শতাংশ কম দামে বিক্রি হচ্ছিল। হঠাৎ করে সাতক্ষীরার জনগণের কোন কারণ ছাড়াই এই দামে ঔষধ ক্রয় করার জন্য সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ওযুধের এই দাম‌ বৃদ্ধির ব্যাপারে বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ দ্বীনি আলী জানান, বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখা ইতিপূর্বে বিগত ফ্যাসিস্টদের দখলে ছিল, অর্থনৈতিকভাবে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধে সাতক্ষীরা জেলা ভরে গেছিল। সাতক্ষীরা জেলার জনগণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী সকল ফার্মেসিতে ফিজিশিয়ান স্যাম্পল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রয় বন্ধ, লাইসেন্স বিহীন দোকান বন্ধ করা, নির্ধারিত তাপমাত্রায় ঔষধ সংরক্ষণ করা, প্রতিটি দোকানে ফার্মাসিস্ট রাখা, ব্রোকার বা ফরিয়াদের কাছ থেকে ঔষধ ক্রয় না করে সরাসরি কোম্পানির কাছ থেকে ওষুধ ক্রয় করা এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যে থেকে জনস্বার্থে পাঁচ শতাংশ কম দামে ওষুধ বিক্রয় করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যা ১মে ২০২৫ তারিখ থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে ভেজাল ও নিম্নমানের নকল ওষুধ ব্যবসায়ীদের অপপ্রচারে না চালিয়ে সরকারি সকল নীতিমালার আলোকে সঠিক নিয়মে ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য সমিতির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

এটি সাধারণ দৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধি মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে জনস্বার্থে কম নেয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমান আদালত, ভোক্তা অধিকার সহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ সরকার নির্ধারিত মূল্যের পণ্য বিক্রির ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। দেশের অধিকাংশ জেলায় সরকার নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রি করা হয়। কোন ছাড় দেয়া হচ্ছে না। সেখানে জনস্বার্থ ও ব্যবসায়ীদের উভয়দিক বিবেচনা করে ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম জীবন জীবিকা নির্বাহ এবং ওষুধের ব্যবসাটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরী। অন্যথায় সাতক্ষীরায় ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করা দুর্বিষহ হয়ে পড়বে।

এ ব্যাপারে তিনি জেলা সকল ওষুধের ব্যবসায়ী এবং ওষুধ ক্রেতাদের কাছে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছেন।

এদিকে সাতক্ষীরার মানুষের জন্য এটি অত্যন্ত কষ্টের ব্যাপার বলে সমিতির সিদ্ধান্তে কোন কারণ ছাড়াই এই দামে ঔষধ বিক্রি শুরু করার জন্য বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের মতামত পরিলক্ষিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য ঔষধ ব্যবসায়ীদের সমিতির নিকট পুনরায় পূর্বের মূল্যে ঔষধ বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে।

শহরের রফিকুল ইসলাম নামের (৬৮) একজন রোগী জানান তিনি হাই ডায়াবেটিসের রোগী। নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয় এবং ওষুধ খেতে হয়। পেশাই তিনি ছিলেন একজন রং মিস্ত্রি। বর্তমানে অক্ষম শরীরে কোন কাজ করতে পারেন না। একমাত্র ছেলে ছোট্ট একটি মুদি দোকানদার। দ্রব্যমূল্যের বাজারে ছেলেটির একার আয়ে সংসারের ব্যায়ভার বহন করা এবং ওষুধ ক্রাই করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

রওশন আলী নামের (৭৫) একজন জানান তিনি হাই প্রেসারের রোগী। নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। ছেলে ভাড়ার পিকআপ চালান। এ কারণে তিনি নিয়মিত ওষুধ খেতে পারেন না। অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমান দাম বৃদ্ধিতে আরো কষ্টকর হয়ে গেছে। আগে যে ওষুধ ৯০ টাকায় কিনতেন এখন সেটি ৯৫ টাকা কিনতে হচ্ছে।

অপর দিকে শহরের একজন ওষুধ ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি উচ্চশিক্ষিত, চাকরি না পেয়ে আত্ম কর্মসংস্থানের জন্য তিনি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের সামনে একটি ওষুধের দোকান করেন। ২০ লক্ষ টাকার পুঁজি নিয়ে শুরু করা ব্যবসাটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে আসলে তিনি সেখান থেকে ব্যবসা বন্ধ করে মাত্র ২ লক্ষ টাকা নিয়ে গ্রামের ভিতরে ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে ওষুধ ব্যবসার পাশাপাশি গ্রাম্য চিকিৎসক হিসেবে কাজ করে কোনরকম জীবিকা নির্বাহ করছে। তার অনেক ওষুধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে বছরের পর বছর পড়ে আছে। দুই একটি কোম্পানি ছাড়া অধিকাংশ কোম্পানির প্রতিনিধিরা মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ গুলো যথা সময়ে ফেরত নেননি। কিছু মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ নিয়ে গেলেও তার পরিবর্তে অন্য ঔষধ প্রদান বা ইনভয়েচ এ এডজাস্ট করেনি। আবার অনেক কোম্পানি অর্ডার নেয়ার সময় একজন প্রতিনিধি ওই কোম্পানির সমস্ত গ্রুপের ওষুধ অর্ডার নেন এবং একসাথে এক কাটুনে সরবরাহ করেন। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে এটি অন্য গ্রুপের, ওটি অন্য গ্রুপের, এটা আমার গ্রুপের না এমন তালবাহানা করে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ গুলো উঠায় নিয়ে যায় না। পাতা কাটা ওষুধ, বক্সের ত্রুটি, কোম্পানির পলিসি ইত্যাদি বলে বহুত মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পরিবর্তন করতে উঠায় নিয়ে যায় না। তিনি আরো জানান বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন সময় কিছু বিশেষ ওষুধের জন্য ক্যাম্পেইন করে ডাক্তারদেরকে দিয়ে প্রেসক্রিপশন করান। সাময়িক সময় সে ঔষধ গুলো প্রচুর বিক্রি হয়। যার ফলে ফার্মেসি গুলো ঐ ওষুধ রাখতে বাধ্য হয়। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, একটি প্রেসক্রিপশনে একজন কাস্টমারের যে কয়টি ওষুধ থাকে তার মধ্যে একটি ওষুধ না পাইলে ওই দোকান থেকে তিনি অন্য দোকানে চলে যান। ক্যাম্পেইন শেষ হলে ডাক্তারেরা ঐ ওষুধ আর লেখেন না। ফলে ঐ ওষুধগুলো বছরের পর বছর পরে থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। মূলধনের বড় একটি অংশ বছরের পর বছর বসে থাকে।

এসব কারণে তিনি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তার মত এমন ক্ষতিগ্রস্ত ঔষধ ব্যবসায়ীর অনেক আছে বলে তিনি জানান।

পারুলিয়া এলাকার একজন ঔষধ ব্যবসায়ী নাহিদ হাসান জানান, অত্র এলাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দেশীয় ওষুধের পাশাপাশি ইন্ডিয়ান ওষুধ বিক্রি করে। দেশী ওষুধ ক্রয় মূল্য থেকেও কম দামে বিক্রি করে ইন্ডিয়ান ওষুধ দিগুন থেকে তিন গুণ দামে বিক্রি করেন। এটিতে তারা লাভবান হলেও পার্শ্ববর্তী দোকানগুলোতে টিকে থাকার জন্য দেশী ওষুধ বিক্রয় করতে ব্যবসায়ীদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হচ্ছে। যে কারণে ১০ থেকে ১২ শতাংশ ছাড়েও তারা ওষুধ বিক্রি করে এসেছে। দেশের ভালো মানের ওষুধ কোম্পানিগুলো সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়ে দোকানগুলোতে ওষুধ সরবরাহ করে থাকে। ১০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ বিক্রয় করলে ৫ শতাংশ লাভ থাকে। যে লভ্যাংশ দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার। সে কারণে নিম্নমানের ওষুধ বিক্রয় করতে অনেক ব্যবসায়ী বাধ্য হয়েছে।

আর যারা অসৎ উপায় অবলম্বন করিনি এখন তারা মুলধন হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

আলিপুর এলাকার একজন ওষুধ ব্যবসায় আক্তারুল ইসলাম জানান, এলাকার মুদিখানার বিভিন্ন দোকানে কোন প্রকার লাইসেন্স ছাড়াই নিম্নমানের ঔষধ বিক্রয় হচ্ছে। এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীরা দোকানে দোকানে গিয়ে ফেরি করে ওইসব নিম্নমানের কোম্পানির ঔষধ মুদিখানার দোকানদারদের কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করেন। কোন প্রকার প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স ছাড়াই মুদিখানার দোকানদারদের কাছ থেকে এলাকার সহজ সরল মানুষ নিম্নমানের ওই ধরনের সব ওষুধ খেয়ে প্রতারিত হচ্ছে। অপরদিকে প্রকৃত ঔষধ ব্যবসায়ীদের টিকে থাকার জন্য বাধ্য হয়ে নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি করতে হচ্ছে।

নওয়াপাড়া এলাকার ঔষধ ব্যবসায়ী উচ্চশিক্ষিত আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী রনি জানান, সকল প্রকার লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও গ্রামের ভিতরে বলে কোয়ালিটি সম্পন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা সেখানে জান না বা অর্ডার কাটেন না। অনেক সময় অর্ডার কাটলেও ঠিকমতো ঔষধ ডেলিভারি দেন না। যে কারণে ভালো মানের ঔষধের জন্য দোকান বন্ধ রেখে অথবা বাড়তি একজন লোক শহরে গিয়ে যাতায়াতের বাড়তি খরচ করে শহরের দোকানগুলো থেকে পাইকারি ওষুধ কিনে অতি সামান্য লাভে বিক্রি করতে হয়। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শহরের বড় দোকানগুলো বেশি বিক্রি করার সুযোগ পেয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা নিয়ে তাদের লাভ পুষিয়ে নেন। অনেক সময় বড় দোকানগুলো মিটফোর্ড বা হেরাজ মার্কেটের মত জায়গা থেকে নিম্নমানের ওষুধ কুরিয়ারের মাধ্যমে নিয়ে এসে নিয়ে ছোট ছোট দোকানদার ও সাধারণ জনগনের কাছে বিক্রি করে তাদের লাভ পুষিয়ে নেন। এ সকল ওষুধ কোথা থেকে নিয়ে আসা হয় তার জন্য কোম্পানির নির্ধারিত এলাকা কোডের সিল কেটে ফেলা হয়। এছাড়া ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ডাক্তারদের কাছে প্রমোশনের জন্য দেয়া ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষেধ থাকলেও টার্গেট পূরণের জন্য বড় দোকানগুলোতে ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বাড়তি সুবিধা হিসেবে দিয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিরা অর্ডার নেন। এছাড়া অনেক বড় বড় দোকানগুলোর অসাধু ব্যবসায়ীরা পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ শতাংশ ছাড় দিয়ে ওষুধ বিক্রি করে। অপরদিকে প্রেসক্রিপশন ঠিকানা দেখে বা যেকোনো ভবে বুঝতে পেরে দূর থেকে আসা অপরিচিত মানুষদের কাছে ওষুধের মূল্য না জানাই তাদের সাথে প্রতারণা করে ছাড় না দেওয়ার অভিযোগ আছে। এসব কারণে বড় দোকানগুলো ১০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ বিক্রি করে আসছে। অপরদিকে ছোট ছোট দোকানগুলো দিন দিন লস করতে থেকে মূলধন হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। বন্ধ হয়ে গেছে বহু দোকান। দিশেহারা হয়ে পড়েছে বহু ওষুধ ব্যবসায়ী। ঋণের জর্জরিত হয়ে ঠিকমতো ঋণের কিস্তি না দিতে পারে তারা অনেকেই এখন বাড়ি ছাড়া। এছাড়া গ্রামে ওষুধ কিনতে আসা ওষুধ অধিকাংশ মানুষই বাকি লেনদেন করেন। যা বছরে পর বছর হালখাতা করেও পরিশোধ করে না। চলমান এই অবস্থায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত কঠিন বলে তিনি জানান।

সুলতানপুর এলাকায় ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান জানান, নিয়মতান্ত্রিকভাবে একটি ফার্মেসি পরিচালনা করতে হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং তিন ধরনের লাইসেন্স প্রয়োজন। একটি ট্রেড লাইসেন্স, একটি ড্রাগ লাইসেন্স, একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত সনদধরী ফার্মাসিস্ট। সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় ছোট ফার্মেসির জন্য সাইনবোর্ড কর সহ ট্রেড লাইসেন্স প্রতি বছর নবায়ন করতে তিন হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। প্রতি দুই বছর পর পর ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য প্রায় তিন হাজার টাকার পাশাপাশি বিভিন্ন কাগজপত্র প্রদান করতে হয়। যেখানে প্রতিবছর আয়কর পরিষদের সনদপত্র প্রদান করতে হয়। প্রতি বছর সর্বনিম্ন তিন হাজার টাকা আই কর পরিশোধ করতে হয়। এছাড়া প্রতিটি সাধারণ ফার্মেসির জন্য একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত সি ক্যাটাগরি সনদধরী ফার্মাসিস্ট এবং মডেল ফার্মেসির জন্য এ ক্যাটাগরি সনদধরী ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক। এই ফার্মাসিস্ট সনদপত্র পাঁচ বছর পর পর বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল থেকে নবায়ন করতে হয়। অনলাইনে আবেদনের ১৫ দিন পর সনদধারীকে সশরীরে ঢাকার বাংলা মোটর এলাকায় বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলে সরাসরি উপস্থিত হয়ে সনদপত্র নবায়ন করতে হয়। অনেক সময় একাধিকবার আবেদন করা প্রয়োজন হয়। এছাড়া ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে ঔষধ সংরক্ষণ করার নিয়ম আছে। বর্তমান আবহাওয়ায় এসি ব্যবহার অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও ব্যায় বহুল।

সর্বোপরি সাতক্ষীরায় চলমান ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধিতে একদিকে জনগণের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্যদিকে ব্যাবসায়ীদের বাঁচার লড়াই এর বিকল্প নেই বলে তারা জানিয়েছেন।