নাসিক ‘নগর ভবনে’ ইজিবাইক চালকদের তাণ্ডবে আহত-২১

- আপডেট সময়- ০২:২৯:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫ ১৪ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক।।
নারায়ণগঞ্জে বাধাহীনভাবে শহরে চলাচলসহ চারদফা দাবি আদায়ে আন্দোলনরত অটো ও ইজিবাইক চালকরা নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) নগরভবনে হামলা চালিয়েছে।
সোমবার (১২ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান ফটকে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। হামলাকারীরা পরে সিটি কর্পোরেশনের নগরভবনের ভেতরে ঢুকেও ভাঙচুর চালায়। এতে অন্তত ১৯ জন সিটি কর্পোরেশনের কর্মী ও যানজট নিরসনের দায়িত্বে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার আহতরা হলেন: সিটি কর্পোরেশনের যানজট নিরসন সুপারভাইজার সম্রাট ইসলাম (৩০), যানজট নিরসন কর্মী মো. শাওন (৩৫), লিটন (৩৮), পলাশ (৩৪), মোহামাম্দ আলী (৩০), সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী শামসুন্নাহার শিমলা (২২), মোস্তাফিজুর রহমান মুহিন (১৮), সাগর দাস (২০), মাসুম বিল্লাহ ফারাবি (২৩), মাহিদুল আল মাহি (২২), মাহিদুল আল মাহি (২২), মাহফুজ আহমেদ (২২), সোনারগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম ইমন (২২), ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রাতুল দেওয়ান (২২), সরকারি কদমরসুল কলেজের সিয়াম সরকার (২৪), মো. নাহিদ ইসলাম হৃদয় (১৮), শফিকউদ্দিন শিফন (১৮), নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল এমএ মাদরাসার মিনহাজ প্রিন্স (২০), নারায়ণগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থী শেখ সামি (১৮) ও মো. সানভী (২১)।
ইজিবাইক চালকদের অভিযোগ, রিপন (২৮) ও সুমন (৩২) নামে তাদের দু’জন সহকর্মীও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন।
সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ও ইজিবাইক চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিটি এলাকায় বিনা বাধায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল, চাঁদাবাজি বন্ধ ও নির্ধারিত স্ট্যান্ডের দাবিতে সকাল দশটা থেকে নগর ভবনের সামনের সড়কে আন্দোলন করছিলেন চালকরা। তারা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তাদের লিখিত দাবিও পেশ করেন। সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা বিষয়টি আলোচনার পর সমাধানের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ সেখান থেকে চলে গেলও বেশ কয়েকজন সেখানেই থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সিটি কর্পোরেশের কর্মীরা বলেন, সিটি কর্পোরেশনের যানজট নিরসনের দায়িত্বে থাকা কর্মী ও শিক্ষার্থীরা নগর ভবনের প্রধান ফটকের সামনে এলে তাদের সঙ্গে ইজিবাইক চালকদের বাক বিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ইজিবাইক চালকরা হামলা চালায়।
ঘটনার সময় গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় সিটি কর্পোরেশনের প্রধান ফটক টপকে তালা ভাঙারও চেষ্টা করছে এক দল যুবক। এরপর তারা নগরভবনের ভেতর ঢুকে ভাঙচুর চালায়।
আহত সুপারভাইজার সম্রাট বলেন, যানজট নিরসন কর্মীদের নিয়ে নগরভবনে ঢোকার পথে তাদের ওপর লাঠিসোটা ও দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান ইজিবাইক চালকরা।এসময় তাকে রক্ষা করতে গেলে অন্যদেরও মারধর করা হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক শহরের অভ্যন্তরে নিষেধ। সিটি কর্পোরেশনের এ নির্দেশনা অনুযায়ী গত সপ্তাহে কয়েকটি ইজিবাইক যানজট নিরসন কর্মীরা আটক করে নিয়ম অনুযায়ী জরিমানার মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়।একারণে তারা ক্ষিপ্ত ছিলো।
এদিকে, হামলার ঘটনার পর আহতরা অন্তত দুই ঘন্টা নগরভবনে অবরুদ্ধ ছিলেন। পাশে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে থাকলেও নগর ভবনের সামনে ইজিবাইক চালকদের অবস্থান থাকায় তারা সেখানে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারেননি। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির অতিরিক্ত সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ পান।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।তবে দুপক্ষই পরবর্তীতে বসে সমাধান করা হবে। এটা একধরনের ভুল বোঝাবুঝি ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা আসার পরও ইজিবাইক চালকরা রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল। পরে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে তাদের বুঝিয়ে ব্যারিকেড সরানো হয়।পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছে।
নিউজটি শেয়ার করুন

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ