ঢাকা ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
না’গঞ্জ জেলা পরিষদের সিইও’র বদলিজনিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত কুলাউড়ায় স্কুল পড়ুয়া তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু নির্দেশনা পেলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত: কর্নেল শফিকুল দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত মৌলভীবাজার সীমান্তে শিশুসহ ৭১ বাংলাদেশীকে ফেরত দিলো বিএসএফ শ্রীমঙ্গলে অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতে নতুন কারসাজিতে ও ঠিকাদার ব্যর্থ মৌলভীবাজারে জামিনের প্রলোভনে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক গ্রেপ্তার জুড়ীর কৃতি সন্তান শরীফ বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে প্রথম আ’লীগের সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার ৩৩ ডেপুটি জেলারকে একযোগে বদলি আমি জনগণের সেবক হতে চাই, কারো প্রতিযোগী না: মাসুদুজ্জামান জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে মর্গ্যান স্কুলের সংকট নিরসন মাদরাসার দুই শিক্ষার্থীর একই সাথে মৃত্যু;  শিক্ষক সমিতির শোক দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রথমবার কৃত্রিম বৃষ্টি এক নতুন দিগন্ত ভেড়ামারায় পদ্মায় তীব্র ভাঙন, আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা ভৈরবের পূর্বকান্দা সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক’কে অফিসে ডুকে মারধরের অভিযোগ সুন্দরবনে বিপুল পরিমাণ হরিণ শিকারের ফাঁদ জব্দ কুমিল্লায় ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত বিচারের দাবিতে মহিলা পরিষদের মানববন্ধন আজ ব্যাংক হলিডে, ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে সব লেনদেন বন্ধ জুলাই অভ্যুত্থানে বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের শহীদ হয়েছে ৭৩৪ নওগাঁয় অতিরিক্ত ধান-চাল মজুদ: দুই মিল ম্যানেজারের অর্থদন্ডসহ জেল নারায়ণগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে অস্ত্র-মাদক ও বিদেশি মুদ্রাসহ আটক-২ ফতুল্লায় আবির ফ্যাশনে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনায় বিক্ষোভে ৮ কারখানা বন্ধ সুন্দরবনে হরিণের ফাঁদসহ আটক-১ শিকারী  খোলপেটুয়া নদীরচর থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার শরণখোলায় ৪নং সাউথখালী ইউপি’র উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা বিমানবন্দরে চেকিংয়ে ম্যাগজিন পাওয়ার বিষয়ে যা বললেন উপদেষ্টা আসিফ না’ঞ্জকে সবুজে ঘেরা পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা।”-জেলা প্রশাসক ৫ আগস্টের পর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ১৩ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত না’গঞ্জে ‘আ’লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে সাবেক বিএনপি নেতাকে ‘মারধর’সহ হেনস্তা না’গঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে মাদক-অস্ত্রসহ আটক-২ নারী কারবারি কুষ্টিয়ায় মাদক কারবার নিয়ে বিরোধে যুবককে কুপিয়ে হত্যা কুষ্টিয়ায় বাসচাপায় পুলিশ সদস্য নিহত শরণখোলায় লাগসই প্রযুক্তি বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত আমার শিকড় এই মাটির অনেক গভীরে: মাসুদুজ্জামান মাসুদ ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ আজ না ফেরার দেশে ‘কাঁটা লাগা’ গার্লখ্যাত শেফালি জারিওয়ালা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে মাসুদ-পন্টি পরিষদ বিজয়ী ধর্ষণচেষ্টা মামলায় শিক্ষক আটক, পাঠানো হলো কারাগারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চালকদের ডাটাবেজ করছে না’গঞ্জ জেলা প্রশাসন ডিএমপির ৬ ডিসির দায়িত্বে রদবদল কুষ্টিয়ায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতের হানা, লাশের শরীর তল্লাশি গাইবান্ধায় এইচএসসি পরীক্ষার ১ম দিনে ১২ জন বহিষ্কার, ৪২৯ অনুপস্থিত কুষ্টিয়ায় মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী দিবস পালিত রায়পুরায় ছয় দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি শরণখোলায় পার্টনার স্কুল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম সবুজের মায়ের ১ম  মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া অনুষ্ঠিত আজ থেকে শুরু এইচএসসি পরীক্ষা,পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে বিশেষ গাইডলাইন নারায়ণগঞ্জে জোড়া খুন; সাবেক কাউন্সিলর হান্নান ও দুই পুত্রসহ আটক-৪ ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় খালাস পেলেন কুষ্টিয়ার দুই সাংবাদিক গ্লোবাল টিভির সাংবাদিক মনিরুল আলমকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি ‘মব জাস্টিস’ এক হিংস্র উন্মাদনা: তারেক রহমান দেশের সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা ফতুল্লায় তিতাসের অভিযান: অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ অর্থদন্ড রোটারি ক্লাব অব নারায়ণগঞ্জ মিডটাউনের বর্ষ সমাপ্তি সভা অনুষ্ঠিত ‘মব’ ঠেকাতে কঠোর বার্তা, ব্যর্থ হলেই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার সাবেক সিইসিকে ‘মব’ সৃষ্টি করে হেনস্থাকারী স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মুজাম্মেল আটক স্রোতের তোড়ে ২৮ যাত্রী নিয়ে মেঘনায় ডুবলো স্পিডবোট কর,কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ‘ কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আহত-৪ প্রধান উপদেষ্টাসহ দুদককে উকিল নোটিশ পাঠালেন টিউলিপ সিদ্দিক বিশ্ব পরিবেশ দিবসে মহিলা পরিষদের বৃক্ষরোপণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে ছদ্মবেশে গ্রেপ্তার করল পুলিশ সোনারগাঁয়ে প্রবাসীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার হুমকিদাতা বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার ‘মব’ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কড়া হুশিয়ারী দিলো সরকার সাবেক এমপি সাবিনা আক্তার তুহিন গ্রেপ্তার সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে ঘিরে ‘মব’ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার সাবেক আরেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার না’গঞ্জের প্রবেশমুখে স্থাপত্যশৈলীর ছোয়ায় নির্মিত হবে ‘গেট অব ড্যান্ডি’ শামীম ওসমানের ২টি প্লট ক্রোকসহ ২৯ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ সাবেক সিইসি কেএম নুরুল হুদা ডিবি হেফাজতে মুন্সিগঞ্জের সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লব গ্রেপ্তার বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করবে: মোস্তফা জামান কুষ্টিয়ায় পাউবোর জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না’গঞ্জে অটোরিকশার স্ট্যান্ড দখল নিতেই বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, নিহত-২ আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল, গ্রেপ্তার নয়: মেঘনা আলম  এডিসির সঙ্গেও অনৈতিক সম্পর্ক ছিল বিশ্বপ্রেমিক ডিসি আশরাফের নারায়ণগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জোড়া খুন দুই মাসেও ডিবি প্রধানের শূন্য পদ পূর্ণ হয়নি কর্মস্থলে অনুপস্থিত শরীয়তপুরের বিতর্কিত ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভিডিও বার্তায় প্রেমিকাকে যা বললেন শরীয়তপুরের সমালোচিত ডিসি আইআরজিসির কাছে যুদ্ধকালীন ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন খামেনি পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার ডিবি হেফাজতে পরিবেশ সংরক্ষণে জেলা প্রশাসনের গৃহীত পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন: জনপ্রশাসন সচিব বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ায় মাছ ধরতে পারছে না জেলেরা: নিরাপদ আশ্রয় ফিশিং ট্রলার শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল না’গঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় মাদক-ছিনতাই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ নারায়ণগঞ্জে মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনের শিকার বাবা-মার হাতেই পুত্র খুন সেনা অভিযানে তিন সপ্তাহে ৫৬ অবৈধ অস্ত্রসহ ৯৯৬ অপরাধী গ্রেপ্তার কমলগঞ্জে ৩ কেজি গাঁজাসহ দুই কারবারি পুলিশের জালে আদমজী বিহারি ক্যাম্পে সেনা অভিযান, অস্ত্রসহ ২ নারী আটক কুষ্টিয়ায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু কুষ্টিয়ায় ছাত্রাবাসে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে রহস্যের ধূম্রজাল শরণখোলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ায় পিতার সংবাদ সম্মেলন কমলগঞ্জে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা কুলাউড়ায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার দেশজুড়ে থেমে থেমে বজ্রসহ বৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস ট্রাম্পের হুমকির পর আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ির পাল্টা জবাব ‘যুদ্ধ শুরু হলো’ নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজে দুর্ধর্ষ চুরি সোনারগাঁয়ে খালপাড় বেড়িবাঁধ থেকে যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

সাতক্ষীরায় ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধিতে: জনমনে কষ্ট ব্যবসায়িদের বাঁচার লড়াই

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০১:৪৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫ ১০৩ বার পড়া হয়েছে

ইব্রাহীম হোসেন,সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি।।

গত ১লা মে ২০২৫ থেকে সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী সরকার নির্ধারিত মূল্যের উপর ৫ শতাংশ কম দামে ঔষধ বিক্রি শুরু হয়েছে। যা ইতিপূর্বে ১০ শতাংশ কম দামে বিক্রি হচ্ছিল। হঠাৎ করে সাতক্ষীরার জনগণের কোন কারণ ছাড়াই এই দামে ঔষধ ক্রয় করার জন্য সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ওযুধের এই দাম‌ বৃদ্ধির ব্যাপারে বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ দ্বীনি আলী জানান, বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখা ইতিপূর্বে বিগত ফ্যাসিস্টদের দখলে ছিল, অর্থনৈতিকভাবে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধে সাতক্ষীরা জেলা ভরে গেছিল। সাতক্ষীরা জেলার জনগণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী সকল ফার্মেসিতে ফিজিশিয়ান স্যাম্পল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রয় বন্ধ, লাইসেন্স বিহীন দোকান বন্ধ করা, নির্ধারিত তাপমাত্রায় ঔষধ সংরক্ষণ করা, প্রতিটি দোকানে ফার্মাসিস্ট রাখা, ব্রোকার বা ফরিয়াদের কাছ থেকে ঔষধ ক্রয় না করে সরাসরি কোম্পানির কাছ থেকে ওষুধ ক্রয় করা এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যে থেকে জনস্বার্থে পাঁচ শতাংশ কম দামে ওষুধ বিক্রয় করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যা ১মে ২০২৫ তারিখ থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে ভেজাল ও নিম্নমানের নকল ওষুধ ব্যবসায়ীদের অপপ্রচারে না চালিয়ে সরকারি সকল নীতিমালার আলোকে সঠিক নিয়মে ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য সমিতির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

এটি সাধারণ দৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধি মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে জনস্বার্থে কম নেয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমান আদালত, ভোক্তা অধিকার সহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ সরকার নির্ধারিত মূল্যের পণ্য বিক্রির ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। দেশের অধিকাংশ জেলায় সরকার নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রি করা হয়। কোন ছাড় দেয়া হচ্ছে না। সেখানে জনস্বার্থ ও ব্যবসায়ীদের উভয়দিক বিবেচনা করে ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম জীবন জীবিকা নির্বাহ এবং ওষুধের ব্যবসাটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরী। অন্যথায় সাতক্ষীরায় ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করা দুর্বিষহ হয়ে পড়বে।

এ ব্যাপারে তিনি জেলা সকল ওষুধের ব্যবসায়ী এবং ওষুধ ক্রেতাদের কাছে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছেন।

এদিকে সাতক্ষীরার মানুষের জন্য এটি অত্যন্ত কষ্টের ব্যাপার বলে সমিতির সিদ্ধান্তে কোন কারণ ছাড়াই এই দামে ঔষধ বিক্রি শুরু করার জন্য বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের মতামত পরিলক্ষিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য ঔষধ ব্যবসায়ীদের সমিতির নিকট পুনরায় পূর্বের মূল্যে ঔষধ বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে।

শহরের রফিকুল ইসলাম নামের (৬৮) একজন রোগী জানান তিনি হাই ডায়াবেটিসের রোগী। নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয় এবং ওষুধ খেতে হয়। পেশাই তিনি ছিলেন একজন রং মিস্ত্রি। বর্তমানে অক্ষম শরীরে কোন কাজ করতে পারেন না। একমাত্র ছেলে ছোট্ট একটি মুদি দোকানদার। দ্রব্যমূল্যের বাজারে ছেলেটির একার আয়ে সংসারের ব্যায়ভার বহন করা এবং ওষুধ ক্রাই করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

রওশন আলী নামের (৭৫) একজন জানান তিনি হাই প্রেসারের রোগী। নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। ছেলে ভাড়ার পিকআপ চালান। এ কারণে তিনি নিয়মিত ওষুধ খেতে পারেন না। অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমান দাম বৃদ্ধিতে আরো কষ্টকর হয়ে গেছে। আগে যে ওষুধ ৯০ টাকায় কিনতেন এখন সেটি ৯৫ টাকা কিনতে হচ্ছে।

অপর দিকে শহরের একজন ওষুধ ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি উচ্চশিক্ষিত, চাকরি না পেয়ে আত্ম কর্মসংস্থানের জন্য তিনি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের সামনে একটি ওষুধের দোকান করেন। ২০ লক্ষ টাকার পুঁজি নিয়ে শুরু করা ব্যবসাটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে আসলে তিনি সেখান থেকে ব্যবসা বন্ধ করে মাত্র ২ লক্ষ টাকা নিয়ে গ্রামের ভিতরে ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে ওষুধ ব্যবসার পাশাপাশি গ্রাম্য চিকিৎসক হিসেবে কাজ করে কোনরকম জীবিকা নির্বাহ করছে। তার অনেক ওষুধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে বছরের পর বছর পড়ে আছে। দুই একটি কোম্পানি ছাড়া অধিকাংশ কোম্পানির প্রতিনিধিরা মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ গুলো যথা সময়ে ফেরত নেননি। কিছু মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ নিয়ে গেলেও তার পরিবর্তে অন্য ঔষধ প্রদান বা ইনভয়েচ এ এডজাস্ট করেনি। আবার অনেক কোম্পানি অর্ডার নেয়ার সময় একজন প্রতিনিধি ওই কোম্পানির সমস্ত গ্রুপের ওষুধ অর্ডার নেন এবং একসাথে এক কাটুনে সরবরাহ করেন। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে এটি অন্য গ্রুপের, ওটি অন্য গ্রুপের, এটা আমার গ্রুপের না এমন তালবাহানা করে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ গুলো উঠায় নিয়ে যায় না। পাতা কাটা ওষুধ, বক্সের ত্রুটি, কোম্পানির পলিসি ইত্যাদি বলে বহুত মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পরিবর্তন করতে উঠায় নিয়ে যায় না। তিনি আরো জানান বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন সময় কিছু বিশেষ ওষুধের জন্য ক্যাম্পেইন করে ডাক্তারদেরকে দিয়ে প্রেসক্রিপশন করান। সাময়িক সময় সে ঔষধ গুলো প্রচুর বিক্রি হয়। যার ফলে ফার্মেসি গুলো ঐ ওষুধ রাখতে বাধ্য হয়। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, একটি প্রেসক্রিপশনে একজন কাস্টমারের যে কয়টি ওষুধ থাকে তার মধ্যে একটি ওষুধ না পাইলে ওই দোকান থেকে তিনি অন্য দোকানে চলে যান। ক্যাম্পেইন শেষ হলে ডাক্তারেরা ঐ ওষুধ আর লেখেন না। ফলে ঐ ওষুধগুলো বছরের পর বছর পরে থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। মূলধনের বড় একটি অংশ বছরের পর বছর বসে থাকে।

এসব কারণে তিনি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তার মত এমন ক্ষতিগ্রস্ত ঔষধ ব্যবসায়ীর অনেক আছে বলে তিনি জানান।

পারুলিয়া এলাকার একজন ঔষধ ব্যবসায়ী নাহিদ হাসান জানান, অত্র এলাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দেশীয় ওষুধের পাশাপাশি ইন্ডিয়ান ওষুধ বিক্রি করে। দেশী ওষুধ ক্রয় মূল্য থেকেও কম দামে বিক্রি করে ইন্ডিয়ান ওষুধ দিগুন থেকে তিন গুণ দামে বিক্রি করেন। এটিতে তারা লাভবান হলেও পার্শ্ববর্তী দোকানগুলোতে টিকে থাকার জন্য দেশী ওষুধ বিক্রয় করতে ব্যবসায়ীদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হচ্ছে। যে কারণে ১০ থেকে ১২ শতাংশ ছাড়েও তারা ওষুধ বিক্রি করে এসেছে। দেশের ভালো মানের ওষুধ কোম্পানিগুলো সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়ে দোকানগুলোতে ওষুধ সরবরাহ করে থাকে। ১০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ বিক্রয় করলে ৫ শতাংশ লাভ থাকে। যে লভ্যাংশ দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার। সে কারণে নিম্নমানের ওষুধ বিক্রয় করতে অনেক ব্যবসায়ী বাধ্য হয়েছে।

আর যারা অসৎ উপায় অবলম্বন করিনি এখন তারা মুলধন হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

আলিপুর এলাকার একজন ওষুধ ব্যবসায় আক্তারুল ইসলাম জানান, এলাকার মুদিখানার বিভিন্ন দোকানে কোন প্রকার লাইসেন্স ছাড়াই নিম্নমানের ঔষধ বিক্রয় হচ্ছে। এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীরা দোকানে দোকানে গিয়ে ফেরি করে ওইসব নিম্নমানের কোম্পানির ঔষধ মুদিখানার দোকানদারদের কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করেন। কোন প্রকার প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স ছাড়াই মুদিখানার দোকানদারদের কাছ থেকে এলাকার সহজ সরল মানুষ নিম্নমানের ওই ধরনের সব ওষুধ খেয়ে প্রতারিত হচ্ছে। অপরদিকে প্রকৃত ঔষধ ব্যবসায়ীদের টিকে থাকার জন্য বাধ্য হয়ে নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি করতে হচ্ছে।

নওয়াপাড়া এলাকার ঔষধ ব্যবসায়ী উচ্চশিক্ষিত আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী রনি জানান, সকল প্রকার লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও গ্রামের ভিতরে বলে কোয়ালিটি সম্পন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা সেখানে জান না বা অর্ডার কাটেন না। অনেক সময় অর্ডার কাটলেও ঠিকমতো ঔষধ ডেলিভারি দেন না। যে কারণে ভালো মানের ঔষধের জন্য দোকান বন্ধ রেখে অথবা বাড়তি একজন লোক শহরে গিয়ে যাতায়াতের বাড়তি খরচ করে শহরের দোকানগুলো থেকে পাইকারি ওষুধ কিনে অতি সামান্য লাভে বিক্রি করতে হয়। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শহরের বড় দোকানগুলো বেশি বিক্রি করার সুযোগ পেয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা নিয়ে তাদের লাভ পুষিয়ে নেন। অনেক সময় বড় দোকানগুলো মিটফোর্ড বা হেরাজ মার্কেটের মত জায়গা থেকে নিম্নমানের ওষুধ কুরিয়ারের মাধ্যমে নিয়ে এসে নিয়ে ছোট ছোট দোকানদার ও সাধারণ জনগনের কাছে বিক্রি করে তাদের লাভ পুষিয়ে নেন। এ সকল ওষুধ কোথা থেকে নিয়ে আসা হয় তার জন্য কোম্পানির নির্ধারিত এলাকা কোডের সিল কেটে ফেলা হয়। এছাড়া ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ডাক্তারদের কাছে প্রমোশনের জন্য দেয়া ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষেধ থাকলেও টার্গেট পূরণের জন্য বড় দোকানগুলোতে ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বাড়তি সুবিধা হিসেবে দিয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিরা অর্ডার নেন। এছাড়া অনেক বড় বড় দোকানগুলোর অসাধু ব্যবসায়ীরা পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ শতাংশ ছাড় দিয়ে ওষুধ বিক্রি করে। অপরদিকে প্রেসক্রিপশন ঠিকানা দেখে বা যেকোনো ভবে বুঝতে পেরে দূর থেকে আসা অপরিচিত মানুষদের কাছে ওষুধের মূল্য না জানাই তাদের সাথে প্রতারণা করে ছাড় না দেওয়ার অভিযোগ আছে। এসব কারণে বড় দোকানগুলো ১০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ বিক্রি করে আসছে। অপরদিকে ছোট ছোট দোকানগুলো দিন দিন লস করতে থেকে মূলধন হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। বন্ধ হয়ে গেছে বহু দোকান। দিশেহারা হয়ে পড়েছে বহু ওষুধ ব্যবসায়ী। ঋণের জর্জরিত হয়ে ঠিকমতো ঋণের কিস্তি না দিতে পারে তারা অনেকেই এখন বাড়ি ছাড়া। এছাড়া গ্রামে ওষুধ কিনতে আসা ওষুধ অধিকাংশ মানুষই বাকি লেনদেন করেন। যা বছরে পর বছর হালখাতা করেও পরিশোধ করে না। চলমান এই অবস্থায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত কঠিন বলে তিনি জানান।

সুলতানপুর এলাকায় ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান জানান, নিয়মতান্ত্রিকভাবে একটি ফার্মেসি পরিচালনা করতে হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং তিন ধরনের লাইসেন্স প্রয়োজন। একটি ট্রেড লাইসেন্স, একটি ড্রাগ লাইসেন্স, একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত সনদধরী ফার্মাসিস্ট। সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় ছোট ফার্মেসির জন্য সাইনবোর্ড কর সহ ট্রেড লাইসেন্স প্রতি বছর নবায়ন করতে তিন হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। প্রতি দুই বছর পর পর ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য প্রায় তিন হাজার টাকার পাশাপাশি বিভিন্ন কাগজপত্র প্রদান করতে হয়। যেখানে প্রতিবছর আয়কর পরিষদের সনদপত্র প্রদান করতে হয়। প্রতি বছর সর্বনিম্ন তিন হাজার টাকা আই কর পরিশোধ করতে হয়। এছাড়া প্রতিটি সাধারণ ফার্মেসির জন্য একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত সি ক্যাটাগরি সনদধরী ফার্মাসিস্ট এবং মডেল ফার্মেসির জন্য এ ক্যাটাগরি সনদধরী ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক। এই ফার্মাসিস্ট সনদপত্র পাঁচ বছর পর পর বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল থেকে নবায়ন করতে হয়। অনলাইনে আবেদনের ১৫ দিন পর সনদধারীকে সশরীরে ঢাকার বাংলা মোটর এলাকায় বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলে সরাসরি উপস্থিত হয়ে সনদপত্র নবায়ন করতে হয়। অনেক সময় একাধিকবার আবেদন করা প্রয়োজন হয়। এছাড়া ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে ঔষধ সংরক্ষণ করার নিয়ম আছে। বর্তমান আবহাওয়ায় এসি ব্যবহার অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও ব্যায় বহুল।

সর্বোপরি সাতক্ষীরায় চলমান ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধিতে একদিকে জনগণের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্যদিকে ব্যাবসায়ীদের বাঁচার লড়াই এর বিকল্প নেই বলে তারা জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

সাতক্ষীরায় ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধিতে: জনমনে কষ্ট ব্যবসায়িদের বাঁচার লড়াই

আপডেট সময়- ০১:৪৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

ইব্রাহীম হোসেন,সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি।।

গত ১লা মে ২০২৫ থেকে সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী সরকার নির্ধারিত মূল্যের উপর ৫ শতাংশ কম দামে ঔষধ বিক্রি শুরু হয়েছে। যা ইতিপূর্বে ১০ শতাংশ কম দামে বিক্রি হচ্ছিল। হঠাৎ করে সাতক্ষীরার জনগণের কোন কারণ ছাড়াই এই দামে ঔষধ ক্রয় করার জন্য সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ওযুধের এই দাম‌ বৃদ্ধির ব্যাপারে বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ দ্বীনি আলী জানান, বাংলাদেশ কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখা ইতিপূর্বে বিগত ফ্যাসিস্টদের দখলে ছিল, অর্থনৈতিকভাবে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধে সাতক্ষীরা জেলা ভরে গেছিল। সাতক্ষীরা জেলার জনগণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে সাতক্ষীরা জেলা ব্যাপী সকল ফার্মেসিতে ফিজিশিয়ান স্যাম্পল, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রয় বন্ধ, লাইসেন্স বিহীন দোকান বন্ধ করা, নির্ধারিত তাপমাত্রায় ঔষধ সংরক্ষণ করা, প্রতিটি দোকানে ফার্মাসিস্ট রাখা, ব্রোকার বা ফরিয়াদের কাছ থেকে ঔষধ ক্রয় না করে সরাসরি কোম্পানির কাছ থেকে ওষুধ ক্রয় করা এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যে থেকে জনস্বার্থে পাঁচ শতাংশ কম দামে ওষুধ বিক্রয় করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যা ১মে ২০২৫ তারিখ থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে ভেজাল ও নিম্নমানের নকল ওষুধ ব্যবসায়ীদের অপপ্রচারে না চালিয়ে সরকারি সকল নীতিমালার আলোকে সঠিক নিয়মে ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য সমিতির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

এটি সাধারণ দৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধি মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে জনস্বার্থে কম নেয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমান আদালত, ভোক্তা অধিকার সহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ সরকার নির্ধারিত মূল্যের পণ্য বিক্রির ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। দেশের অধিকাংশ জেলায় সরকার নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রি করা হয়। কোন ছাড় দেয়া হচ্ছে না। সেখানে জনস্বার্থ ও ব্যবসায়ীদের উভয়দিক বিবেচনা করে ব্যবসায়ীদের ন্যূনতম জীবন জীবিকা নির্বাহ এবং ওষুধের ব্যবসাটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরী। অন্যথায় সাতক্ষীরায় ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করা দুর্বিষহ হয়ে পড়বে।

এ ব্যাপারে তিনি জেলা সকল ওষুধের ব্যবসায়ী এবং ওষুধ ক্রেতাদের কাছে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছেন।

এদিকে সাতক্ষীরার মানুষের জন্য এটি অত্যন্ত কষ্টের ব্যাপার বলে সমিতির সিদ্ধান্তে কোন কারণ ছাড়াই এই দামে ঔষধ বিক্রি শুরু করার জন্য বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের মতামত পরিলক্ষিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য ঔষধ ব্যবসায়ীদের সমিতির নিকট পুনরায় পূর্বের মূল্যে ঔষধ বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে।

শহরের রফিকুল ইসলাম নামের (৬৮) একজন রোগী জানান তিনি হাই ডায়াবেটিসের রোগী। নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয় এবং ওষুধ খেতে হয়। পেশাই তিনি ছিলেন একজন রং মিস্ত্রি। বর্তমানে অক্ষম শরীরে কোন কাজ করতে পারেন না। একমাত্র ছেলে ছোট্ট একটি মুদি দোকানদার। দ্রব্যমূল্যের বাজারে ছেলেটির একার আয়ে সংসারের ব্যায়ভার বহন করা এবং ওষুধ ক্রাই করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

রওশন আলী নামের (৭৫) একজন জানান তিনি হাই প্রেসারের রোগী। নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। ছেলে ভাড়ার পিকআপ চালান। এ কারণে তিনি নিয়মিত ওষুধ খেতে পারেন না। অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমান দাম বৃদ্ধিতে আরো কষ্টকর হয়ে গেছে। আগে যে ওষুধ ৯০ টাকায় কিনতেন এখন সেটি ৯৫ টাকা কিনতে হচ্ছে।

অপর দিকে শহরের একজন ওষুধ ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি উচ্চশিক্ষিত, চাকরি না পেয়ে আত্ম কর্মসংস্থানের জন্য তিনি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের সামনে একটি ওষুধের দোকান করেন। ২০ লক্ষ টাকার পুঁজি নিয়ে শুরু করা ব্যবসাটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে আসলে তিনি সেখান থেকে ব্যবসা বন্ধ করে মাত্র ২ লক্ষ টাকা নিয়ে গ্রামের ভিতরে ছোট্ট একটি দোকান দিয়ে ওষুধ ব্যবসার পাশাপাশি গ্রাম্য চিকিৎসক হিসেবে কাজ করে কোনরকম জীবিকা নির্বাহ করছে। তার অনেক ওষুধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে বছরের পর বছর পড়ে আছে। দুই একটি কোম্পানি ছাড়া অধিকাংশ কোম্পানির প্রতিনিধিরা মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ গুলো যথা সময়ে ফেরত নেননি। কিছু মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ নিয়ে গেলেও তার পরিবর্তে অন্য ঔষধ প্রদান বা ইনভয়েচ এ এডজাস্ট করেনি। আবার অনেক কোম্পানি অর্ডার নেয়ার সময় একজন প্রতিনিধি ওই কোম্পানির সমস্ত গ্রুপের ওষুধ অর্ডার নেন এবং একসাথে এক কাটুনে সরবরাহ করেন। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে এটি অন্য গ্রুপের, ওটি অন্য গ্রুপের, এটা আমার গ্রুপের না এমন তালবাহানা করে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ গুলো উঠায় নিয়ে যায় না। পাতা কাটা ওষুধ, বক্সের ত্রুটি, কোম্পানির পলিসি ইত্যাদি বলে বহুত মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পরিবর্তন করতে উঠায় নিয়ে যায় না। তিনি আরো জানান বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন সময় কিছু বিশেষ ওষুধের জন্য ক্যাম্পেইন করে ডাক্তারদেরকে দিয়ে প্রেসক্রিপশন করান। সাময়িক সময় সে ঔষধ গুলো প্রচুর বিক্রি হয়। যার ফলে ফার্মেসি গুলো ঐ ওষুধ রাখতে বাধ্য হয়। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, একটি প্রেসক্রিপশনে একজন কাস্টমারের যে কয়টি ওষুধ থাকে তার মধ্যে একটি ওষুধ না পাইলে ওই দোকান থেকে তিনি অন্য দোকানে চলে যান। ক্যাম্পেইন শেষ হলে ডাক্তারেরা ঐ ওষুধ আর লেখেন না। ফলে ঐ ওষুধগুলো বছরের পর বছর পরে থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। মূলধনের বড় একটি অংশ বছরের পর বছর বসে থাকে।

এসব কারণে তিনি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তার মত এমন ক্ষতিগ্রস্ত ঔষধ ব্যবসায়ীর অনেক আছে বলে তিনি জানান।

পারুলিয়া এলাকার একজন ঔষধ ব্যবসায়ী নাহিদ হাসান জানান, অত্র এলাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দেশীয় ওষুধের পাশাপাশি ইন্ডিয়ান ওষুধ বিক্রি করে। দেশী ওষুধ ক্রয় মূল্য থেকেও কম দামে বিক্রি করে ইন্ডিয়ান ওষুধ দিগুন থেকে তিন গুণ দামে বিক্রি করেন। এটিতে তারা লাভবান হলেও পার্শ্ববর্তী দোকানগুলোতে টিকে থাকার জন্য দেশী ওষুধ বিক্রয় করতে ব্যবসায়ীদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হচ্ছে। যে কারণে ১০ থেকে ১২ শতাংশ ছাড়েও তারা ওষুধ বিক্রি করে এসেছে। দেশের ভালো মানের ওষুধ কোম্পানিগুলো সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়ে দোকানগুলোতে ওষুধ সরবরাহ করে থাকে। ১০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ বিক্রয় করলে ৫ শতাংশ লাভ থাকে। যে লভ্যাংশ দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার। সে কারণে নিম্নমানের ওষুধ বিক্রয় করতে অনেক ব্যবসায়ী বাধ্য হয়েছে।

আর যারা অসৎ উপায় অবলম্বন করিনি এখন তারা মুলধন হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

আলিপুর এলাকার একজন ওষুধ ব্যবসায় আক্তারুল ইসলাম জানান, এলাকার মুদিখানার বিভিন্ন দোকানে কোন প্রকার লাইসেন্স ছাড়াই নিম্নমানের ঔষধ বিক্রয় হচ্ছে। এক ধরনের অসাধু ব্যবসায়ীরা দোকানে দোকানে গিয়ে ফেরি করে ওইসব নিম্নমানের কোম্পানির ঔষধ মুদিখানার দোকানদারদের কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করেন। কোন প্রকার প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স ছাড়াই মুদিখানার দোকানদারদের কাছ থেকে এলাকার সহজ সরল মানুষ নিম্নমানের ওই ধরনের সব ওষুধ খেয়ে প্রতারিত হচ্ছে। অপরদিকে প্রকৃত ঔষধ ব্যবসায়ীদের টিকে থাকার জন্য বাধ্য হয়ে নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি করতে হচ্ছে।

নওয়াপাড়া এলাকার ঔষধ ব্যবসায়ী উচ্চশিক্ষিত আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী রনি জানান, সকল প্রকার লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও গ্রামের ভিতরে বলে কোয়ালিটি সম্পন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা সেখানে জান না বা অর্ডার কাটেন না। অনেক সময় অর্ডার কাটলেও ঠিকমতো ঔষধ ডেলিভারি দেন না। যে কারণে ভালো মানের ঔষধের জন্য দোকান বন্ধ রেখে অথবা বাড়তি একজন লোক শহরে গিয়ে যাতায়াতের বাড়তি খরচ করে শহরের দোকানগুলো থেকে পাইকারি ওষুধ কিনে অতি সামান্য লাভে বিক্রি করতে হয়। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শহরের বড় দোকানগুলো বেশি বিক্রি করার সুযোগ পেয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা নিয়ে তাদের লাভ পুষিয়ে নেন। অনেক সময় বড় দোকানগুলো মিটফোর্ড বা হেরাজ মার্কেটের মত জায়গা থেকে নিম্নমানের ওষুধ কুরিয়ারের মাধ্যমে নিয়ে এসে নিয়ে ছোট ছোট দোকানদার ও সাধারণ জনগনের কাছে বিক্রি করে তাদের লাভ পুষিয়ে নেন। এ সকল ওষুধ কোথা থেকে নিয়ে আসা হয় তার জন্য কোম্পানির নির্ধারিত এলাকা কোডের সিল কেটে ফেলা হয়। এছাড়া ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ডাক্তারদের কাছে প্রমোশনের জন্য দেয়া ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষেধ থাকলেও টার্গেট পূরণের জন্য বড় দোকানগুলোতে ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বাড়তি সুবিধা হিসেবে দিয়ে কোম্পানির প্রতিনিধিরা অর্ডার নেন। এছাড়া অনেক বড় বড় দোকানগুলোর অসাধু ব্যবসায়ীরা পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১২ শতাংশ ছাড় দিয়ে ওষুধ বিক্রি করে। অপরদিকে প্রেসক্রিপশন ঠিকানা দেখে বা যেকোনো ভবে বুঝতে পেরে দূর থেকে আসা অপরিচিত মানুষদের কাছে ওষুধের মূল্য না জানাই তাদের সাথে প্রতারণা করে ছাড় না দেওয়ার অভিযোগ আছে। এসব কারণে বড় দোকানগুলো ১০ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ বিক্রি করে আসছে। অপরদিকে ছোট ছোট দোকানগুলো দিন দিন লস করতে থেকে মূলধন হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। বন্ধ হয়ে গেছে বহু দোকান। দিশেহারা হয়ে পড়েছে বহু ওষুধ ব্যবসায়ী। ঋণের জর্জরিত হয়ে ঠিকমতো ঋণের কিস্তি না দিতে পারে তারা অনেকেই এখন বাড়ি ছাড়া। এছাড়া গ্রামে ওষুধ কিনতে আসা ওষুধ অধিকাংশ মানুষই বাকি লেনদেন করেন। যা বছরে পর বছর হালখাতা করেও পরিশোধ করে না। চলমান এই অবস্থায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত কঠিন বলে তিনি জানান।

সুলতানপুর এলাকায় ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান জানান, নিয়মতান্ত্রিকভাবে একটি ফার্মেসি পরিচালনা করতে হলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং তিন ধরনের লাইসেন্স প্রয়োজন। একটি ট্রেড লাইসেন্স, একটি ড্রাগ লাইসেন্স, একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত সনদধরী ফার্মাসিস্ট। সাতক্ষীরা পৌরসভা এলাকায় ছোট ফার্মেসির জন্য সাইনবোর্ড কর সহ ট্রেড লাইসেন্স প্রতি বছর নবায়ন করতে তিন হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। প্রতি দুই বছর পর পর ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য প্রায় তিন হাজার টাকার পাশাপাশি বিভিন্ন কাগজপত্র প্রদান করতে হয়। যেখানে প্রতিবছর আয়কর পরিষদের সনদপত্র প্রদান করতে হয়। প্রতি বছর সর্বনিম্ন তিন হাজার টাকা আই কর পরিশোধ করতে হয়। এছাড়া প্রতিটি সাধারণ ফার্মেসির জন্য একজন ট্রেনিং প্রাপ্ত সি ক্যাটাগরি সনদধরী ফার্মাসিস্ট এবং মডেল ফার্মেসির জন্য এ ক্যাটাগরি সনদধরী ফার্মাসিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক। এই ফার্মাসিস্ট সনদপত্র পাঁচ বছর পর পর বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল থেকে নবায়ন করতে হয়। অনলাইনে আবেদনের ১৫ দিন পর সনদধারীকে সশরীরে ঢাকার বাংলা মোটর এলাকায় বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলে সরাসরি উপস্থিত হয়ে সনদপত্র নবায়ন করতে হয়। অনেক সময় একাধিকবার আবেদন করা প্রয়োজন হয়। এছাড়া ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার নিচে ঔষধ সংরক্ষণ করার নিয়ম আছে। বর্তমান আবহাওয়ায় এসি ব্যবহার অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও ব্যায় বহুল।

সর্বোপরি সাতক্ষীরায় চলমান ঔষধের দাম‌ বৃদ্ধিতে একদিকে জনগণের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্যদিকে ব্যাবসায়ীদের বাঁচার লড়াই এর বিকল্প নেই বলে তারা জানিয়েছেন।