কারাগারে ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৭৭, বন্দি ৭০ হাজারের বেশি: কারা মহাপরিদর্শক

- আপডেট সময়- ০৭:০১:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ২৮ বার পড়া হয়েছে

৫ আগস্টের পর জেল ভেঙে পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে এখনও ৭০০ জন পলাতককে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি। এছাড়াও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ও জঙ্গি ৭০ জন পলাতকের মধ্যে ১জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে..!
অনলাইন নিউজ ডেস্ক।।
কারাগারে ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৭৭ বন্দির, কিন্তু সারাদেশে ৭০ হাজার ৬৫ জন কারাগারে বন্দি বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোতাহের হোসেন।
সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে ঢাকার বকশীবাজারে কারা সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ মোতাহের হোসেন বলেন,
এই মুহূর্তে প্রথম শ্রেণির বন্দি আছেন ১৫১ জন, যারা ডিভিশনপ্রাপ্ত। এদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী আছেন ৩০ জন, সাবেক সংসদ সদস্য আছেন ৩৮ জন, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী আছেন ৭০ জন এবং অন্যান্য আছেন ১৩ জন। এর বাইরে একটু বিশেষ বন্দি সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা সংসদ সদস্য সরকারি কর্মকর্তা এমন ২৪ জন আছেন, যারা ডিভিশন পাননি বিভিন্ন কারণে।
গত ৫আগস্টের পর জেল ভেঙে পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে এখনও ৭০০ জন পলাতক আছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি। এছাড়া, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ও জঙ্গি ৭০ জন পলাতকের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ৬৯ জন এখনও পলাতক আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কথা উঠেছে বেশকিছু বিশেষ বন্দি তারা বাসার খাবার খাচ্ছেন, রাজার হালে আছেন। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি কারাগারে ন্যায়সঙ্গত আচরণের প্র্যাকটিস আমরা করছি। শুধু যে বিশেষ বন্দি তা না, যেকোনো বন্দির ক্ষেত্রে আমরা ছাড় দিচ্ছি না।
চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, বাসার খাবার কেউ খেতে পারছেন না, এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। কেউ যদি বলেন বিশেষ বন্দিরা কারাগারে মোবাইলে কথা বলতে পারছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, কয়েকটা কারাগার যেগুলো আমি বিশেষ ব্যবস্থাপনায় রেখেছি, ওখানে তারা কোনোভাবেই মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, অন্য জায়গায় করছেন কি না, কারণ তারা সবসময় আমাদের কাছে থাকে না। অনেক সময় তারা রিমান্ডে যান, অনেক সময় আদালতে যান। আমি শতভাগ কারাগারের ভেতরে নিশ্চয়তা দিতে পারি।
তবে কারাগারকে মাদক এবং মোবাইলমুক্ত করার জন্য গত ৩ মাসে শুধু কেরানীগঞ্জ কারাগারে ২৭৫টি ঝটিকা তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছোট বাটন ফোন এবং মাদক উদ্ধারের কথা সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন তিনি।
কারাগারে বাটন মোবাইল ফোন ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেসব মোবাইল অবৈধ সেসব যেন বাজারে বিক্রি না হয় বা অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয়, সেজন্য আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছি। আর কারাগারে আনা মোবাইলগুলো খুবই ছোট। যা পায়ুপথে আনা হয়। কখনো বডি স্ক্যানারে ধরা পড়ে না। অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় আমাদের।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু গ্রেপ্তারের পর এখন কারাগারে আছেন। সম্প্রতি তার লেখা চিরকুট সোশ্যাল মিডিয়ায় এসেছে। তিনি এজন্য মোবাইল ব্যবহার করেছেন। ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশ করেছেন কারারক্ষীর মোবাইলে। এব্যাপারে জানতে চাইলে কারা মহাপরিদর্শক ব্যাখ্যা করে বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এরপর আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ওনি আমাদের স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ওনি যখন আদালতে এসেছিলেন তখন ওই চিরকুটটি লিখেছেন। প্রিজনভ্যানে যাওয়ার সময় ওটা কারো না কারো উদ্দেশ্য করে থ্রো করেছেন।
তিনি বলেন, মোবাইল যোগাযোগের ব্যাপারে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। অবৈধ মোবাইল ব্যবহারের কথা হয়তো তিনি হাইড করছেন। তবে তার মতো সব বন্দিই কিন্তু নিয়মানুযায়ী সাতদিন পরপর পরিবার ও আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
সম্প্রতি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর ঘোষণা দিয়ে বিক্ষোভ করেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিবৃত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিক্ষোভে যাদের দেখা গেছে তাদের অনেকে জেল পলাতক আসামি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, এই মুহূর্তে জঙ্গি বা তথাকথিত জঙ্গি মাত্র ৬ জন পলাতক। বাকি পলাতকদের মধ্যে কাউকে সেখানে বিক্ষোভে দেখা গেছে কিনা তা আমরা নিশ্চিত নই।
নিউজটি শেয়ার করুন

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ