দু-হাত বিহীন অসহায় রহিমের পাশে দাড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপনা করলেন ডিসি জাহিদুল

- আপডেট সময়- ০৫:৪৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫ ৪৭ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক।।
দুই হাত বিহীন আর্থিক সহায়তা দিয়ে অসহায় রহিমের পাশে দাঁড়ালেন মানবতার ফেরিওয়ালা মানবিক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন নারায়ণগঞ্জের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক(ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টা মাসব্যাপী গাছ সুরক্ষা (গাছ থেকে পেরেক তোলা) কর্মসূচির উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।এসময়
তার সাথে ছিলেন নবনিযুক্ত অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট(এডিএম) নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানবসম্পদ ও উন্নয়ন) মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারি, ঢাকা সামাজিক বন বিভাগ ও ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাহমুদা রোকসানা সুলতানা, সহকারী কাজী মাহিনুর রহমান, জান্নাতুল ফেরদৌস, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. আবু মুন্না প্রমুখ।
প্রস্তুতির মূহুর্তে হঠাৎ হাজির অপরিচ্ছন্ন পোশাকে দুই হাত বিহীন এক যুবক। এসময় জেলা প্রশাসকের সাথে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে বাধা দিলেও চোখ এড়িয়ে যাননি জেলা প্রশাসক, দূর থেকে তিনি খেয়াল করেন পঙ্গু ওই যুবকের দিকে। পরক্ষনেই নিজে এগিয়ে যান ওই যুবকের দিকে, জানতে চান যুবকের কথা..! তখন
যুবককে নিজে থেকে সালাম দিলেন। জেলা প্রশাসক পরিচয় দিয়ে প্রশ্ন করলেন, কীভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি? এসময় ডিসির আচরনে উপস্থিত অনেকেই কিছুটা হতভাগ হয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন। এসময় মানবিক জেলা প্রশাসক যুবকের দুঃখ দুর্দশার কথা শুনে পরেরদিন তাকে অফিসে আসতে বললেন এবং সঙ্গে থাকা স্টাফকে যুবকের বিস্তারিত নাম ও পরিচয় লিখে রাখতে নির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় পঙ্গু ও যুবকের নাম আব্দুর রাহিম(২২)ফতুল্লার উত্তর নরসিংপুর এলাকার বাসিন্দা মরহুম আজিজুল বেপরীর ছেলে।
পরিবারের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, রহিমকে মাদরাসায় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ায় ২০১৫ সালে মাত্র ১০ বছর স্থানীয় একটি হোসিয়ারি কারখানায় শ্রমিকের কাজ দেয় সংসারের হাল ধরে সহায়তা করতে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস কাজে যোগদানের মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই খবর আসে হাই ভোল্টেজ বৈদ্যুতিক শকে দগ্ধ হয়ে যায় রহিমের। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ডাক্তারদের অনেক চেষ্টার পরে জীবন বেচে গেলেও তার দুই হাতই কেটে ফেলতে হয়। এখন জীবিকা নির্বাহ করছে অন্যের কাছে সাহায্য চেয়ে।
এসব পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ করে নারায়ণগঞ্জের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক(ডিসি) মানবতার ফেরিওয়ালা নিজে সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দেন,এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৪ মার্চ) এ অসহায় যুবককে নিজ হাতে ১০ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন এবং ব্যাক্তিগতভাবে আরও নগদ দুই হাজার টাকা দেন অসহায় ওই যুবকের স্ত্রী ও শিশু সন্তানের ঈদের পোশাক কেনার উপহার হিসেবে।
এসময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ডিসি মানবিকতা দেখে চেক গ্রহণকালে কান্নায় ভেঙে পড়েন পঙ্গুত্ব বরণ করা যুবক রহিম।
কান্নাজড়িত কন্ঠে যুবক বলেন, অভাবের তাড়নায় সংসারে ঝগড়া লেগেই থাকে। আমি এভাবে সাহায্য নিয়ে বাঁচতে চাই না। আমাকে সমাজের বিত্তবান কেউ যদি একটা ছোট দোকান করে দিত, তাহলে আমার আমার ছেলেটাকে পড়াশোনা করানোসহ বাকী জীবন কাটাতে পারতাম।
- এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক(ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, সরকারী তহবিলের সীমাবদ্ধতার কারণে আমার ইচ্ছে থাকা সত্বেও পঙ্গুত্ব বরন করা রহিমকে খুব বেশি আর্থিক সাহায্য করতে পারিনি। তবে চেষ্টা করব তাকে আর্থিকভাবে পুনর্বাসন করতে।