সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, উপজেলা প্রশাসন, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, বাংলাদেশ, রংপুর
গাইবান্ধায় সাঁওতাল হত্যাকাণ্ডের বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৫:২৫:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে

ফেরদৌস আলম, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বাগদা ফার্মে সাঁওতাল পল্লীতে সংঘটিত হত্যা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ সকল আসামীর দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার, গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং সাঁওতাল সম্প্রদায়ের পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে গোবিন্দগঞ্জের জয়পুর সাঁওতাল পল্লীতে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল হামলায় নিহত মঙ্গল মার্ডি, রমেশ টুডু ও শ্যামল হেমব্রমের স্মরণে স্মৃতিচারণ, অস্থায়ী শহীদবেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মোমবাতি প্রজ্বালন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন। এছাড়াও গুলিবিদ্ধ ও আহত ভুক্তভোগীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। আদিবাসী বাঙালী সংহতি পরিষদ, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ গাইবান্ধা এবং এএলআরডি’র যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ হত্যাকাণ্ডের পর থমাস হেমব্রম বাদী হয়ে তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে বিচার তো দূরের কথা, মামলার আসামি সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বুলবুল আকন্দসহ অন্য আসামিদের কেউই গ্রেফতার হননি। এছাড়া সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ইক্ষু খামারের সাঁওতালদের বসবাসের ১ হাজার ৮৪২ একর পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার ব্যাপারেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। বক্তারা অবিলম্বে আসামিদের গ্রেফতার ও বিচার, গুলিবিদ্ধ ও আহত ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ এবং সাঁওতাল সম্প্রদায়ের জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক ও জেলা বার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু, নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, এলআরডির প্রতিনিধি আফজাল হোসেন, বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট কুশালাশীষ চক্রবর্তী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, মানবাধিকার কর্মী কাজি আব্দুল খালেক, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোর্শেদ দীপন প্রমুখ। এছাড়াও স্থানীয় সাঁওতাল নেতা প্রিসিলা মুরমু, মাইকেল মার্ডি, বিটিশ সরেন, বার্নাবাস টুডু, সুবাস মুরমু ও কৃষ্ণ মুরমু উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, সম্প্রতি রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাট এলাকায় আদিবাসী সাঁওতাল পল্লীর ব্রিটিশ সরেনের বাড়িতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ একদল লোকের হামলার ঘটনায়ও যথাযথ বিচারের দাবি জানানো হয়।
এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২৩ মার্চ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর সাঁওতাল পল্লীতে হত্যা ও অগ্নিসংযোগ মামলার আসামি আবুল কালাম আজাদ ও অন্যান্য আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। এছাড়া ৭ এপ্রিল জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একই দাবিতে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন যে, সরকার ও প্রশাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে এবং ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ তাদের পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।
নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগস:-

-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ