‘কাউকে অ্যারেস্ট করতে হলে আমাদের অনুমতি নিতে হবে’ নইলে থানা ঘেরাও করা হবে’

- আপডেট সময়- ০৫:২৫:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫ ২১ বার পড়া হয়েছে

কুমারখালী চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার সন্ধ্যায় বক্তব্য রাখেন শেখ রাসেল। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
অনলাইন নিউজ ডেস্ক।।
‘কাউকে অ্যারেস্ট করতে হলে আমাদের অনুমতি নিতে হবে, নইলে থানা ঘেরাও করা হবে’- কুষ্টিয়ার একটি অনুষ্ঠানে দেওয়া একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন বক্তব্য সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ভাইরাল হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে ফেসবুকে এক মিনিট ২২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ঝড় শুরু হয়।
ওই সরকারি কর্মকর্তার নাম শেখ রাসেল। তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, পান্টি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ রেজাউল করিম মিলনের ভাই এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউটের উপপরিচালক। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহে কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও শেখ রাখেলকে বলতে শোনা যায়, ‘কে কী করেছে? কে আওয়ামী লীগ করেছে? সেটা না। সবাই আমাদের মানুষ। সবাই চৌরঙ্গীর মানুষ। এদেরকে পুলিশি অ্যারেস্ট করতে হলে আমাদের কাছে অনুমতি নিয়ে করতে হবে। এর বাইরে যদি একটা মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়, আমরা থানা ঘেরাও করব সবাই মিলে। কিডা কোন দল করেছে এটা দেখার বিষয় না।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জ্বালাময়ী বক্তব্য রাখেন শেখ রাসেল। সেসময় অনেকেই তাঁর বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ করেন এবং রাতে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়।
সেসময় চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিএনপি নেতা শেখ রেজাউল করিম মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও কুষ্টিয়া ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. মিজানুর রহমান, যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী মোল্লা, যদুবয়রা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম আসাদ সহ অন্যান্যরা।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও তে জোড় হাত করে আবেগ আপ্লুত হয়ে শেখ রাসেলকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘আমরা অনেক অন্যায় করেছি। আমরা ছোট ছিলাম। আমরা বুঝিনি। আমাদের ক্ষমা করে দিন। আমাদের সাথে থাকেন। আর একটা অন্যায়ও আমাদের দ্বারা হবে না। মেহেদী রুমীর নেতৃত্বে শেখ সদর উদ্দিনের স্বপ্নের চৌরঙ্গী গড়ার ইচ্ছা আমার। আমাদের সাথে থাকেন।’
এদিকে শেখ রাসেল একজন সরকারি কর্মকর্তা বলে স্বীকার করেছেন। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বক্তব্যটার মাধ্যমে আমি বুঝাতে চেয়েছি কোনো নিরপরাধ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়। তারপরেও যদি অন্যকিছু বলে থাকি তা হলো স্লিপ অব টাং।’
তবে শেখ রাসেলের এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. লুৎফর রহমান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি। বিএনপি তা সমর্থন করে না।’
এমন বক্তব্য সমীচীন নয় বলে মন্তব্য করেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ। তিনি বলেন, ‘পুলিশ কারো কথা মতে চলবে না। পুলিশ তাঁর নিজস্ব গতিতেই চলবে।
সূত্র: সংগৃহীত