সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আন্তর্জাতিক, কলকাতা, কুলাউড়া, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, ভারত, মৌলভীবাজার, সিলেট
সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার অভিযোগে ভারতীয়দের বিরুদ্ধে মামলা
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৩:৩০:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫ ১৮ বার পড়া হয়েছে
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক বাংলাদেশি যুবককে খুন করার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে।
রোববার দুপুরে উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মুরইছড়া সীমান্তে এওলাছড়া বস্তি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে কুলাউড়া থানার এসআই ফরহাদ মাতুব্বর জানান।
নিহত ৪৫ বছর বয়সী আহাদ আলী এওলাছড়া এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় আহাদের স্ত্রী জমিরুননেছা বাদী হয়ে রাতেই কুলাউড়া থানায় একটি মামলা করেন।
নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে কুলাউড়া থানার ওসি মো. গোলাম আপছার জানিয়েছেন।
কর্মদা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাইদুল ইসলাম বলেন, তাদের ইউনিয়নের বড় একটি অংশ সীমান্ত ঘেঁষা। সীমান্তে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে অনেকের জমি রয়েছে। ওইসব জামিতে তারা কৃষি কাজ করে জীবিকা চালান। একইভাবে সীমান্ত এলাকার নো-ম্যান্স ল্যান্ডে ভারতীয় নাগরিকরাও কৃষি কাজ করে।
তিনি বলেন, “এওলাছড়া এলাকার আহাদও নো-ম্যান্স ল্যান্ডে কৃষিকাজ করতেন। তার ওই কৃষি জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে ভারতের এক নাগরিক ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে আহত করে। পরে হাসপাতালে আহাদের মৃত্যু হয়।”
এসআই ফরহাদ বলেন, হত্যার ঘটনায় ভারতীয় নাগরিক হায়দার আলীসহ সাতজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশিও রয়েছেন।
তিনি বলেন, “আহাদ আলীর শ্বশুর বাড়ি ভারতীয় অংশে পড়েছে। সেখানে তার শ্বশুরের জমি রয়েছে। ওই জমির বিরোধ নিয়ে হত্যার মামলার এক নম্বর আসামি হায়দার আলী ও তার গং বাংলাদেশে ঢুকে আহাদের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।
“তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।”
কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিলভেস্টার পাঠাং বলছেন, শ্বশুরবাড়ির জমি নিয়ে বিরোধের জেরেই আহাদকে কোপানো হয় বলে এলাকাবাসী তাকে জানিয়েছেন। বাংলাদেশের ভেতরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে এবং এ বিষয়ে দ্রুত পতাকা বৈঠকে কৈফত চাওয়া হবে।
কর্মধা ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মাহমুদা আক্তার বলেন, “ঘটনাটি আমার এলাকায় হয়েছে। এলাকাবাসীর কাছে শুনেছি, হায়দার আলী নামে এক ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে আহাদের প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়।
“পরে হায়দার তাকে কুপিয়ে জখম করে। হায়দারের সঙ্গে আহাদের আত্মীয়তাও রয়েছে বলেও শুনেছি।”
এ ব্যপারে বিজিবি’র প্রেস রিলিজ:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক মোঃ হায়দার আলীর ধারালো দা-এর আঘাতে আহাদ আলী (৪৫) নামের এক বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হয়েছেন। নিহত আহাদ আলী মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা এ্যাওলাছড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে।
গত সোমবার (২৭শে জানুয়ারি) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তথ্য জানানো হয়।
গত ২৬শে জানুয়ারি দুপুরে বিজিবির শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়ন (৪৬ বিজিবি) এর অধীনস্থ মুড়াইছড়া বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত পিলার ১৮৪৩/৩৪-এস হতে ০৫ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বাংলাদেশী নাগরিক মোঃ আহাদ আলী ও তার ভগ্নিপতি এবং ভারতের উনুকোটি জেলার গজাটিলা থানার পূর্ব ইরানী গ্রামের মৃত ইয়ামির আলীর ছেলে মোঃ হায়দার আলীর মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভারতীয় নাগরিক মোঃ হায়দার আলী ধারালো দা দিয়ে বাংলাদেশী নাগরিক মোঃ আহাদ আলীর মাথায় আঘাত করে। পরবর্তীতে বিকেল ০৩.৫০ টায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহাদ আলী মৃত্যুবরণ করে।
ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, বাংলাদেশী নাগরিক মোঃ আহাদ আলী ভারতের উনুকোটি জেলার গজাটিলা থানার পূর্ব ইরানী গ্রামের জাবেদ আলীর মেয়ে জমিরুন নেছা (৪৫)-কে বিবাহ করে। অপরদিকে, ভারতের উনুকোটি জেলার গজাটিলা থানার পূর্ব ইরানী গ্রামের মৃত ইয়ামির আলীর ছেলে মোঃ হায়দার আলী মোঃ আহাদ আলীর বোন কুতুবুন নেছা (৪০)-কে বিবাহ করে। সেই সূত্রে আহাদ আলী ও হায়দার আলী পরস্পর পরস্পরের শ্যালক-ভগ্নিপতি।
জানা যায়, সীমান্ত পিলার ১৮৪৩ এর নিকট বাংলাদেশী নাগরিক আহাদ আলীর শশুর জাবেদ আলীর ০৮ বিঘা চাষাবাদের জমি রয়েছে যা মোঃ হায়দার আলীর মাধ্যমে বিভিন্ন বাংলাদেশী নাগরিকদের নিকট বর্গা দেয়া হয়। মোঃ আহাদ আলী বর্ণিত ০৮ বিঘা জমি নিজ দখলে নেয়ার জন্য তার ভগ্নিপতি মোঃ হায়দার আলীর সাথে গত ২৬ জানুয়ারি সীমান্ত পিলার ১৮৪৩/৩৪-এস এর নিকট বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তার ভগ্নিপতি মোঃ হায়দার আলী ও সংগীয় ০৩/০৪ জন ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক (সম্বন্ধী) মোঃ আহাদ আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে সে গুরুতরভাবে আহত হয়। আহত মোঃ আহাদ আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল, সিলেটে প্রেরণ করা হলে চিকিৎসারত অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে।
এ প্রেক্ষিতে কুলাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে যার মামলা নম্বর ২২/২০২৫ তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০২৫। প্রাথমিক তদন্তে উক্ত হত্যার ঘটনাটি জমিজমা সংক্রান্ত এবং পারিবারিক কলহের কারণে সংঘটিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান।
এ ব্যাপারে বিজিবি’র পক্ষ থেকে বিএসএফের নিকট অভিযোগ জানানো হয়েছে এবং বিএসএফও এ ব্যাপারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে বিজিবিকে আশ্বস্ত করেছে।
নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগস:-
-
সর্বশেষ সংবাদ
-
জনপ্রিয় সংবাদ