সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আইন-আদালত, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক), দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, বাংলাদেশ, শ্রীমঙ্গল, সিলেট
শ্রীমঙ্গলে শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র বন্ধ রেখেও দেদারসে তুলছেন বেতন-ভাতা
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৩:৫৯:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফুসকুড়ি চা বাগানে শ্রম কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও শ্রম অধিদপ্তরের অধীনস্থ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের অনিয়ম দূনীতির অভিযোগ উঠেছে। এখানে মেডিকেল অফিসারসহ ১২ টি পদের মধ্যে কর্মরত মাত্র ২জন কর্মচারী তাও ঈদের চাঁদ এর মতো। খাতা কলমে রয়েছে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক তিনি হলেন নিবাস চন্দ্র পাল,সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে অতিরিক্তি দায়িত্বে ফুসকুড়ি চা বাগানের শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়োগ থাকলেও বিগত ৬ বছরেও দেখা মিলে নি একদিনও এমন অভিযোগ করেন বাগানে বসবাসরত চা শ্রমিকেরা। আর উনার পরিবর্তে মাঝে মধ্য শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের অফিস খুলেন ফার্মাসিষ্ট তিনিও নিবাস চন্দ্র মনগড়া সকল রোগের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।
শ্রম কল্যাণ সংগঠক কবির আহমদের উপর স্থানীয়দের অভিযোগের অন্ত নেই। তিনি সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করেও দীর্ঘ ৮বছর ধরে কাজ করছেন উপজেলার রাজঘাটের সীমান্ত এলাকায়। তার নিজস্ব দু’টি লেবু বাগানে। শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের ভিতরে ২টি কোয়ার্টারে রেখেছেন ২ স্ত্রীকে। কবীর আহমেদ সেখানে শুধু রাত্রি যাপনই করে থাকেন। ভোরে ঘুম থেকে উঠেই চলে যান মোটরসাইকেল যোগে নিজস্ব লেবু বাগান পরিচর্যাসহ ব্যবসার তাগিদে ফিরে আসেন রাতে। ফুঁসকুড়ি চা বাগানে শ্রমিকদের চিকিৎসা ও বিনোদন কেন্দ্রর জন্য স্থাপন করা হয় এই শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটি কিন্তু প্রতিনিয়ত তাও বন্ধ থাকে। এই কেন্দ্রে চা বাগানের ছেলে মেয়েরা ইনডোর খেলাধুলা বা বই পড়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তাও কপালে নেই। বাস্তবে চা শ্রমিকদের কোন কাজে আসছে না কেন্দ্রটি।
অসহায় চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য তাদের পরিবারের লোকজনের চিকিৎসার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো এই শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র কিন্তু দায়িত্বরত কর্মকর্তা কর্মচারীর অবহেলায় অচল অবস্থায়।এখানে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদে নিয়োগ থাকা সত্ত্বেও দেখা মিলেনি ৬ বছর ধরে তার। অত্র এলাকায় আর কোন স্থায়ী চিকিৎসক ও নেই। অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার সপ্তাহে ২ দিন রোগী দেখার কথা থাকলেও এপর্যন্ত তার দেখা পায়নি একদিনও এমনটাই অভিযোগ চা শ্রমিকদের। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে দীর্ঘ দিন এই শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন।
ফুসকুড়ি বাগানের চা শ্রমিক বিজয় পাল, রাজিব বুনার্জি, পিংকু বুনার্জি, নিপেন বুনার্জি, মনি বুনর্জি, রিংন্কু বুনার্জি, মো: জরিন আহমদ, লিটন দাশ বলেন, আমরা চা শ্রমিক নিন্ম আয়ের মানুষ। ভাল ডাক্তার দেখানোর সামর্থ আমাদের নেই। শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে আসি শিশু সন্তান নিয়ে। ডাক্তার পাওয়া যায় না। প্রায় দিনই বন্ধ থাকে। ডাক্তারের নামে ফার্মাসিস্ট আমাদের মাঝে মধ্যে এসে অফিস খুলে ঔষধ দিয়ে কোথায় জানি চলে যান আর মিলে না তারও দেখা। সর্ব রোগের ঔষধ হিস্ট্রাসিন,প্যারাসিটামল,মেট্ রিল আর কিছু এন্টিবায়োটিক। তাও এন্টিবায়োটিকের কোন মাত্রা নেই। শিশুদের ক্ষেত্রে যা, বড়দের ক্ষেত্রেও তা। এছাড়াও সংগঠক কবির আহমদ তার অফিসের কক্ষ কখনো খুলেন নি। যার কারনে খেলা ধুলা কিছু করা যায় না। এমনকি বই পড়ার খেলাধুলার সুযোগ থাকলেও শিক্ষিত ছেলে মেয়ে বই পড়া খেলাধুলা করতে পারেনি। কবির আহমদ এর ২ টি লেবু বাগান করেছে। সে সবসময় তার লেবু বাগানে নিয়ে ব্যস্থ থাকে। এছাড়াও শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের কোয়ার্টারে থাকার কারনে শ্রম কল্যান কেন্দ্রের বড় বড় গাছও গোপনে বিক্র করেছেন। বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সুনিল তাতীঁ বলেন, ডাক্তার নিবাস চন্দ্র পালের দেখা আমরা পাইনা। শুনেছি তিনি শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদপ্তর অফিসে বসেন। এখানে তিনি অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন। এছাড়াও শ্রীমঙ্গল তার একটি পলিক্লিনিক পরিচালনা করেন। মাঝে মধ্যে ফার্মাসিষ্ট এখানে রোগী দেখেন। ঔষধের ৩৫/৩৬ টি আইটেমের পর্যাপ্ত পরিমান থাকলেও রোগীকে শুনতে হয় ঔষধ নাই। সংগঠক কবির আহমদ কোয়ার্টারে থাকলেও অফিস খুলেন নি একদিনও। নিজস্ব লেবু বাগানে সময় দেন।
এব্যাপারে শ্রম কল্যাণ সংগঠক কবির আহমেদ বলেন,অফিস আমি খোলা রাখিনা কথাটি সঠিক নয়। আর লেবু বাগান করা দোষের নয়। এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। তা হলে অফিসের সময় পাওয়া যায়না কেন? প্রশ্ন করলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
ডা: নিবাস চন্দ্র পাল বলেন, আমার প্রথম পোষ্টিং ফুসকুড়ি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে ছিল। আর আমি ফুসকুড়ি শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে যাইনা অভিযোগটি ঠিক নয়। বর্তমানে আমি অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি। সপ্তাহে ২ দিন সেখানে যাই। আমাকে এই দায়িত্ব থেকে সরানোর জন্য বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি। আর কেন্দ্রে ১২ টি পদের বিপরীতে লোক আছে ২ জন। এই শূন্য পদে লোক নিয়োগের জন্য বারবার লিখেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিয়োগ না দিলে কি করবো। শ্রম কল্যাণ সংগঠক কবির আহমদের বিষয়ে আমি কোন অভিযোগ পাইনি। জানতে পারলাম এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। এব্যাপারে শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলামের সাথে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ, তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।