সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আবহাওয়া ও জলবায়ু, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, দেশজুড়ে, বাংলাদেশ, মুন্সিগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জ শহরের প্রধান সড়কগুলোর অধিকাংশরই বেহাল দশা
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৬:১৫:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪ ৩১ বার পড়া হয়েছে
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
মুন্সীগঞ্জ শহরের প্রধান সড়কসহ অধিকাংশ সড়কই বেহাল।সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পৌরবাসীসহ হাজার হাজার যাত্রী।এলাকাবাসীর অভিযোগ,গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর দুরবস্থা ও চলাচলকারীর ভোগান্তির দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর নেই।পৌরসভার তথ্যমতে,খাতা-কলমে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভাটিতে ১ লাখ ১২ হাজারের বেশি মানুষ রয়েছে।এ ছাড়া বাইরে থেকে আসা অনেকে সড়ক ব্যবহার করেন। ১০ কিলোমিটার আয়তনের পৌর এলাকায় ৬০ কিলোমিটার কার্পেটিং সড়ক রয়েছে।স্থানীয়দের অভিযোগ,অধিকাংশ সড়কেই রয়েছে খানাখন্দ। এতে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে।গতকাল মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জ শহরে প্রবেশের প্রধান পথ হিসেবে পরিচিত হাসপাতাল সড়কে গিয়ে দেখা যায়,জেলা শহরে প্রবেশের প্রধান সড়কটির আধা কিলোমিটারের বেশি অংশ জুড়ে বড় বড় গর্তসহ অজস্র খানাখন্দ।মানিকপুর এলাকায় বড় অংশে উঠে গেছে পিচ ঢালাই।ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বৃষ্টি নামলে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।এই সড়কেই রয়েছে জেলার প্রধান চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল।রাস্তা ভাঙাচোরা থাকায় সব শ্রেণিপেশার মানুষ ছাড়াও সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।
আরও দেখা গেছে,শুধু এই সড়ক নয়,শহরের প্রধান সড়কসহ পৌরসভার অন্যান্য সড়কগুলোরও একই দশা।সুপার মার্কেট থেকে পুরাতন কাচারী,জুবলী সড়কের একাধিক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সেখানে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।শহরবাসীর অভিযোগ,সড়কগুলোর কোনো সংস্কার করছে না কর্তৃপক্ষ।এর সঙ্গে হাসপাতাল সড়কের নিচে গ্যাসলাইনে রয়েছে লিকেজ।লিকেজ থেকে প্রায়ই গ্যাস বের হওয়ায় অবস্থা হয়ে উঠেছে আশঙ্কাজনক।মানিকপুর এলাকার বাসিন্দা আকরাম হোসেন বলেন,রাস্তার নিচ দিয়ে গ্যাসলাইনে লিকেজ আছে।সেখান দিয়ে গ্যাস বের হয়।মেরামত করলেও কয়েক দিন পর আবারও একই অবস্থা।হাজার হাজার মানুষ চলে এই সড়কে।তারা স্থায়ীভাবে সড়কের সংস্কার চান বলে জানান তিনি।মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সুমনা ইসলাম জানান,মানুষ চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে আসে এই রাস্তা দিয়ে।কিন্তু রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে, রোগীরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যায়।হাসপাতালে অনেক প্রসূতিও আসে,তাদের তো জীবন যায় যায় অবস্থা।দ্রুত এ সড়ক সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
সুপার মার্কেট মোড়ে কথা হয় মিশুকচালক কুদ্দুস মিয়ার সঙ্গে।রাস্তার খারাপ অবস্থা নিয়ে তারও আক্ষেপের শেষ নেই।রাস্তার ছোট-বড় গর্তে পড়ে প্রায়ই তাঁর গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে।
মিশুকচালক আমির বলেন,এটা একটা শহরের রাস্তা হইল?কেউ কি দেখে না?পৌরসভার রোলার মেশিনসহ রাস্তা ঠিক করার সবই তো আছে।তাও ঠিক করে না।গাড়ি নিয়ে বের হলে ঝাঁকুনিতে কোনো দিন ব্যাটারি খুলে পড়ে,কোনো দিন আবার ব্রেক ভাঙে।আমাদের থাকতে হয় চিন্তায়।
ঐতিহ্যবাহী সরকারি হরগঙ্গা কলেজের ছাত্র জান্নাতুল নাঈম বলেন,এমন ভাঙাচোরা রাস্তায় চলতে অনেক কষ্ট হয়।অনেক সময় ভাঙার কারণে গাড়ি নষ্ট হলে যানজট তৈরি হয়।ঝাঁকুনি খেতে হয়, দেরিও হয়।সবার দাবি শহরের সব রাস্তার টেকসই সংস্কার করা হোক।ভাঙাচোরা সড়কের বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী বলেন,পৌরসভার অনেক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত, মানিকপুরে হাসপাতালের সড়কটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।একই সঙ্গে হাট লক্ষ্মীগঞ্জের রেড ক্রিসেন্ট ভবন থেকে জেলা পরিষদ সড়কটিও মেরামত প্রয়োজন।গুরুত্বপূর্ণ দুটি সড়কের অস্থায়ী সংস্কারের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।আর স্থায়ী সংস্কারেরও পরিকল্পনা রয়েছে।পৌর এলাকার সব সড়ক সংস্কার ও নির্মাণে ২৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্যাকেজের পরিকল্পনা চলছে।অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক মৌসুমী মাহবুব বলেন,গ্যাসলাইন লিকেজের বিষয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।তাদের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।দ্রুত জনভোগান্তির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।