সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, ক্যাম্পাস নিউজ, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, বাংলাদেশ, মুন্সিগঞ্জ, শিক্ষাঙ্গন
মুন্সীগঞ্জের যতীন্দ্র মোহন স্কুলে ঘটে যাচ্ছে একের পর এক নৈরাজ্য-বিশৃঙ্খল
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ১১:১৭:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪২ বার পড়া হয়েছে
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
কোচিং বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে কতিপয় শিক্ষক সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় মুন্সীগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন গভ. গার্লস হাই স্কুলে ঘটে যাচ্ছে একের পর এক বিশৃঙ্খল ঘটনা।শিক্ষকের পক্ষ-বিপক্ষে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন,শিক্ষককে হেনস্তা,চাপের মুখে শিক্ষকের বদলীর আবেদন আদায় করার ঘটনা নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।মূলত কোচিং বাণিজ্য নিয়ে শিক্ষকরা বিরোধে জড়িয়ে পড়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় বর্তমানে বিদ্যালয়ে মারাত্মক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম।একাধিক অভিভাবক জানিয়েছেন,কোচিং বাণিজ্য নিয়ে শিক্ষকদের বিরোধের ঘটনায় কতিপয় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিপক্ষে ব্যবহার করেছে।এটা দিবালোকের মত স্পষ্ট।আর কোচিং বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতেই কতিপয় শিক্ষকদের ইন্ধনে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একের এক বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটছে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন কতিপয় শিক্ষক।তাই কোচিং বাণিজ্যের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন ধরে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং চলছে।আর সরকার পতনের পর ওই গ্রুপিং আরো ভয়াবহ আকার ধারন করে।বিদ্যালয়ের শিক্ষক আরিফ হোসেন,গফুর সরকার,রাসেল আহমেদ,আ.ন.ম মাহফুজসহ একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে ২৯ জন শিক্ষক গত ১ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে মনোরঞ্জন ধরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করে৷এছাড়া একই দিন শিক্ষক মনোরঞ্জন ধরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভসহ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দাখিল করে কতিপয় শিক্ষার্থী।এর প্রতিবাদে পরদিন ২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের অপর শিক্ষার্থীরা মনোরঞ্জন ধরের পক্ষে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন,পুলিশ সুপার ও সেনা ক্যাম্পে পাল্টা স্মারকলিপি প্রদানসহ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে।এতে জেলা প্রশাসক ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দেন৷এর প্রেক্ষিতে ৫ সেপ্টেম্বর তদন্ত চলাকালীন সময় শিক্ষক সিন্ডিকেট সমর্থিত শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে এবং চাপে ফেলে মনোরঞ্জন ধরের কাছ থেকে বদলীর আবেদন আদায় করে নেয়।অনুসন্ধানে জানা গেছে,কোচিং বানিজ্য নিয়ে বিরোধের জের ধরেই মব জাস্টিসের মাধ্যমে শিক্ষক মনোরঞ্জন ধরকে হেনস্তা করে প্রতিপক্ষ শিক্ষকরা।আরও জানা গেছে,গত বছরের অক্টোবরে অপর এক শিক্ষকের বদলি আদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে ইন্ধন দিয়েছে একই শিক্ষকরা।তাদের সঙ্গে মাকহাটি জিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক রয়েছে।তারা তাদের নিজ নিজ কোচিংয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে।অপরদিকে একই ভাবে মনোরঞ্জন ধরও তার কাছে প্রাইভেট পড়া শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে বলেও জানা গেছে।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান,বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত।তাদের কোচিং বাণিজ্য লাখ লাখ টাকা আয় হওয়ায় সিন্ডিকেট বানিজ্য ধরে রাখতে যে কোন বাধাকেই উপরে ফেলতে পারে।সাম্প্রতিক সৃষ্ট ঘটনার মূলে রয়েছে এই কোচিং বাণিজ্যে।বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মতে,দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার সুবাধে এবং অবাধ কোচিং বাণিজ্যে করে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ায়,শিক্ষকরা এখন জড়িয়ে পড়ছে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে।দ্রুত কোচিং বাণিজ্যে বন্ধে পদক্ষেপ না নিলে,সামনে আরো ভয়ংকর কিছু ঘটার আশংকা করছেন কেউ কেউ।দ্রুত এই দুই গ্রুপের শিক্ষকদের এভিজেএম সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে দেয়া উচিত বলে মনে করছেন অভিভাবক মহল।এবিষয়ে মনোরঞ্জন ধর বলেন,কতিপয় শিক্ষক ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামিয়েছে।এই ঘটনার মাষ্টার মাইন্ড শিক্ষক আরিফ হোসেন ও আবদুল গফুর সরকার।
অভিযোগ প্রসঙ্গে শিক্ষক আরিফ হোসেন বলেন, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।এর সঙ্গে তিনি জড়িত না।এছাড়া এ ঘটনার সাথে কোচিং বাণিজ্যের কোন সম্পৃক্ততা নেই।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরে আলম বলেন, আমি বিদ্যালয়ে যোগদান করার আগে থেকেই শিক্ষকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল।এর জের ধরেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির তৈরী হয়।এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তদন্ত চলছে।