ঢাকা ১২:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
ভোটের অধিকার ফিরে পেয়ে মানুষ ধানের শীষে ভোট দিতে উদগ্রীব: গণসংযোগে মাসুদুজ্জামান বিএনপি নেতা মুকুলের বাসায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান নারায়ণগঞ্জে রমজান হত্যারসহ একাধিক মামলার অন্যতম আসামি লিমন গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ায় আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কৃষক গাইবান্ধায় ১০ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ভাঙল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলায় টেকনাফে কোস্ট গার্ডের অভিযানে ৪২ হাজার ইয়াবাসহ আটক-১ নির্বাচনী কার্যক্রমকে সুসংগঠিত ও গতিশীলতা আনতে নারায়ণগঞ্জ-৫ এ-র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন নরসিংদীতে ভিন্ন কৌশলে গাঁজা বহনকালে আটক-২ বাংলাদেশিদের জন্য কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে ব্রিটিশ হাইক‌মিশন কারাবন্দি সাবেক নাসিক মেয়র আইভী আরও ৫ মামলায় গ্রেপ্তার গভীর রাতে নিজ বাসা থেকে সাংবাদিক সোহেলকে তুলে নিয়ে গেছে ডিবি মাসুদুজ্জামান’কে ধানের শীষে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত ‘সুন্দর ও সঠিক’ হয়েছে টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ২০হাজার ইয়াবাসহ মাদক সম্রাট নূর ফয়েজ গ্রেপ্তার মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক হিসেবে তৌহিদুজ্জামান পাভেলের যোগদান চট্টগ্রামে যোগ দিলেন নতুন জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা ‘আই ডোন্ট কেয়ার’ লেখা ফটোকার্ড পোস্ট, ঢাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার আটক পল্লবীতে প্রকাশ্যে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের বিচারের রায় নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্বেগ জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন শেখ হাসিনার রায় নিয়ে যা বলছে শেখ হাসিনার সাজা ও প্রত্যর্পণ বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিশ্লেষণ সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে না’গঞ্জ-৩, তারেক জিয়াকে উপহার দিতে পারব: মান্নান নান্দাইলে নবনিযুক্ত ইউএনও’কে ফুল দিয়ে বরন করে নিল কৃষকদল উখিয়ায় র‍্যাবের অভিযানে ৮৯ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার-২ কমলগঞ্জে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কুষ্টিয়ায় চাঞ্চল্যকর আরিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার-৩ বড়লেখার অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাময় বেকি লেক পর্যটকদের হাতছানি দিচ্ছে  নারায়ণগঞ্জে র‍্যাব সদস্যকে ছোড়া গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে নারী গুলিবিদ্ধ সব ভূলে অসুস্থ টিপুকে দেখতে ছুটে গেলেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান ’প্রাইজ পোস্টিং’ পেয়ে আবেগাপ্লুত বিদায় নিলেন ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা  কুষ্টিয়া-২ আসন শহিদুল ইসলামকে বিএনপির প্রার্থী করার দাবিতে মানববন্ধন গাইবান্ধায় মাদ্রাসা সুপারের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন টেকনাফ ভুমি অফিস পরিদর্শনে ভুমি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ‘আমাকে খুঁইজেন না, বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে আছি, ভালো আছি’ পুলিশকে নিখোঁজ তরুণীর বার্তা নান্দাইলে ৪’শ বছরের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে অনুষ্ঠিত হলো পারিবারিক মেলবন্ধন তৃতীয় লিঙ্গের মডেল জারার বিরুদ্ধে ফেসবুকে অপপ্রচার,থানায় জিডি চকরিয়ায় র‍্যাবের অভিযানে শীর্ষ ডাকাত সাইফুলের বসত ঘরে থেকে অস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার না’গঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় কৃষকদল নেতার ওপর হামলা ও গুলি ছোড়ার অভিযোগ প্রার্থী বারবার ছুটে গেলেও, দলীয় সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করলেন মনোনয়ন বঞ্চিতরা পঞ্চমীঘাটে স্কুল শিক্ষক লাঞ্ছনাসহ হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ সভা টেকনাফে পৃথক অভিযানে চিহ্নিত ২ আসামি গ্রেপ্তার ফরিদপুরে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ভাংচুর মামলায় গ্রেপ্তার-২২ ত্রিভুজ প্রেমের বলি আশরাফুল, হত্যার দুদিন পর মরদেহ ২৬ খন্ড করে ফেলে যায় ধানমন্ডি ৩২’এ মারধরের শিকার নারীকে জুলাইয়ে হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে নারায়ণগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মামুন হত্যা মামলার আসামি সুমন গ্রেপ্তার ১০ হাজার কর্মীসমর্থকদের নিয়ে মাসুদুজ্জামানের আনন্দ শোভাযাত্রা-গনমিছিল  নির্বাচিত হলে সরকারী বরাদ্দের অর্থের ৫ টাকাও দূর্নীতি করতে দিবো না: কাসেমী বিবিসিতে দেয়া সাক্ষৎকারে হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ সুস্পষ্টভাবে অস্বীকার করেন মাত্র ২৯ দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রামের নতুন ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা একদিনে ২৩ জেলায় নতুন ডিসি, ঢাকা-গাজীপুরে ফের বদল টেকনাফে কোস্টগার্ডের অভিযানে বিপুল পরিমাণে ইয়াবাসহ আটক-১ টেকনাফে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৪০ হাজার ইয়াবা জব্দ কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২ নারী শ্রমিক নিহত বদলি হয়ে গেলেন নারায়ণগঞ্জের ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা মাত্র একদিনেই ঐক্যের বার্তা নিয়ে চমক দেখালেন মাসুদুজ্জামান ঐক্যের বার্তায় এক সূত্রে মেলবন্ধনে গাঁথলেন টিপু ও মাসুদ সাবেক কাউন্সিলর খোরশেদকে পাশে নিয়ে মাসুদুজ্জামানের গণসংযোগ বন্দরবাসীর যৌক্তিক চাহিদা পূরনে পাশে থাকার আশ্বাস মাসুদুজ্জামানের বর্ণাঢ্য আয়োজনে নারায়ণগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত উখিয়ায় ১৯ কেজি গাঁজাসহ আটক-১ টেকনাফে অস্ত্রসহ ২ রোহিঙ্গা ডাকাত আটক ফতুল্লায় নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে ৫ আ’লীগ কর্মী গ্রেপ্তার  ঈর্ষান্বিত হয়ে কুচক্রীমহল পরিকল্পিতভাবে ভয়েজ এডিট করে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে: মান্নান নারায়ণগঞ্জে  সাপ্তাহিক ‘ক্লিনিং ডে’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক মিট দ্যা প্রেস’এ তার বিরুদ্ধে সকল অপপ্রচারের উপযুক্ত জবাব দিলেন মাসুদুজ্জামান বিদেশ থেকে ফিরেই সাবেক এমপি কালামের বাড়িতে ছুটে গেলেন মাসুদুজ্জামান তোলারাম কলেজে তোপের মুখে বিকেএমইএ সভাপতি হাতেম নাসিক সিইও জাকির হোসেনের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন টেকনাফ এসিল্যান্ডের অভিযান রঙ্গিখালী খাল উদ্ধার  কক্সবাজারে র‍্যাবের অভিযানে গাঁজা ও ফেন্সিডিলসহ আটক-১ না ফেরার দেশে বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র না’গঞ্জে যুবলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তারের ৩ দিনের মাথায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যু, প্যারোলে জানাজায় টেকনাফে কোস্টগার্ডের অভিযান: সিএনজিসহ ১০ হাজার ইয়াবা জব্দ আটক-১ রায়পুরায় এক হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার-১ কুষ্টিয়ায় শহিদুল ইসলামকে বিএনপির প্রার্থী করার দাবিতে মহাসড়কে বিক্ষোভ টঙ্গীতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার হয়ে চার আঙুল হারালো যুবক ইসলামী দল মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারে না: মাও. মিজানুর রহমান দেশের ২৯ জেলায় ডিসি নিয়োগ; এদের মধ্যে ২১ জনই নতুন মুখ রাজধানীতে পৃথক স্থানে দুটি বাসে আগুন মৌলভীবাজারে বিএনপি’র বৈঠকে “জয় বাংলা”শ্লোগানে তোলপাড়  গাইবান্ধায় বিএনপির ‘দুই নেতার সংঘর্ষের আভাসে ১৪৪ ধারা জারি  ফের ১৪ জেলায় নতুন ডিসি নন-এমপিও শিক্ষকদের ঘেরাও কর্মসূচীতে পুলিশের লাঠিচার্জ-জলকামান আইভীর ৫ মামলায় হাইকোর্টে জামিন লাভ, কারামুক্তিতে আর বাঁধা থাকলো না অবশেষে গিয়াসউদ্দিনের কাছে দোয়া নিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ এর বিএনপির মনোনিত প্রার্থী মান্নান বিজয় ও রাশমিকা মান্দানার বিয়ের গুঞ্জন বিশ্বজুড়ে চাউর ৮ ডিসিকে যুগ্মসচিব হিসেবে পদায়ন ঈশ্বরদীতে শাহ্ সুফি কালাচাঁদ ফকিরের ১৪তম ওফাত দিবসে ওরশ মোবারক মোংলার পশুর নদীতে ইঞ্জিন চালিত বোট উল্টে  আমেরিকা প্রবাসী নারী পর্যটক নিখোঁজ সেন্টমার্টিনের ছেড়া দ্বীপে কোস্ট গার্ডের অভিযান: ট্রলিং বোট ও থাই জালসহ ১৯ জেলে আটক চকরিয়ায় হাইয়েস গাড়ি নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৪ ডাকাত গ্রেফতার দেশের ১৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দিয়ে মধ্যরাতে প্রজ্ঞাপন জারি শীতলক্ষ্যা নদীতে নিখোঁজের ১২ ঘন্টা পর যুবকের মরদেহ উদ্ধার অঘোষিত নারায়ণগঞ্জ-৪, আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিতে মরিয়া শাহ্ আলম সোনারগাঁয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ: এটি পারিবারিক বিবাদ,এর দায় বিএনপি নিবেনা: মান্নান “এআই যুগে মানুষের সৃজনশীলতার নতুন সংজ্ঞা”–সাদিয়া ইসলাম ইরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ডন হারুন টেকনাফে প্রকাশ্যে দেদারসে ঘুরে বেড়াচ্ছে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে সাবেক এমপি কালামপুত্র আশা’র নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র‍্যালী জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে মাসুদুজ্জামানের পক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালী ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত শরণখোলায় শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় বিএনপি নেতা ড.ওবায়দুল ইসলাম বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ফরিদপুর জেলা পশ্চিমের শাখা প্রতিনিধি বৈঠক অনুষ্ঠিত

ঢাবিতে তোফাজ্জল হ*ত্যা*র নেপথ্যের কারা..?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ১২:৩২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০১ বার পড়া হয়েছে

 

অনলাইন ডেস্ক।।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন এক ব্যক্তি। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, নিহত ওই ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল। তাঁর বাড়ি বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে জানা গেছে।
হল সূত্রে জানা যায়, মূলত মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে ঘটে এ ঘটনা। দুপুরে হলের মাঠে শিক্ষার্থীদের মধ্যকার ক্রিকেট খেলা চলাকালীন ৬টা মোবাইল চুরি হয়ে যায়। পরবর্তীতে খেলা চলাকালীন ৮টার দিকে তোফাজ্জল হলে ঢুকলে তাঁকে আটক করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের ধারণা, তোফাজ্জলই মোবাইল চুরি করছে। তাকে গেস্টরুমে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং হালকা মারধর করেন শিক্ষার্থীদের কয়েকজন। পরবর্তীতে তাকে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে আবারো গেস্টরুম নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্যহীন জানার পরেও তাঁকে ছাড়েননি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম, সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাদের নানাভাবে বোঝানোর চেস্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

 

অনুসন্ধান ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, তোফাজ্জলকে সবচেয়ে বেশি মারধর করেছেন ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগ করা উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ফিরোজ, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের আব্দুস সামাদ, ফার্মেসি বিভাগের মোহাম্মদ ইয়ামুজ জামান এবং পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনিস্টিউটের মোত্তাকিন সাকিন। এরা সবাই ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থী।
আরেকটি সূত্র জানায়, প্রাণীবিদ্যার শিক্ষার্থী সুলতান প্রথমে চোর সন্দেহে তাকে ধরে গেস্টরুমে নিয়ে আসে। সূত্রটির তথ্যমতে, মারধরে জড়িত ছিলেন- মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের, রাশেদ কামাল অনিক, গণিত বিভাগের রাব্বি এবং সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের ওয়াজিবুল।
হলের প্রত্যক্ষদর্শী একজন শিক্ষার্থী ঘটনা বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমি হল গ্রুপে ৮টার সময় দেখি হলে চোর ধরা পড়েছে। হলের গেস্ট রুমে, গিয়ে দেখি চোর বসা। রুমে তখন ফার্স্ট ইয়ার, সেকেন্ড ইয়ারের অনেক ছেলে ছিল। গেস্টরুমে তাঁকে বেশি মারা হয়নি। ওখানে হালকা মারার পরে ক্যান্টিনে নিয়ে আসে খাওয়ানোর জন্য। তারপর শুনি তাঁকে এক্সটেনশন বিল্ডিং এর গেস্ট রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি তখন ওখানে গিয়ে দেখি ২০-২১, ২১-২২ ও ২২-২৩ সেশনের ব্যাচ। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ জন। ফার্স্ট ইয়ার যে ব্যাচটা ছিল, ওরা মারে নাই। ২০-২১ আর ২১-২২ সেশনের ওরা খুব বেশি মেরেছে।’
তিনি আরও জানান, ‘দুই-তিনজন মিলেই ওরে ওখানে মেরে ফেলছে। এরা হলেন-মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের ২০-২১ সেশনের মোহাম্মদ সুমন, ওয়াজিবুল, ফিরোজ ও জালাল। এদের মধ্যে সুমন, ফিরোজ এবং জালাল সবচেয়ে বেশি মেরেছে। গেস্ট রুমে চোরের হাত বেঁধেছে জালাল। সুমন চোখ বন্ধ করে মেরেছে তাঁকে, মারতে মারতে ও (তোফাজ্জল) পড়ে গেছে। এরপরে পানি এনে তাঁকে পানি খাওয়ানো হলে সে উঠে বসে। এসময় সবাই হাততালি দেয়।’
ওই শিক্ষার্থী বলেন, “সবাই খুশি হয় কারণ তাঁকে আবার মারতে পারবে। এরপর আবার শুরু হয় পেটানো। এই দফায়ও সবচেয়ে বেশি মেরেছে ফিরোজ। পরে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের জালাল আসে। জালাল এসে আরও মারতে উৎসাহ দেয়; বলে-‘মার, ইচ্ছামতো মার; মাইরা ফেলিস না একবারে’। এসময় গ্যাস লাইট দিয়ে পায়ে আগুনও ধরিয়ে দেয়। পরে সুমন এসে তোফাজ্জলের ভ্রু ও চুল কেটে দেয়।”
ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘পরে ওখানে স্যার (হলের আবাসিক শিক্ষক) আসেন। আমি ওদেরকে অনেক ফেরানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু ওরা মানেনি। এক্সটেনশন বিল্ডিং এর গেস্ট রুম থেকে যখন তাঁকে বের করা হয় তখন স্যার এসে পড়ছেন। মারধরে তোফাজ্জলের ডান পা এবং বাম পায়ের মাংস খুলে পড়ে গেছে তখন। অনেকে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। আমি বলি কাপড় আনো, ওর পা বেঁধে দেই। কারণ ব্লিডিং হইলে তো সেন্সলেস হয়ে যাবে। পরে কাপড় এনে একটা জুনিয়র পা বেঁধে দেয়।’
ওই শিক্ষার্থী জানান, ‘মারধরকারীরা চেষ্টা করছিল মারপিট করে তাঁর স্বীকারোক্তি নিবে যে চুরি হওয়া ফোন সেই নিয়েছে। মারধরের এক পর্যায়ে দুই-তিনটা ফোন নম্বর দেয় তোফাজ্জল। সেই নাম্বারে ফোন দিলে অপর পাশ থেকে জানানো হয় মানসিক বিকারগ্রস্ত। কিন্তু ওরা (শিক্ষার্থীরা) বিশ্বাস করতে চায়নি। সেখানে আসা শিক্ষকদের সামনেও তোফাজ্জলকে পেটানো হয়। শিক্ষকরা বাধা দিতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।’
তিনি আরও জানান, ‘পরে তোফাজ্জলকে হলের মেইন বিল্ডিংয়ের গেস্টরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে জালাল প্রচুর মারে তাঁকে। বুট জুতা পরে এসে তোফাজ্জলের আঙ্গুল মাড়িয়ে ছেঁচে ফেলেন। আমি বলি, ভাই এগুলো কি করেন? তা শুনে হেসে দেয় জালাল। অনেকবার বলেছি, তারপরও সে বারবার হাতের আঙুল মাটিতে বিছিয়ে মাড়িয়েছে। তাঁর গোপনাঙ্গে লাঠি দিয়া জোরে জোরে আঘাত করছে জালাল। অনেক সিনিয়র ভাইয়েরা এসে তাদের ফেরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ওরা কিছুতেই মানেনি।’
পরের ঘটনা জানিয়ে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘এরপর প্রক্টরিয়াল টিম আসে। কিছু অভিযুক্তরা টিমের কাছে তোফাজ্জলকে দিতে চাচ্ছিল না। তাঁরা বলছিল, প্রক্টরিয়াল টিমকে দিলে তাঁরা পুলিশকে দিবে, আর পুলিশ ছেড়ে দিবে। এ নিয়ে ওখানে প্রকটোরিয়াল টিমের সদস্যদের সাথে অনেক ঝগড়া হয়েছে। ২৫ মিনিট ধরে শিক্ষকরা তাদের অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাঁরা বলেন, মাইরো না, মাইরা তো কোনো ফল পাবে না। পুলিশে দাও, পুলিশ চেষ্টা করবে। যে আইন কানুন আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে প্রক্টরিয়াল টিম। কিন্তু স্যারদের কথা তাঁরা মানেনি। তাঁরা বলছে, আমরা দেখব। পুলিশের কাছে দিলে ওরা এই শর্তে দিবে যে, পুলিশ ওরে সার্চ করবে। যদি (ফোন) না পায় তাহলে ওকে আবার তাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে প্রক্টরিয়াল টিম বুঝতে পারে তোফাজ্জলের অবস্থা খুবই খারাপ। এত মারলে কেউ বাঁচতে পারে না। তার মাংসগুলো খসে পড়ে গেছে। তাঁর গোপনাঙ্গে প্রচুর আঘাত করা হয়েছে। আঙুলগুলো পুরো ছেঁচে ফেলা হয়েছে। ওই জালাল ছেলেটা করেছে। সবার সামনেই এগুলা করছে।’
পরে অবস্থা খারাপ দেখে এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পাঁচ-ছয় জনের একটি দল তাঁকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে রাত ১২টার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসক তোফাজ্জলকে মৃত ঘোষণা করলে সটকে পড়েন ওই শিক্ষার্থীরা। এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক বলেন, আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশটি মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ফজলুল হক হল থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে সংক্ষিপ্ত সমাবেশও করেছেন তারা। বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে মারধরের ফলে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সব ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং মানবাধিকারের মৌলিক নীতিগুলির প্রতি সম্পূর্ণ অবজ্ঞা প্রদর্শন করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। আমরা অনতিবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্যাম্পাসের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। কেউ চুরি করতে আসলেও তাকে পিটিয়ে হত্যার অধিকার কারো নেই। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দায়ীদের শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় হলের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

ট্যাগস:-

ঢাবিতে তোফাজ্জল হ*ত্যা*র নেপথ্যের কারা..?

আপডেট সময়- ১২:৩২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

অনলাইন ডেস্ক।।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন এক ব্যক্তি। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, নিহত ওই ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল। তাঁর বাড়ি বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে জানা গেছে।
হল সূত্রে জানা যায়, মূলত মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে ঘটে এ ঘটনা। দুপুরে হলের মাঠে শিক্ষার্থীদের মধ্যকার ক্রিকেট খেলা চলাকালীন ৬টা মোবাইল চুরি হয়ে যায়। পরবর্তীতে খেলা চলাকালীন ৮টার দিকে তোফাজ্জল হলে ঢুকলে তাঁকে আটক করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের ধারণা, তোফাজ্জলই মোবাইল চুরি করছে। তাকে গেস্টরুমে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং হালকা মারধর করেন শিক্ষার্থীদের কয়েকজন। পরবর্তীতে তাকে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে আবারো গেস্টরুম নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্যহীন জানার পরেও তাঁকে ছাড়েননি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম, সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাদের নানাভাবে বোঝানোর চেস্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

 

অনুসন্ধান ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, তোফাজ্জলকে সবচেয়ে বেশি মারধর করেছেন ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগ করা উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ফিরোজ, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের আব্দুস সামাদ, ফার্মেসি বিভাগের মোহাম্মদ ইয়ামুজ জামান এবং পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনিস্টিউটের মোত্তাকিন সাকিন। এরা সবাই ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থী।
আরেকটি সূত্র জানায়, প্রাণীবিদ্যার শিক্ষার্থী সুলতান প্রথমে চোর সন্দেহে তাকে ধরে গেস্টরুমে নিয়ে আসে। সূত্রটির তথ্যমতে, মারধরে জড়িত ছিলেন- মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের, রাশেদ কামাল অনিক, গণিত বিভাগের রাব্বি এবং সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের ওয়াজিবুল।
হলের প্রত্যক্ষদর্শী একজন শিক্ষার্থী ঘটনা বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমি হল গ্রুপে ৮টার সময় দেখি হলে চোর ধরা পড়েছে। হলের গেস্ট রুমে, গিয়ে দেখি চোর বসা। রুমে তখন ফার্স্ট ইয়ার, সেকেন্ড ইয়ারের অনেক ছেলে ছিল। গেস্টরুমে তাঁকে বেশি মারা হয়নি। ওখানে হালকা মারার পরে ক্যান্টিনে নিয়ে আসে খাওয়ানোর জন্য। তারপর শুনি তাঁকে এক্সটেনশন বিল্ডিং এর গেস্ট রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি তখন ওখানে গিয়ে দেখি ২০-২১, ২১-২২ ও ২২-২৩ সেশনের ব্যাচ। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ জন। ফার্স্ট ইয়ার যে ব্যাচটা ছিল, ওরা মারে নাই। ২০-২১ আর ২১-২২ সেশনের ওরা খুব বেশি মেরেছে।’
তিনি আরও জানান, ‘দুই-তিনজন মিলেই ওরে ওখানে মেরে ফেলছে। এরা হলেন-মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের ২০-২১ সেশনের মোহাম্মদ সুমন, ওয়াজিবুল, ফিরোজ ও জালাল। এদের মধ্যে সুমন, ফিরোজ এবং জালাল সবচেয়ে বেশি মেরেছে। গেস্ট রুমে চোরের হাত বেঁধেছে জালাল। সুমন চোখ বন্ধ করে মেরেছে তাঁকে, মারতে মারতে ও (তোফাজ্জল) পড়ে গেছে। এরপরে পানি এনে তাঁকে পানি খাওয়ানো হলে সে উঠে বসে। এসময় সবাই হাততালি দেয়।’
ওই শিক্ষার্থী বলেন, “সবাই খুশি হয় কারণ তাঁকে আবার মারতে পারবে। এরপর আবার শুরু হয় পেটানো। এই দফায়ও সবচেয়ে বেশি মেরেছে ফিরোজ। পরে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের জালাল আসে। জালাল এসে আরও মারতে উৎসাহ দেয়; বলে-‘মার, ইচ্ছামতো মার; মাইরা ফেলিস না একবারে’। এসময় গ্যাস লাইট দিয়ে পায়ে আগুনও ধরিয়ে দেয়। পরে সুমন এসে তোফাজ্জলের ভ্রু ও চুল কেটে দেয়।”
ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘পরে ওখানে স্যার (হলের আবাসিক শিক্ষক) আসেন। আমি ওদেরকে অনেক ফেরানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু ওরা মানেনি। এক্সটেনশন বিল্ডিং এর গেস্ট রুম থেকে যখন তাঁকে বের করা হয় তখন স্যার এসে পড়ছেন। মারধরে তোফাজ্জলের ডান পা এবং বাম পায়ের মাংস খুলে পড়ে গেছে তখন। অনেকে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। আমি বলি কাপড় আনো, ওর পা বেঁধে দেই। কারণ ব্লিডিং হইলে তো সেন্সলেস হয়ে যাবে। পরে কাপড় এনে একটা জুনিয়র পা বেঁধে দেয়।’
ওই শিক্ষার্থী জানান, ‘মারধরকারীরা চেষ্টা করছিল মারপিট করে তাঁর স্বীকারোক্তি নিবে যে চুরি হওয়া ফোন সেই নিয়েছে। মারধরের এক পর্যায়ে দুই-তিনটা ফোন নম্বর দেয় তোফাজ্জল। সেই নাম্বারে ফোন দিলে অপর পাশ থেকে জানানো হয় মানসিক বিকারগ্রস্ত। কিন্তু ওরা (শিক্ষার্থীরা) বিশ্বাস করতে চায়নি। সেখানে আসা শিক্ষকদের সামনেও তোফাজ্জলকে পেটানো হয়। শিক্ষকরা বাধা দিতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।’
তিনি আরও জানান, ‘পরে তোফাজ্জলকে হলের মেইন বিল্ডিংয়ের গেস্টরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে জালাল প্রচুর মারে তাঁকে। বুট জুতা পরে এসে তোফাজ্জলের আঙ্গুল মাড়িয়ে ছেঁচে ফেলেন। আমি বলি, ভাই এগুলো কি করেন? তা শুনে হেসে দেয় জালাল। অনেকবার বলেছি, তারপরও সে বারবার হাতের আঙুল মাটিতে বিছিয়ে মাড়িয়েছে। তাঁর গোপনাঙ্গে লাঠি দিয়া জোরে জোরে আঘাত করছে জালাল। অনেক সিনিয়র ভাইয়েরা এসে তাদের ফেরানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ওরা কিছুতেই মানেনি।’
পরের ঘটনা জানিয়ে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘এরপর প্রক্টরিয়াল টিম আসে। কিছু অভিযুক্তরা টিমের কাছে তোফাজ্জলকে দিতে চাচ্ছিল না। তাঁরা বলছিল, প্রক্টরিয়াল টিমকে দিলে তাঁরা পুলিশকে দিবে, আর পুলিশ ছেড়ে দিবে। এ নিয়ে ওখানে প্রকটোরিয়াল টিমের সদস্যদের সাথে অনেক ঝগড়া হয়েছে। ২৫ মিনিট ধরে শিক্ষকরা তাদের অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাঁরা বলেন, মাইরো না, মাইরা তো কোনো ফল পাবে না। পুলিশে দাও, পুলিশ চেষ্টা করবে। যে আইন কানুন আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে প্রক্টরিয়াল টিম। কিন্তু স্যারদের কথা তাঁরা মানেনি। তাঁরা বলছে, আমরা দেখব। পুলিশের কাছে দিলে ওরা এই শর্তে দিবে যে, পুলিশ ওরে সার্চ করবে। যদি (ফোন) না পায় তাহলে ওকে আবার তাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে প্রক্টরিয়াল টিম বুঝতে পারে তোফাজ্জলের অবস্থা খুবই খারাপ। এত মারলে কেউ বাঁচতে পারে না। তার মাংসগুলো খসে পড়ে গেছে। তাঁর গোপনাঙ্গে প্রচুর আঘাত করা হয়েছে। আঙুলগুলো পুরো ছেঁচে ফেলা হয়েছে। ওই জালাল ছেলেটা করেছে। সবার সামনেই এগুলা করছে।’
পরে অবস্থা খারাপ দেখে এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পাঁচ-ছয় জনের একটি দল তাঁকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে রাত ১২টার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসক তোফাজ্জলকে মৃত ঘোষণা করলে সটকে পড়েন ওই শিক্ষার্থীরা। এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক বলেন, আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশটি মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ফজলুল হক হল থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে সংক্ষিপ্ত সমাবেশও করেছেন তারা। বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে মারধরের ফলে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সব ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং মানবাধিকারের মৌলিক নীতিগুলির প্রতি সম্পূর্ণ অবজ্ঞা প্রদর্শন করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। আমরা অনতিবিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্যাম্পাসের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। কেউ চুরি করতে আসলেও তাকে পিটিয়ে হত্যার অধিকার কারো নেই। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দায়ীদের শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় হলের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হবে।