রূপগঞ্জে এখনো জ্বলছে গাজী টায়ার কারখানা,মৃত্যুর মূখে ৫ শতাধিক
- আপডেট সময়- ০৬:৫১:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৪ ৮৭ বার পড়া হয়েছে
ফের লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ..! ১৫ ঘন্টা পেরোলেও দাউ দাউ করে জ্বলছে গাজী টায়ার কারখানায়..!
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি।।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গাজী টায়ার কারখানার আগুন চৌদ্দ ঘন্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি । ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রোববার (২৫ আগস্ট) রাত থেকে এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম।
স্থানীয়দের তথ্য মতে জানা গেছে, কারখানার ভিতরের ভবনটিতে ৪০০/ ৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারি আটকা পড়েছেন। তারা আদোও জীবিত আছেন কিনা সে বিষয়ে কেউ কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারছে না।
রোববার রাত সাড়ে ১০ টায় রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী এলাকায় স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন গাজী টায়ার কারখানার ছয় তলা ভবনে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। এরপর থেকে স্থানীয় জনসাধারণ সহ শত শত মানুষ এসে সেখানে জড়ো হয়।
অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডেমরা, কাঁচপুর, আদমজী ইপিজেড ও কাঞ্চন ফায়ার স্টেশনের মোট ১২ টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে রাত থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরপর রাজধানীর সিদ্দিকবাজার থেকে টিটিএল মেশিন এনে ওপর থেকে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, রোববার (২৫ আগস্ট) বিকেলে কারখানার মালিক নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সাংসদ গোলাম দস্তগীর গাজীকে নারায়ণগঞ্জের আদালত ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার পরে রূপগঞ্জের রূপসী এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করে বিএনপি ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মীরা। এসময় তারা গাজী টায়ার কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে মেশিনপত্র ও আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুটপাট করে নিয়ে যেতে শুরু করে। লুটপাট চলতে থাকলে প্রায় প্রানের ভয়ে ভিতরে থাকা ৫ শতাধিক কারখানার দায়িত্বরত শ্রমিকরা ছয় তলা ভবনটির বিভিন্ন ফ্লোরে উঠে পরে।পরবর্তীতে সেখান থেকেও লুটপাট শুরু হয়।
লুটপাট শেষে রাত নয়টার দিকে ভবনের নীচতলায় দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিলে কারখানা সহ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় জীবন বাচাতে তারা দুই তলা ও তিন তলার জানালা দিয়ে নিচে লাফিয়ে পড়েন। এরপর আগুন পুরো ছয় তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে গেলে ভেতরে আটকে পরা অনেকেই আর বের হতে পারেননি বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য মতে জানা গেছে, ভবনটির ভেতরে প্লাস্টিক, রাবার ও কেমিকেলসহ বিভিন্ন প্রকার দাহ্য জাতীয় পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় বেগ পোহাতে হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশিক্ষক) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম সোমবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টায় সমকালীন কাগজকে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের বিভিন্ন স্টেশনের ১২ টি ইউনিট নিরবচ্ছিন্ন কাজ করছে। আমরা টিটিএল মেশিন দিয়ে ওপর থেকে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।তবে ছয় তলা ভবনটির অধিকাংশ ফ্লোরে প্লাস্টিক, রাবার ও কেমিকেলসহ বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ মজুদ ছিল। যে কারণে এগুলো জ্বলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণ কারা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তারপরেও আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভবনের ভেতরে থাকা আহত ১৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেতে পেরেছি। তবে ভেতরে কি পরিমাণ মানুষ আটকা পড়েছিলেন সেটি এখন বলা যাচ্ছে না।