নওগাঁয় শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ অধ্যক্ষের স্ট্রোকে মৃত্যু
- আপডেট সময়- ০৫:১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪ ৫৪ বার পড়া হয়েছে
অনলাইন ডেস্ক।।
নওগাঁ হাঁপানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলজের শিক্ষার্থীদের অবরোধের মুখে স্ট্রোক করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ।
বুধবার (২৮ আগস্ট) নওগাঁ জেলায় এ ঘটনা ঘটে। কলেজটির অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম অসুস্থ অবস্থায় এখন রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
জানা যায়, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে হাঁপানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে গত রোববার (২৫ আগস্ট) থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছিল। বুধবার সকাল ১০টার অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এলে শিক্ষার্থীরা তাকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। অবরুদ্ধ অবস্থায় বিকেল ৩টার দিকে অধ্যক্ষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পরেন।
পরে তাকে ২৫০ বিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলে, অবস্থার অবনতি দেখে বিকেল ৪টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জ্ঞান হারানো অবস্থায় এক শিক্ষককে হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উনার জ্ঞান ফিরে আসে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে উনি স্ট্রোক করেছিলেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহীতে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
অধ্যক্ষ নুরুল ইসলামের বড় ভাই আবু নাছের আহম্মেদ বলেন, নুরুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে গত রোববার থেকে তার প্রতিষ্ঠানের কতিপয় শিক্ষার্থীসহ বহিরাগত লোকজন আন্দোলন করছিল। এ নিয়ে মঙ্গলবার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম রবীন শিষ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও অধ্যক্ষকে নিয়ে সভা করেন এবং উভয়পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করে দেন। বুধবার সকালে নুরুল ইসলাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেলে কিছু শিক্ষার্থী তাকে বিগত সময়ের কিছু বুঝে দিতে বলেন। নুরুল ইসলাম তার হিসাব-নিকাশ বুঝে দেওয়ার একপর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে ফের বহিরাগত কিছু লোকজন তার কার্যালয়ে ঢুকে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও তার শরীরে হাত দিয়ে টানাহেঁচড়া করতে থাকে। এভাবে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে নুরুল ইসলাম সেখানে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাঁকে নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউএনও ও হাঁপানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এস এম রবীন শিষ বলেন, কয়েক দিন ধরেই হাঁপানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে নিয়ে একটা অস্থিরতা চলছিল। বিষয়টি মঙ্গলবার উভয়পক্ষের সঙ্গে আমি সভাও করেছি। উভয়পক্ষের মধ্যে একটা সমঝোতার মধ্যে দিয়ে সভাটি শেষ হয়। কিন্তু রোববার আবারও ওই প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা দেখা দেয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ওই অধ্যক্ষের বর্তমান শারীরিক অবস্থা জানেন উল্লেখ করে ইউএনও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে চলমান অস্থিরতা বন্ধ করতে বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি সভা করেছি। যেখানে উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে এ ধরনের অস্থিরতা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণেরও আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।