সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, গজারিয়া, দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক), দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, বাংলাদেশ, মুন্সিগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জে প্রবাসী ভাইয়ের সর্বস্ব আত্মসাৎ: পরিবারসহ বাড়ি থেকে বিতারিত
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ১১:০২:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪ ৭১ বার পড়া হয়েছে
প্রবাসী ভাইয়ের সর্বস্ব আত্মসাৎ করে বাড়ি থেকে বিতারিত করেছে বড় ভাই, পরিবার নিয়ে পথে পথে ঘুরছে..!দেখার কেউ নেই
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
মঙ্গলবার(৯ জুলাই)সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় স্ত্রী,তিন শিশু সন্তান নিয়ে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন একজন অসহায় বাবা।এক হাতে একটি ব্যাগ অপর হাতে একটি টেবিল ফ্যান।
কাছে গিয়ে তাদের এখানে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর প্রবাস জীবনে যা উপার্জন করেছিলাম তা বড় ভাইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলাম।আমার টাকা দিয়ে বাড়িঘর সব হয়েছে কিন্তু এখন আমাকে পরিবারসহ বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে বড় ভাই!তার কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার নাম আক্তার হোসেন,আমি গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের নতুন বসুর গ্রামের মরহুম ইয়াকুব বেপারীর ছেলে। আমার বয়স ৪৭,এর মধ্যে প্রায় ২০ বছর আমি দেশের বাইরে ছিলাম।ছুটিতে দেশে এসেছি,বিয়ে-শাদী করে চলে গেছি।আমার টাকায় ঘর দুয়ার, জমিজমা কিনেছেন বড় ভাই নাসির হোসেন। আমার ধারণা বিদেশ থেকে আমি প্রায় দুই কোটি টাকার মতো পাঠিয়েছিলাম।দেশে ফিরে আসার পর মারধর করে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় সে।বড় ভাইয়ের অত্যাচার বাধ্য হয়ে আমি পার্শ্ববর্তী দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুরে চলে যাই। বর্তমানে ছোটখাটো একটি চাকরি করে কোনোরকম সংসার চালাচ্ছি।অভাবের সংসারে ভাড়া বাড়িতে থাকা সম্ভব না হওয়ায় আবারো নিজ বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করি আমি।গত শনিবার(৬ জুলাই)আমরা বাড়িতে এলে আমার বড় ভাই নাসির,তার স্ত্রী আসমা,ছেলে আশিক এবং মেয়ের সোনিয়া আক্তার আমাদের মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে গজারিয়া থানায় জানাই।এদিকে মঙ্গলবার(৯ জুলাই) সকালে আমরা আবারো বাড়িতে গেলে তারা আমাদের মারধর করে বের করে দেয়।দিনভর আশপাশের বাড়িতে বসে থেকে সন্ধ্যায় আমরা বাধ্য হয়ে থানায় আসি।ভুক্তভোগী আক্তার হোসেনের স্ত্রী পলি আক্তার বলেন,আমার চার মেয়ে।তার মধ্যে সুমাইয়া আক্তারের বয়স ১৩ বছর,শরিফার বয়স ১১ বছর,তাসনিয়ার বয়স নয় বছর এবং ছোট মেয়ের মুনতাহার বয়স এক বছর।আমার স্বামী যে টাকা উপার্জন করে তা দিয়ে আমাদের থাকা হলেও খাওয়া হচ্ছে না।এভাবে অনাহারে অর্ধাহারে কতদিন কাটানো যায়।তাই আমরা ভাড়া বাসা ছেড়ে নিজের বাসায় ফেরার উদ্যোগ নেই।যতবার বাসায় ওঠার চেষ্টা করেছি আমাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।তিন শতাংশ জায়গার ওপর আমাদের বাড়ি আছে।বৈদ্যুতিক মিটার থেকে শুরু করে জমির কাগজপত্র সব আমাদের নামে তারপরও আমাদের মারধর করে বারবার তাড়িয়ে দেয়া হয়। আপনারাই বলেন আমরা কোথায় যাব?বিষয়টি সম্পর্কে স্থানীয় ইউপি সদস্য জমু মিয়া বলেন, ‘পুরো ঘটনাটি আমি জানি।অসহায় এই পরিবারটির জন্য আমার খারাপ লাগে।একটা মানুষ সারাজীবন শুধু দিয়ে গেছেন আর এখন সে মানুষটার তার বাড়িতে ঠাঁই হচ্ছে না।বিষয়টি সম্পর্কে গুয়াগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন,আক্তার দীর্ঘদিন বিদেশে ছিল আমি জানি।তবে সে সম্প্রতি দেশে ফিরেছে এটা আমার জানা ছিল না।তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে।বড় ভাই নাসির মানুষ হিসেবে ভালো নয়,এটা নিয়ে আগেও শালিশ বৈঠক হয়েছে।তারপরও দেখছি কি করা যায়।বিষয়টি সম্পর্কে অভিযুক্ত বড় ভাই নাসির হোসেন বলেন,আক্তার আমার কাছে জমিজমা সব বিক্রি করে দিয়েছে।এটা আমার ঘর, সে আমার ঘরে ঢুকতে চায়।সে যদি আমার ঘর দখল করতে চায় আমি তাকে কেন সেটা করতে দিব’।বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মো:রাজিব খান বলেন,এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে।আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।