সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আবহাওয়া ও জলবায়ু, গজারিয়া, টুঙ্গীবাড়ী, দেশজুড়ে, নারী ও শিশু, নির্বাচন, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পুলিশ, মুক্তারপুর, মুন্সিগঞ্জ, লৌহজং, শ্রীনগর
মুন্সীগঞ্জে আ’লীগের দুই গ্রুপের বিরোধে বাড়িঘর-দোকান ভাঙচুর,আহত-৬
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৭:০৪:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪ ৬২ বার পড়া হয়েছে
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম মুক্তারপুরে আধিপত্য বিস্তার ও নির্বাচনী বিরোধকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম মাদবর ও তার আত্মীয় স্বজনদের অন্তত ১৫ টি বাড়ি-ঘর,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।আহত হয়েছেন অপর পক্ষে থাকা ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক মাইনউদ্দিনসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৬ জন।গতকাল শুক্রবার রাতে ও আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের পশ্চিম মুক্তারপুর এলাকায়
পাল্টাপাল্টি হামলার এ ঘটনা ঘটে।বিবদমান পক্ষ দুইটির এক দিকের নেতৃত্বে রয়েছেন ৮ নং ওয়ার্ড
ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম ও অন্য পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন।হামলার ঘটনায় আহতরা হলেন,রহিম পক্ষের পশ্চিম মুক্তারপুর এলাকার বাদল হোসেন (৪৫),জাহিদ হোসেন(৩০) ও মাহফুজুর রহমান (২০)।আবুল হোসেন পক্ষের মাইনউদ্দিন(৪৫), আক্তার হোসেন(৪০) ও সুলতান হোসেন(৩৮)।
আক্তার ও মাইন উদ্দিন ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।জাহিদকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পশ্চিম মুক্তারপুর এলাকার আবদুর রহিম ও আবুল হোসেনদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে।গত সংসদ নির্বাচনের সময় এই বিরোধ আরো তীব্র হয়ে ওঠে।রহিম ও তার সমর্থকরা
নৌকার পক্ষে কাজ করেন।আবুল হোসেনরা কাজ করেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে।নির্বাচনের আগে ব্যপক প্রভাব ছিল রহিম পক্ষের।নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়ের পর থেকে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে যায় রহিম পক্ষ।নির্বাচনের পরে আবুল হোসেনরা রহিমদের উপর অন্তত তিনটি হামলার ঘটনা ঘটায়।
গতকাল শুক্রবার রাতে আবুল হোসেন পক্ষের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
মাইনউদ্দিনের উপর রাতের আধারে হামলার ঘটনা ঘটে।এতে মাইনউদ্দিন আহত হন।এ ঘটনায় আবদুর রহিম পক্ষকে দায়ী করে আবুল হোসেনরা। শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে আবুল হোসেনের লোকজন পশ্চিম মুক্তারপুরে রহিম পক্ষের অন্তত ১৫ বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করে।এছাড়াও ৬ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট করে।এ সময় আবুলদের লোকজনের মারধর ও ছুরিকাঘাতে রহিম পক্ষের ৩ জন আহত হন। জানালার কাঁচ ভাঙতে গিয়ে কাঁচের আঘাতে আবুলদেরও দুজন আহত হন।উভয় পক্ষের কয়েকজনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এ
এস এম ফেরদৌস বলেন,‘বেলা ১২ টার দিকে ধারালো কিছুর আঘাতে আহত আক্তার ও জাহিদ নামে দুজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল।তাদের মধ্যে আক্তার হোসেন নামে একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।অন্যজন মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম বলেন,’গত সংসদ নির্বাচনে আমরা নৌকার পক্ষে ছিলাম।আবুল হোসেনরা নৌকার সমর্থকদের চিহ্নিত করে রাখে।এ পর্যন্ত তিনবার আমার ও আমার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর,লুটপাট করেছে।তাদের আতঙ্কে আমাদের অনেকেই এলাকা ছাড়া।শুক্রবার রাতে কে বা কারা মাইনউদ্দিনের উপরে হামলা করেছে।সন্দেহাতীতভাবে সে দায় আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা করে আবুলারা।তারই জের ধরে শনিবার সকালে আমার ও আমার সমর্থকদের অন্তত ১৫ টি বাড়ি ও ৬ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ
হামলা চালানো হয়েছে।ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট করছে।দুজনকে কুপিয়ে ও বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করেছে।তাদের ভয়ে আমাদের লোকজন এলাকাছাড়া হয়ে আছে।’এসময় তিনি আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়।আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচন করেছি।যার প্রতিদান
এখন আমাদেরকে দিতে হচ্ছে।তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো আবদুর রহিম
পক্ষকে দুষছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন।আবুল হোসেন বলেন,’ব্যবসায়িক লেনদেনের জের ধরে রহিম তার ভাতিজাদের নিয়ে শুক্রবার মাইনউদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতরভাবে জখম করেছে।তিনি বর্তমানে ঢাকায় আছেন। শনিবার সকালে রহিমদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মাইনউদ্দিনের ভাই আক্তার হোসেন এবং তার স্বজন সুলতানকে হামলা করে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।এ ঘটনার পর এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে রহিমের বাড়িঘর ভাঙচুর করতে পারে।তবে যারা বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে তারা কেউ আবুল হোসেনের লোকজন নয় বলে দাবি তার।হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ আমির হেসেন, জামাল,সিরাজ,মজিবুর রহমানসহ ১০-১২ জনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান,বিরোধ থাকলে রহিম ও আবুল হোসেনদের মধ্যে রয়েছে।রাজনৈতিকভাবে লাভ হলে তাদের হয়েছে।আমরাতো কারো পক্ষে ছিলাম না।আমাদের বাড়িঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আবুল হোসেনরা লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি করেছে
আমরা এ হামলার বিচার চাই।আমাদের ক্ষতিপূরণ চাই।মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) থান্দার খায়রুল হাসান বলেন,‘আব্দুর রহিমের লোকজন প্রথমে প্রতিপক্ষের মাইনউদ্দিনের উপর হামলা করে বলে শুনেছি।
সেই ঘটনার জের ধরে শনিবার সকালে রহিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।বর্তমানে পরিস্থিতি
স্বাভাবিক রয়েছে।এ ঘটনার কোনো পক্ষেই থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি।তবে ঘটনার সাথে দুপক্ষের যারা জড়িত,তাদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।