সর্বশেষ:-
মুন্সীগঞ্জের ফার্মেসীতে দেদারে বিক্রি হচ্ছে নেশা জাতীয় ট্যাবলেট
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ০৭:০৯:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪ ৬৭ বার পড়া হয়েছে
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি।।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন ফার্মেসীতে দেদার বিক্রি হচ্ছে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট।এর মধ্যে ইনসেপ্টার সেনট্রডল,হেলথ কেয়ারের সিনটা, এসিআইয়ের লোপেন্ডা,স্কয়ারের পেনটাডল,
অপসোনিনের টাপেনডল,এসকেএফের টাপেন্ড, বেক্সিকোর ট্রাপডাসহ বিভিন্ন নামের এসব ওষুধ প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিক্রি করা হচ্ছে।এছাড়াও মাদক দ্রব্য আইনে নিষিদ্ধ ওষুধগুলো প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিক্রি করছে ফার্মেসীর দোকানিরা।জেলা
পুলিশ,র্যাব,ডিবি এবং মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কড়াকড়ির কারনে মাদকাসক্তরা বিকল্প নেশার দিকে ঝুঁকে পড়ছে।শহর এবং গ্রামাঞ্চলের ফার্মেসীগুলোতে গ্রুপ বেধে মাদকাসক্তরা ঘুরে ঘুরে নেশাজাতীয় ওষুধগুলো সংগ্রহ করে।পরে সেগুলোকে বিভিন্ন নেশার আদলে প্রস্তুত করেই সেবন করছেন।এসব খেলে নাকি অন্য নেশা ধরে না।এসব ওষুধ বিক্রির সময় ফার্মেসীর
রসিদ রাখার নিয়ম থাকলেও মানছে না কোনো ফার্মেসী।চিকিৎসকরা জানান,এসব ওষুধ মাত্রাতিরিক্ত সেবন করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তবুও এসব খেয়ে নেশা করছে বখাটে মাদকসেবীরা।এতে করে অভিভাবকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সন্ধ্যা হলেই ফার্মেসীগুলোতে নকটিন,ডিসপেন টু, মাইলাম,বি ফিফটি,ডেকাসন,বোপাম ব্রোমাজিপাম, সিডিল,ইজিয়ামসহ নানা ধরনের ওষুধ কিনতে
মাদকসেবীরা ভিড় জমায়।দল বেধে একেক সেবী এক একটি দোকাল থেকে আলাদাভাবে এগুলো কিনছে।অনেকে আবার বাচ্ছার সর্দি হাঁশি এটা বলেই ডায়াড্রিল,এড্রিল,পেডিয়ামিন কিনে নিচ্ছে। ফার্মেসীর ওষুধ বিক্রেতারাও সরাসরি দিয়ে দিচ্ছে।
মাদকের বিকল্প হিসেবে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেটের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।পুলিশের মাদকবিরোধী তৎপরতায় ইয়াবা-হেরোইন-ফেনসিডিলের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প দামের এসব ট্যাবলেট মাদকসেবীদের কাছে অধিক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ফার্মেসীগুলোতে অবাধে বিক্রির সুযোগে ব্যথানাশক বিভিন্ন ওষুধ সেবনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে মাদকাসক্তরা।জানা গেছে,মাদকের বিকল্প হিসেবে সব ধরনের ব্যথানাশক ট্যাবলেটের চাহিদা নেই।বেশ কিছু ওষুধ কোম্পানি ব্যথানাশকের নামে কৌশলে নেশা জাতীয় ট্যাবলেট বাজারজাত করে থাকে।এসব ওষুধ সেবন করলে ব্যথার পাশাপাশি ঘুম ও নেশার চাহিদা মেটায়।এটি ওষুধ কোম্পানির
মার্কেটিং অফিসারদের মাধ্যমে গোপনে ওষুধের দোকানগুলোতে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়।বিভিন্ন কোম্পানি ভিন্ন ভিন্ন নামে এসব ব্যথানাশক ট্যাবলেট বাজারে ছেড়েছে।দিনের চেয়ে রাতে এই ট্যাবলেটের চাহিদা অনেকগুণে বেড়ে যায়।তাই প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ওষুধের দোকানগুলোতে মাদকসেবনকারীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। তারা ওষুধের দোকান থেকে অবাধে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট কিনে সেবন করছে।ব্যাথানাশক ট্যাবলেট কিনতে আসা একাধিক সেবনকারী জানান,প্রশাসনের কঠোর তৎপরতায় বাজারে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ সব ধরনের মাদকের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।দামও অনেক চড়া।তাই ইয়াবার
বিকল্প হিসেবে এসব ওষুধ বিকল্প নেশাদ্রব্য হিসেবে সেবন করছি।এরমধ্যে শুধু একটিতে হুবহু হেরোইনের স্বাদ পাওয়া যায়।বাকি সব ট্যাবলেটে ইয়াবার মতো নেশা হয়।ব্যথানাশক ট্যাবলেট সেবনে ঘুম ভালো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক ধরনের ফিলিংসও পাওয়া যায়।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ওষুধের দোকানের মালিক বলেন,বর্তমানে মাদকসেবীদের কাছে ব্যথানাশক ট্যাবলেট ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।মাদকসেবীদের শতকরা ৬০- ৬৫ ভাগই এখন ব্যথানাশক ট্যাবলেটে আসক্ত। বেশি চাহিদার কারণে ৫০ পয়সা মূল্যের ট্যাবলেট ১০ টাকা, ১০ টাকা মূল্যের ট্যাবলেট ২৫ টাকাও বিক্রি হচ্ছে।ঠান্ডা কাঁশির সিরাপগুলোর দামও দ্বিগুন হয়ে গেছে।মাদকসেবীরা ৪/৫ জন এসে আলাদা আলাদা দোকান থেকে এসব কিনে নিচ্ছে।অনেকে আবার শিশু বাচ্চাকে কোলে করে এনে বলে ঠান্ডা কাঁশির সিরাপ দেন,স্ত্রীর ঘুম হয়না,শরীর ব্যাথা,এই ঘুমের ওষুধ আর ব্যাথার ট্যাবলেট কিনে নিচ্ছে।স্থানীয় লোকজন প্রাথমিক চিকিৎসার নামে এসব ওষুধ নিয়ে নেশা করে এটা বে-আইনী। ফার্মেসীগুলো টাকা পেলে ওষুধ বিক্রি করে এখন
ওষুধ নিয়ে নেশা করলে কি আর করার।তবে প্রেশক্রিপশন ছাড়া কোন ওষুধ বিক্রি না করলে এটা বন্ধ হতো।সচেতন নাগরিকদের দাবি, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঔষধ বিক্রি বন্ধ হলে নেশা
জাতীয় ঔষধ কেনাও বন্ধ হবে।সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকরি উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন সচেতন নাগরিকরা।