সুনামগঞ্জে ভারী বর্ষণে বাঁধ ভেঙে জমি-বসতবাড়ি চুরমার
- আপডেট সময়- ০৫:২১:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪ ৬৯ বার পড়া হয়েছে
বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী,স্রোতের ধাবায় রেহাই পায়নি বসত ঘরও..!
হিফজুল ইসলাম,দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)।।
দোয়ারাবাজারে গত তিন দিন ধরে টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার সুরমা, চেলা, চলতি, মরা চেলা, খাসিয়ামারা, মৌলা, কালিউরি, ধুমখালীসহ সব নদী-নালা হাওর ও খাল- বিলের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির তীব্র স্রোতে বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভেঙে যাওয়া স্থান দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। এতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, ফসলের খেত। ভেসে গেছে মাছের পুকুর। এদিকে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা।
সরেজমিনে জানা যায়, সীমান্তের ওপার থেকে বয়ে আসা পানির তোড়ে খাসিয়ামারা নদীতে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এতে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া, ইদ্রিসপুর, চৌকিরঘাট বেঁড়িবাধ ভেঙে বিভিন্ন হাওরে পানি প্রবেশ করায় ঘরবাড়ির আসবাবপত্র, গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আমনের বীজতলা, আউশ ও সবজি খেত তলিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে বোগলাবাজার ইউনিয়নের ক্যাম্পের গাট নামক স্থানে চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সুরমা ইউনিয়নের টিলাগাঁও-টেংরাটিলা যাতায়াত রাস্তা বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। মহব্বতপুর বাজার- লিয়াকতগঞ্জ বাজার সড়কে নোয়াপাড়া নামক স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলা সদরের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ২৮টি ও সুরমা ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামসহ সীমান্তের লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। বাংলাবাজার ইউনিয়নের
পেকপাড়া, চৌধুরী পাড়া, মৌলারপাড়, চিলাইপাড়, পুরান বাঁশতলা গ্রামের অনেক ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, খাশিয়ামারা নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ইউনিয়নের নোয়াপাড়া, ইদ্রিসপুর ও চৌকির গাঁট নামক স্থানে বেড়িবাঁধে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে বেশ কিছু গ্রাম। শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানির জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।
সুরমা ইউপির চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ বলেন, খাশিয়ামারা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেখা দিয়েছে তীব্র স্রোত। এতে এ ইউনিয়নের কিছুসংখ্যক বাড়িঘরে পানি উঠেছে। তাদের জন্য শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হবে। বোগলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিলন খান জানান, ক্যাম্পেরঘাট গ্রামের সাবেক বিজিবি ক্যাম্পের পাশে চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে এই ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পুকুরের মাছ ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে। আর সেই ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের সব নদ-নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাহাড়ি ঢল নামা অব্যাহত থাকলে আজকেই নদ- নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে এবং সুনামগঞ্জে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।