ঢাকা ০৭:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ:-
নির্দেশনা পেলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সেনাবাহিনী প্রস্তুত: কর্নেল শফিকুল দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত মৌলভীবাজার সীমান্তে শিশুসহ ৭১ বাংলাদেশীকে ফেরত দিলো বিএসএফ শ্রীমঙ্গলে অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতে নতুন কারসাজিতে ও ঠিকাদার ব্যর্থ মৌলভীবাজারে জামিনের প্রলোভনে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক গ্রেপ্তার জুড়ীর কৃতি সন্তান শরীফ বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে প্রথম আ’লীগের সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার ৩৩ ডেপুটি জেলারকে একযোগে বদলি আমি জনগণের সেবক হতে চাই, কারো প্রতিযোগী না: মাসুদুজ্জামান জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে মর্গ্যান স্কুলের সংকট নিরসন মাদরাসার দুই শিক্ষার্থীর একই সাথে মৃত্যু;  শিক্ষক সমিতির শোক দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রথমবার কৃত্রিম বৃষ্টি এক নতুন দিগন্ত ভেড়ামারায় পদ্মায় তীব্র ভাঙন, আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা ভৈরবের পূর্বকান্দা সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক’কে অফিসে ডুকে মারধরের অভিযোগ সুন্দরবনে বিপুল পরিমাণ হরিণ শিকারের ফাঁদ জব্দ কুমিল্লায় ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত বিচারের দাবিতে মহিলা পরিষদের মানববন্ধন আজ ব্যাংক হলিডে, ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে সব লেনদেন বন্ধ জুলাই অভ্যুত্থানে বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের শহীদ হয়েছে ৭৩৪ নওগাঁয় অতিরিক্ত ধান-চাল মজুদ: দুই মিল ম্যানেজারের অর্থদন্ডসহ জেল নারায়ণগঞ্জে র‍্যাবের অভিযানে অস্ত্র-মাদক ও বিদেশি মুদ্রাসহ আটক-২ ফতুল্লায় আবির ফ্যাশনে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনায় বিক্ষোভে ৮ কারখানা বন্ধ সুন্দরবনে হরিণের ফাঁদসহ আটক-১ শিকারী  খোলপেটুয়া নদীরচর থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার শরণখোলায় ৪নং সাউথখালী ইউপি’র উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা বিমানবন্দরে চেকিংয়ে ম্যাগজিন পাওয়ার বিষয়ে যা বললেন উপদেষ্টা আসিফ না’ঞ্জকে সবুজে ঘেরা পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা।”-জেলা প্রশাসক ৫ আগস্টের পর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ১৩ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত না’গঞ্জে ‘আ’লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে সাবেক বিএনপি নেতাকে ‘মারধর’সহ হেনস্তা না’গঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে মাদক-অস্ত্রসহ আটক-২ নারী কারবারি কুষ্টিয়ায় মাদক কারবার নিয়ে বিরোধে যুবককে কুপিয়ে হত্যা কুষ্টিয়ায় বাসচাপায় পুলিশ সদস্য নিহত শরণখোলায় লাগসই প্রযুক্তি বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত আমার শিকড় এই মাটির অনেক গভীরে: মাসুদুজ্জামান মাসুদ ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ আজ না ফেরার দেশে ‘কাঁটা লাগা’ গার্লখ্যাত শেফালি জারিওয়ালা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে মাসুদ-পন্টি পরিষদ বিজয়ী ধর্ষণচেষ্টা মামলায় শিক্ষক আটক, পাঠানো হলো কারাগারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চালকদের ডাটাবেজ করছে না’গঞ্জ জেলা প্রশাসন ডিএমপির ৬ ডিসির দায়িত্বে রদবদল কুষ্টিয়ায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতের হানা, লাশের শরীর তল্লাশি গাইবান্ধায় এইচএসসি পরীক্ষার ১ম দিনে ১২ জন বহিষ্কার, ৪২৯ অনুপস্থিত কুষ্টিয়ায় মাদকের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী দিবস পালিত রায়পুরায় ছয় দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি শরণখোলায় পার্টনার স্কুল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম সবুজের মায়ের ১ম  মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া অনুষ্ঠিত আজ থেকে শুরু এইচএসসি পরীক্ষা,পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে বিশেষ গাইডলাইন নারায়ণগঞ্জে জোড়া খুন; সাবেক কাউন্সিলর হান্নান ও দুই পুত্রসহ আটক-৪ ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় খালাস পেলেন কুষ্টিয়ার দুই সাংবাদিক গ্লোবাল টিভির সাংবাদিক মনিরুল আলমকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি ‘মব জাস্টিস’ এক হিংস্র উন্মাদনা: তারেক রহমান দেশের সকল কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা ফতুল্লায় তিতাসের অভিযান: অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ অর্থদন্ড রোটারি ক্লাব অব নারায়ণগঞ্জ মিডটাউনের বর্ষ সমাপ্তি সভা অনুষ্ঠিত ‘মব’ ঠেকাতে কঠোর বার্তা, ব্যর্থ হলেই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার সাবেক সিইসিকে ‘মব’ সৃষ্টি করে হেনস্থাকারী স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মুজাম্মেল আটক স্রোতের তোড়ে ২৮ যাত্রী নিয়ে মেঘনায় ডুবলো স্পিডবোট কর,কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ‘ কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আহত-৪ প্রধান উপদেষ্টাসহ দুদককে উকিল নোটিশ পাঠালেন টিউলিপ সিদ্দিক বিশ্ব পরিবেশ দিবসে মহিলা পরিষদের বৃক্ষরোপণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে ছদ্মবেশে গ্রেপ্তার করল পুলিশ সোনারগাঁয়ে প্রবাসীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার হুমকিদাতা বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার ‘মব’ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কড়া হুশিয়ারী দিলো সরকার সাবেক এমপি সাবিনা আক্তার তুহিন গ্রেপ্তার সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে ঘিরে ‘মব’ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার সাবেক আরেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার না’গঞ্জের প্রবেশমুখে স্থাপত্যশৈলীর ছোয়ায় নির্মিত হবে ‘গেট অব ড্যান্ডি’ শামীম ওসমানের ২টি প্লট ক্রোকসহ ২৯ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ সাবেক সিইসি কেএম নুরুল হুদা ডিবি হেফাজতে মুন্সিগঞ্জের সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লব গ্রেপ্তার বিএনপি ক্ষমতায় আসলে সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করবে: মোস্তফা জামান কুষ্টিয়ায় পাউবোর জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না’গঞ্জে অটোরিকশার স্ট্যান্ড দখল নিতেই বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, নিহত-২ আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল, গ্রেপ্তার নয়: মেঘনা আলম  এডিসির সঙ্গেও অনৈতিক সম্পর্ক ছিল বিশ্বপ্রেমিক ডিসি আশরাফের নারায়ণগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জোড়া খুন দুই মাসেও ডিবি প্রধানের শূন্য পদ পূর্ণ হয়নি কর্মস্থলে অনুপস্থিত শরীয়তপুরের বিতর্কিত ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভিডিও বার্তায় প্রেমিকাকে যা বললেন শরীয়তপুরের সমালোচিত ডিসি আইআরজিসির কাছে যুদ্ধকালীন ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন খামেনি পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার ডিবি হেফাজতে পরিবেশ সংরক্ষণে জেলা প্রশাসনের গৃহীত পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন: জনপ্রশাসন সচিব বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ায় মাছ ধরতে পারছে না জেলেরা: নিরাপদ আশ্রয় ফিশিং ট্রলার শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল না’গঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় মাদক-ছিনতাই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ নারায়ণগঞ্জে মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনের শিকার বাবা-মার হাতেই পুত্র খুন সেনা অভিযানে তিন সপ্তাহে ৫৬ অবৈধ অস্ত্রসহ ৯৯৬ অপরাধী গ্রেপ্তার কমলগঞ্জে ৩ কেজি গাঁজাসহ দুই কারবারি পুলিশের জালে আদমজী বিহারি ক্যাম্পে সেনা অভিযান, অস্ত্রসহ ২ নারী আটক কুষ্টিয়ায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু কুষ্টিয়ায় ছাত্রাবাসে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে রহস্যের ধূম্রজাল শরণখোলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ায় পিতার সংবাদ সম্মেলন কমলগঞ্জে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা কুলাউড়ায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার দেশজুড়ে থেমে থেমে বজ্রসহ বৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস ট্রাম্পের হুমকির পর আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ির পাল্টা জবাব ‘যুদ্ধ শুরু হলো’ নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড কলেজে দুর্ধর্ষ চুরি সোনারগাঁয়ে খালপাড় বেড়িবাঁধ থেকে যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার নারায়ণগঞ্জে মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার ফতুল্লায় ড্রেন থেকে বস্তাবন্দি যুবকের মরদেহ উদ্ধার

সবার উপরে ‘মায়ের আঁচল’ তাহার উপরে নাই

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময়- ০৩:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪ ২৪৯ বার পড়া হয়েছে

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
তখন খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!
আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।
আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।
আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ।
আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”।
 তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল।
 উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন । কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।
 মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত।
আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয় ।
 কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
 মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
 যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম ।
শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
 শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।
গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল।
মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা।
মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।
কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।
আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন।
 মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।
বাবার সেই ধুতি কোথায়???
 আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে।
শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।
ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।
আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন।
মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস:-

সবার উপরে ‘মায়ের আঁচল’ তাহার উপরে নাই

আপডেট সময়- ০৩:২০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

 

ঋতম্ভরা বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা।।
তখন খুবই ছোট। হামাগুড়ি পর্ব শেষ করে হাঁটতে শুরু করেছি। হোঁচট খেতেই মা কোলে তুলে আঁচল দিয়ে চোট লাগা জায়গাটি মুছে দিতেন। যাতে ধুলো, বালি না থাকে। মা জোর কোরে দুধ,ভাত বা অন্যা খাবার মুখে তুলে দিতেন। খাবার মুখ থেকে গড়িয়ে পড়লে আঁচল দিয়ে মুছে দিতেন। আরো কত কি!!!
আজকাল মায়েদের আঁচল কোথায়? সালোয়ার কামিজ, জিন্সের প্যান্ট , বেলবটস আজ অতীতের সেই মায়ের মুখকে কেড়ে নিয়েছে। আঁচলে মায়ের মধ্যে যে হাসিটি ফুটে উঠতো,সেটি তো আজ ইতিহাস হয়ে পড়েছে। আঁচল কী তা আজকের বাচ্চারা জানে না , কারণ আজকাল মায়েরা আর শাড়ি পরে না। আঁচল অতীতের জিনিস।
আঁচলের কথা মনে এলেই ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেই মা যেতেন আমি তার আঁচল ধরেই যেতাম। আচার অনুষ্ঠান, পুজা মন্ডপ, বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও।
আঁচল মানেই মাতৃত্বের প্রকাশ।
আগে মায়ের আঁচল ছিল বহুমুখী। সেই আঁচলে ” একই অঙ্গে এতো রূপ, দেখিনা এখন”।
 তখন কতো কাজে লাগতো মায়ের এই আঁচল।
 উনুন থেকে গরম কোন পাত্র নামানোর সময় মা আঁচলটি ব্যবহার করতেন । কোন গরম প্যান,কেটলি ধরতেও আঁচলের খুব ব্যবহার হতো।
আঁচল ছিল এক অনন্য বস্তু । আঁচলের মহিমার উপরে লিখতে গেলে বোধ হয় একটা ছোটখাট বই লেখা হয়ে যাবে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে অতীতের অনেক শিশুর সুখ স্মৃতি।
 মা আমার রোদে পোড়া মুখের,শরীরের ঘাম পুছে দিতেন। স্কুলের ক্লাস ছুটি না হওয়া পর্যন্ত মা স্কুলের কাছে কোন বাড়ির রোয়াকে অন্যান্য মায়েদের সঙ্গে বসে অপেক্ষা করতেন স্কুলের ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত।
আমি বেরিয়ে আসতেই মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে, নাকের সর্দি মুছতে, নোংরা কান, মুখ পরিষ্কার করে দিতেন। তারপর বাড়ি থেকে আনা খাবারটি টিফিন বক্স থেকে বের করে খাইয়ে দিতেন। জল খাইয়ে দেবার পর আবার আঁচল দিয়ে মুখ মুছে দিতেন। ঠিক যেন একটা তোয়ালে। আঁচলকে তোয়ালে হিসাবে ব্যবহার করতেন। খাবার খেয়ে মায়ের আঁচলে মুখটা পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও ছিল আমাদের কাছে একটি খুশীর বিষয় ।
 কখনও কখনও, চোখের ব্যথার ক্ষেত্রে মা তার আঁচলকে গোল করে পাকিয়ে তাতে ফুঁ দিয়ে দিয়ে গরম করে চোখের উপর রাখতেন, সমস্ত ব্যথা তখন অদৃশ্য হয়ে যেত ।
 মায়ের কোলে ঘুমন্ত বাচ্চার জন্য কোলটি গদি এবং মায়ের আঁচল শরীরকে ঢাকার চাদর হিসাবে কাজ করত ।
 যখন খুব ছোট ছিলাম তখন কোনও অচেনা লোক বাড়ীতে আসত, আমি মায়ের আঁচলের একটি আড়াল নিয়ে তাকে দেখতাম। যখনই কোনও বিষয়ে লজ্জা বোধ করতাম, তখন ঐ আঁচল দিয়ে মুখটি ঢেকে রাখতাম এবং আঁচলের ভেতর লুকিয়ে পড়তাম ।
শুধু আমি কেন,সকল শিশুরাই এমনটি করতো। যখন বাচ্চারা মায়ের সাথে বাইরে যেত, তখন মায়ের আঁচল পথপ্রদর্শক হিসাবে কাজ করত । যতক্ষণ শিশুটির হাত আঁচল ধরে থাকত পুরো জগৎ তার মুঠোয় থাকত ।
 শীতকালে প্রচন্ড কনকনে ঠান্ডায় মা তার আঁচল দিয়ে আমাকে ঢেকে রাখতেন,যাতে কোনমতেই যেন ঠান্ডা লাগতে না পারে। পাড়ায় কোন রাতের অনুষ্ঠান হলে মায়ের সঙ্গে যেতাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম জানি না। মা সহত্নে আঁচল দিয়ে ঢেকে কোলে শুইয়ে দিতেন।
গ্রাম গঞ্জে গাছ থেকে পড়া আম, জাম, খেজুর এবং মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুল কুড়িয়ে আনতেও ব্যবহৃত হত মায়ের এই আঁচল। সরস্বতী পূজার সময় খুব সকালে মাকে দেখেছি ঘাসের উপর ঝরে পড়া শিউলী ফুল অত্যন্ত সন্তর্পণে আঁচলে তুলে নিতে। আমাদের বাড়ির বারান্দার বাইরেই ছিল মস্তবড় দুটি শিউলী ফুলের গাছ। বাড়িতে প্রবেশের মুখে গেটের দুপাশেই লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। গেট খুলে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ফুলের বাগান। নুড়ি পাথরের ছোট্ট রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সিড়ি পর্যন্ত। সিঁড়ির দুপাশে দুটো মস্তবড় গ্লান্ডিফ্লোরা গাছ।এই দুটি গাছের ডাল বাবা এনেছিলেন এক চা বাগানের ম্যানেজারের বাড়ি থেকে। কী সুন্দর ফুল হতো। সাদা বিশাল পাপড়ি মেলে ফুটে উঠতো ফুল।
মা শিউলী ফুল কুড়িয়ে এনে ঠাকুর ঘরে নিয়ে আসতেন। তার আগে মা সরস্বতীর আসন টি নিজের আঁচল দিয়েই পরিপাটি করে পুছে নিয়ে মূর্তিটি বসিয়ে ফুলের গোছা একটি তামার পাত্রে ঢেলে দিতেন। তারপর সেই শিউলী ফুলের মালা গেঁথে রাখতেন মা।
মায়ের আঁচলের গিঁটে বাধা থাকতো বাড়ির এক গোছা চাবি। আবার আঁচলেই ছিল মায়ের চলতি ফিরতি একটা ব্যাংক। কাউকে কিছু দিতে,কিছু কিনে আনতে মা ব্যাংকের গিঁট খুলে টাকা,পয়সা দিতেন। অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও মায়ের এই আঁচলে ঘরের চাবি ও চলতি ফিরতি ব্যাংক থাকতো। মা ঠোঁট লাল করে পান খেয়ে অনুষ্ঠান বাড়ির কাজের মাসিকে এই ব্যাংক থেকে বকশিস দেবার সময় ছোট্ট আমি মায়ের নির্দেশে এই আঁচলের ব্যাংকের তালা খুলে দিতাম। মা গুনে গুনে টাকা বের করতেন। আজকের দিনের মায়েদের অবশ্য সেই দিন গুলো নেই। তারা সহজেই গর্ব বোধ করে জিন্সের প্যান্ট থেকে টাকা বের করতে পারেন।
কথায় কথায় একটা কাগজের টুকরো চেকে সই করে টাকা দিয়ে থাকেন আজকের মায়েরা।
আজকাল শুধু জিন্সের প্যান্টই নয়, মায়েরা পুরুষদের মতো ছোট চুল রাখছেন। শার্ট, হাফ প্যান্টও পড়ছেন।
 মায়ের আঁচল এক মায়াবী অনুভূতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি পুরানো প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত এবং সর্বদা আমার মায়ের ভালবাসা এবং স্নেহ অনুভব করি, যা আজকের প্রজন্মের সম্ভবত বোঝার বাইরে ।
বাবার সেই ধুতি কোথায়???
 আজকাল বাবাদের ধুতি পড়তে দেখাই যায় না। অনেকের বাবাকেও দেখছি আগের দিনের মায়ের মতো লম্বা চুল রাখতে। অনেক বাবাকে দেখা যাচ্ছে কানে দুল এবং হাতে বালা পড়তে।
শুধু কোন পূজা ও উৎসব উপলক্ষ্যে অথবা বিয়ে বাড়িতে সেই পুরোনো ঐতিহ্যমূলক কোঁচা দেয়া ধুতি পড়তে দেখা যায় বাবাদের। আর মায়েরা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে পুজা মণ্ডপ ও বিয়ে বাড়িতে গিয়ে থাকেন। অতীতের মায়েদের বিপরীতে এখানকার মায়েরা পুরুষের মতো ছোট চুল রাখছেন। সিঁথিতে নেই সিঁদুরের চিহ্ন। এ এক অদ্ভুত আজগুবি জীবন।
ছোট শিশুকে আজ আর মায়েরা আঁচল দিয়ে ঘিরে রাখেনা। নিজেরা দেখাশোনা না করে অনেকেই আয়ার হাতে ছেড়ে চলে যান। ফলে এই শিশুদের মনে মায়ের প্রতি তেমন অনুভূতিও জাগে না।
আগে মায়েরা আচার অনুষ্ঠান,উৎসবে গেলে অন্যান্য মহিলাদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিতেন, হাসি মস্করা করতেন। আজকের মায়েদের সেই সময় কোথায়!! হাতে সর্বক্ষণ চলছে মোবাইলে টিকটিক করা। হিয়ারিং এইড কানে দিয়ে কী যে বিড়বিড় করে চলেন,আবার হাসতে থাকেন তাতে অনভিজ্ঞ মানুষ পাগল বলেও ভাবতে পারেন।
মায়ের আঁচলের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে সেদিনের মায়ের চাঁদের আলোয় মিষ্টি হাসিও। এটা ভেবেই বুঝি বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক অখিল বন্ধু গেয়েছিলেন, ” মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মুখে পড়ে, মাকে মনে পড়ে আমার মাকে মনে পড়ে”।