ছেলেদের বাঁচাতেই খূন হলেন পিতা সুরুজ মিয়া: র্যাব সিইও
- আপডেট সময়- ১২:০৭:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪ ১৭৬ বার পড়া হয়েছে
না’গঞ্জ আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা: প্রধান আসামীসহ গ্রেফতার-৪
সিদ্ধিরগঞ্জ (না’গঞ্জ প্রতিনিধি।।
নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার কাশিপুরে প্রকাশ্যে দিবালোকে আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামী ও মূল পরিকল্পনাকারীসহ চাঁরজনকে গ্রেফতার করেছ র্যাব-১১।
রোববার (৩০ জুন) র্যাব-১১’র মিডিয়া কর্মকর্তা সনদ বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-মামলার প্রধান আসামী আলাউদ্দিন ওরফে হীরা (৩৫), মোঃ আল আমিন (২২), মোঃ রাসেল (২০) ও মোঃ সানি (২৯)। শনিবার (২৯ জুন) চর সৈয়দপুর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১২, জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ এবং একাধিক মামলার আসামী।
জানা গেছে, নিহত ভিকটিম সুরুজ মিয়া এলাকার সাবেক মেম্বার এবং কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক। এছাড়াও তিনি কাশিপুরস্থ আলীপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ভিকটিম সুরুজ মিয়ার অটোরিকশা গ্যারেজ ও ইট-বালুর ব্যবসা রয়েছে।এই ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে প্রধান আসামী আলাউদ্দিন ওরফে হীরা এবং তার ভাই সালাউদ্দিন ওরফে সালু এর সঙ্গে ভিকটিমের পূর্ব থেকেই বিরোধ চলছিলো। ঘটনার ১০/১৫ দিন পূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামী হীরা ও তার ভাই সালু এলাকার একটি নির্মানাধীন ভবনে গিয়ে ভবনের মালিকের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। ওই ভবনের মালিক এলাকার মুরুব্বি ও গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসেবে ভিকটিম সুরুজ মিয়ার কাছে বিচার দেন। ভিকটিম গ্রেফতারকৃত আসামী হীরা ও সালুর বাবাকে বিষয়টি অবহিত করেন এবং হীরা ও সালুকে চাঁদাবাজী থেকে বিরত থাকতে বলেন।
এ ঘটনার সূত্রে ধরেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ২৭ জুন সুরুজ মিয়া আলী পাড়া জামে মসজিদে নামাজে থাকাকালীন গ্রেফতারকৃত আসামীরা আলাউদ্দিন ওরফে হীরার নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন গ্রুপের ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত প্রত্যেকের হাতে রামদা, বগিদা, ছোরা লোহার রড ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আলী পাড়া জামে মসজিদের দান বক্সের সামনে রাস্তায় ভিকটিমের বড় ছেলে রাজু (৪৩) এবং ছোট ছেলে জনির (৪১) পথরোধ করে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী হীরার হাতে থাকা রামদা দিয়ে রাজু’র মাথায় কোপ দিতে গেলে রাজু হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার হাতের কনুয়ের উপর আঘাত লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। এছাড়াও অন্যান্য আসামীরা রাজু এবং জনিকে এলোপাথাড়ী আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম করে মুমূর্ষ অবস্থায় ফেলে রাখে। এ সময় যোহরের নামাজ শেষে ভিকটিম মসজিদ থেকে বেরিয়ে উক্ত ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছালে ভিকটিমকেও আঘাত করার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হলে হাতাহাতির এক পর্যায়ে ভিকটিম আত্নরক্ষার্থে আক্রমণকারীদের একজনের হাত থেকে রামদা ছিনিয়ে নিয়ে আত্নরক্ষার চেষ্ঠা করলে গ্রেফতারকৃত আসামীরাসহ অন্যান্য আসামীরা ভিকটিমের মাথা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে ফেলে রেখে চলে যায়। পরবর্তীতে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরুজ মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
র্যাব-১১ আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত ১নং আসামী আলাউদ্দিন ওরফে হীরার বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় চুরি, ডাকাতি, হত্যার চেষ্টা এবং গুরুতর জখমসহ দশ এর অধিক মামলা এবং জিডি রয়েছে। গ্রেফতারকৃত ২নং আসামী মোঃ আল আমিন এর বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনসহ ৫টি মামলা এবং জিডি এবং গ্রেফতারকৃত ৩নং আসামী মোঃ রাসেলের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় ২টি মাদক মামলা চলমান রয়েছে বলে জানান র্যাব -১১।