ঢাকা ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ রক্তঝরা শোকাবহ ১৫ আগষ্ট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩ ৬৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

শোকাবহ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস আজ। দিনটি বাঙালি জাতির জন্য গভীর শোক ও বেদনার একটি দিন। জাতির জনককে হত্যার কলঙ্কিত  দিনও। ১৯৭৫ সালের আজকের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে সেনাবাহিনীর বিপথগামী সদস্যরা।এর পেছনে ছিল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকীর দিনটি জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করা করছে। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত,১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোররাতে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে সে সময়ের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে হামলা চালায় সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য। হামলা চালানো হয় বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি ও ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায়। নারী-শিশু-নির্বিশেষে হত্যা করে নৃশংসতার এক জঘন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে খুনিরা। বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এবং তাঁর ছেলে আরিফ ও সুকান্তবাবু, মেয়ে বেবি, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আত্মীয় আব্দুল নাঈম খান রিন্টুকে হত্যা করে খুনিরা।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁকে বাঁচাতে এসে সোবহানবাগে সেনা সদস্যদের গুলিতে নিহত হন বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব কর্নেল জামিল। বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পর বিশ্বজুড়ে বাঙালি জাতির ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেলজয়ী পশ্চিম জার্মানির নেতা উইলি ব্রানডিট বলেন, মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যেকোনো ধরনের জঘন্যতম কাজ করতে পারে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিদের আইনের আওতায় আনার পথ রুদ্ধ করে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়। ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদ এ অধ্যাদেশ জারি করেন। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সকে আইন হিসেবে অনুমোদন করেন।
২১ বছর পর বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিচারের পথ খোলে। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৬ সালের ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তিন প্রধান আসামি বরখাস্ত লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ১৪ নভেম্বর সংসদে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করা হয়। একই বছরের ২ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহকারী (পিএ) এ এফ এম মোহিতুল ইসলাম পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় একটি এফআইআর করেন। মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ১৯৯৮ সালে রায়ে আদালত ১৫ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আজ রক্তঝরা শোকাবহ ১৫ আগষ্ট

আপডেট সময় : ০৬:৪৯:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

শোকাবহ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস আজ। দিনটি বাঙালি জাতির জন্য গভীর শোক ও বেদনার একটি দিন। জাতির জনককে হত্যার কলঙ্কিত  দিনও। ১৯৭৫ সালের আজকের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে সেনাবাহিনীর বিপথগামী সদস্যরা।এর পেছনে ছিল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকীর দিনটি জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করা করছে। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত,১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোররাতে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে সে সময়ের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে হামলা চালায় সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য। হামলা চালানো হয় বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি ও ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায়। নারী-শিশু-নির্বিশেষে হত্যা করে নৃশংসতার এক জঘন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে খুনিরা। বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এবং তাঁর ছেলে আরিফ ও সুকান্তবাবু, মেয়ে বেবি, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আত্মীয় আব্দুল নাঈম খান রিন্টুকে হত্যা করে খুনিরা।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁকে বাঁচাতে এসে সোবহানবাগে সেনা সদস্যদের গুলিতে নিহত হন বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব কর্নেল জামিল। বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পর বিশ্বজুড়ে বাঙালি জাতির ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেলজয়ী পশ্চিম জার্মানির নেতা উইলি ব্রানডিট বলেন, মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যেকোনো ধরনের জঘন্যতম কাজ করতে পারে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিদের আইনের আওতায় আনার পথ রুদ্ধ করে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়। ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদ এ অধ্যাদেশ জারি করেন। পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সকে আইন হিসেবে অনুমোদন করেন।
২১ বছর পর বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিচারের পথ খোলে। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৬ সালের ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তিন প্রধান আসামি বরখাস্ত লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ১৪ নভেম্বর সংসদে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করা হয়। একই বছরের ২ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহকারী (পিএ) এ এফ এম মোহিতুল ইসলাম পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় একটি এফআইআর করেন। মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ১৯৯৮ সালে রায়ে আদালত ১৫ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।