সর্বশেষ:-
না’গঞ্জে নাসরিন হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ১
প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ১২:৫৪:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩ ১২৩ বার পড়া হয়েছে
একান্তে সময় কাটানোর চুক্তিতে ব্লাকমেইলিং’ ক্ষোভে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড সংঘটিত!
বিশেষ প্রতিনিধি।।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ জালকুড়ির সীমা ডাইনিং সংলগ্ন এলাকায় নাসরীন আক্তার (৪০) হত্যাকান্ডের ৩৬ ঘন্টার মধ্যে মূল আসামী গ্রেফতার সহ রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
এ ঘটনা হত্যাকারী মূল আসামি মো: কমল ওরফে কুদ্দুস (৩৩) কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (২২ মে) দুপুরে ১২.৩০ ঘটিকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলনে কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত সহ হত্যাকান্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল পিপিএম (বার)।
এরও আগে গত রোববার (২১ মে) সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম ডিজিটাল তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানাধীন পূর্ববানা চিলমারীর চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানাধীন পূর্ববানা চিলমারীরচর এলাকার আঃ জলিলের ছেলে মো. কমল ওরফে কুদ্দুস(৩৩)।
এ ঘটনা সাথে জড়িত অপর আসামি রংপুর জেলার কাউনিয়া থানাধীন হয়ভোদখা এলাকার চান্দু আকন্দ ওরফে ফতেহ মিয়ার ছেলে অভির উদ্দিন(৩৫) এখনো পালাতক রয়েছেন।
পুলিশ সুপার জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি সীমা ডাইনিং সংলগ্ন এলাকা থেকে গত ১৯ মে সকালে নাসরিন আক্তারের হাত-পা বাধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।জানা গেছে তিনি একটি গানের আসরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেনি,এ ঘটনার পরের দিন উল্লেখিত স্থানে তার লাশ পাওয়া যায়। পরে নিহতের পিতা আশরাফ দেওয়ান বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে সিদ্ধিরগন্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলাটি জেলা পুলিশ সুপারের সার্বিক তত্বাবধানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যা কান্ডে জড়িতদের সনাক্ত করা হয়।
পরে গত রোববার(২১ মে) কুড়িগ্রামের চিলমারী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জড়িত মূলহোতা কমলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কমল হত্যাকান্ডে জড়িততার কথা স্বীকার করে পুলিশকে জানায়, ঘটনার দিন রাতে কমল ও অভির উদ্দিন দুজনে জালকুড়িতে যায় গান শুনার উদ্দেশ্যে। গান শেষে রাত প্রায় সোয়া ৩ টার দিকে পাশের চায়ের দোকানে চা খেতে খেতে নাসরিনের সঙ্গে পরিচয় হয়।
এসময় অর্থের বিনিময়ে কমল ও অভির উদ্দিনের সঙ্গে নাসরিনের একান্ত সময় কাটানোর চুক্তি হয়। পরে কমল ও অভির উদ্দিনকে নিয়ে নাসরিন একটি পরিত্যাক্ত জরাজীর্ণ ঘরে যায়।
তখন নাসরিনের মোবাইলে কল আসলে কথা বলতে তিনি বাইরে বেড়িয়ে যায়। এমন সময় ঘরে দুই ব্যক্তি প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কমল ও অভির উদ্দিনের কাছ থেকে নগদ ৯ হাজার ৪০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
ওই ছিনতাই চক্রের সঙ্গে ভিকটিমের হাত রয়েছে এমন সন্দেহে কমল ও অভির উদ্দিন তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কমল ভিকটিমকে আবার টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ফুর্তি করতে রাজি করিয়ে সীমা ডাইং এলাকার তালতলা খালপাড় বালুর মাঠে নিয়ে যায়। এসময় নাসরিনের গায়ের ওড়না দিয়ে তার হাত-পা বেধে কমলের সঙ্গে থাকা লালসালু কাপড় গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
এরপর কমল ও অভির উদ্দিন দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ভাড়া বাসায় গিয়ে দুজনই তাদের গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। হত্যাকারী কমলের দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, আসামির পরিহিত সাদা লুঙ্গি ও গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়েছে। পলাতক অভির উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
প্রসঙ্গত, নিহতের পিতা আশরাফ দেওয়ানের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা যায়,এর আগে নাসরিনের ৩টি বিয়ে হয়। প্রথম সংসারে দুইটি ও দ্বিতীয় স্বামীর সংসারেও দুইটি সন্তান রয়েছে তার। পরিবারের অনিচ্ছায় তৃতীয় বিয়ে করলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। পিতার সংসারেই থাকত নাসরিন।