পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে পূজামণ্ডপে একটি ‘পেট্রলবোমা’ নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। সেটিতে সামান্য আগুন ধরলেও কেউ হতাহত হয়নি। কালো হয়ে যাওয়া সলতেসহ পেট্রলভর্তি কাচের বোতলটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, পূজামণ্ডপের পাশের একটি গলি থেকে কয়েকজন যুবক পূজার মঞ্চ লক্ষ্য করে একটি বোতল ছুড়ে মারেন। স্বেচ্ছাসেবকেরা হামলাকারীদের ধরতে গেলে তাঁরা ছুরিকাঘাত করেন। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনার পর ঘটনাস্থলে আসেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। আটক একজনের কাছ থেকে একটি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন।
তবে তাঁতীবাজার পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয় শাহ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, পেট্রলবোমা হামলা ও ছিনতাই দুটি পৃথক ঘটনা। পূজামণ্ডপে নাশকতার জন্য পেট্রলবোমা হামলা করা হয়েছে।
ছুরিকাঘাতে আহত ব্যক্তিরা হলেন দীপ্ত দে (২৬), ঝন্টু ধর (৫০), খোকন ধর (৪০), সাগর ঘোষ (২৬) ও মো. রমিজ উদ্দিন (৩০)। তাঁরা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সবাই আশঙ্কামুক্ত বলে কোতোয়ালি থানার এসআই মো. লিটন জানিয়েছেন। আর এ ঘটনায় আটক তিনজন হলেন গাইবান্ধার আকাশ (২৩), পটুয়াখালীর মো. হৃদয় (২৩) ও নোয়াখালীর মো. জীবন (১৯)। তাঁরা কোতোয়ালি থানা হেফাজতে আছেন।
পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি পূজা উদযাপন কমিটির স্বেচ্ছাসেবকেরা রয়েছেন। তাঁদের একজন জয় শাহ বলেন, হামলাকারীরা পেট্রলবোমা মেরে পালানোর সময় কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক হামলাকারীদের ধরে ফেলেন। তখন হামলাকারীরা তাঁদের ছুরিকাঘাত করে পালানোর চেষ্টা করেন। এতে চারজন স্বেচ্ছাসেবক ও একজন দর্শনার্থী আহত হন।
পুরো পূজামণ্ডপটি সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। সেখানকার একটি ফুটেজে দেখা গেছে, পূজামণ্ডপের পাশের একটি গলিতে তিন যুবক জড়ো হয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন। এর কিছুক্ষণ পরে তাঁরা পূজামণ্ডপের কাছে এসে হামলা করেন।
এদিকে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করেছে।