সর্বশেষ:-
প্রচ্ছদ /
অর্থ ও বাণিজ্য, আইন আদালত, আন্তর্জাতিক, আবহাওয়া ও জলবায়ু, ইসলাম ও জীবন, উপজেলা প্রশাসন, গণমাধ্যম, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, ঢাকা, দেশজুড়ে, নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ সদর, নারী ও শিশু, পূর্বাভাস, ফিচার, বাংলাদেশ
নারায়ণগঞ্জে অস্থির নিত্যপণ্যের দাম, স্বস্তি নেই কাঁচা বাজারেও

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময়- ১১:১৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৭৬ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক।।
বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি। বর্তমানে আলু ও কাঁচা পেঁপে ছাড়া বাজারে হাতেগোনা কয়েকটি সবজির দামই ১০০ টাকার নিচে। সেই সঙ্গে মাছ-মুরগিতেও নেই স্বস্তি। বেগুন, সিম, বরবটি থেকে শুরু করে টমেটো; সবই স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। কয়েদিন ধরে বলা হচ্ছিল, বৃষ্টি ও বন্যার কারণে বাড়ছে দাম। কিন্তু কয়েকদিন টানা বৃষ্টি নেই। তারপরও কমছে না সবজির দামের উত্তাপ।
আজ শনিবার, নারায়ণগঞ্জ শহরের সবচেয়ে বড় দিঘুবাবুর কাঁচাবাজার সবজি কিনতে এসেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী ঈমান হোসেন। কিন্তু, সবজির চওড়া দাম নিয়ে তার মন খারাপ এবং ক্ষোভে ফোপাঁচ্ছিলেন। তবে অন্যদিনের তুলনায় পরিমাণেও কম কিনলেন।
তিনি বলেন, “সব সবজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। বেশি কেনার ইচ্ছে থাকা সত্বেও হাফ কেজি কইরাই কিনলাম। মনটা খারাপ। সবজির দাম তো কইমা যাওয়ার কথা। বৃষ্টির জন্য কয়দিন দাম বাড়তি ছিল মানলাম। এখন কী সমস্যা?
শনিবার নারায়ণগঞ্জ অন্যতম বৃহত্তর দিঘুবাবুর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহান্তে দুই-একটি সবজির দাম কমলেও গেল কয়েক সপ্তাহের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ শাক-সবজি।
বিক্রেতাদের মধ্যে কেউ-কেউ বলছেন, এই সময়টা গ্রীস্ম ও শীতকালীন সবজির মাঝামাঝি মৌসুম। যে কারণে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম, তাতে দাম বেড়েছে।
কেউ আবার বলছেন, কিছুদিন আগে টানা বৃষ্টিতে সবজির উৎপাদন কিছুটা ব্যহত হয়েছে।
এছাড়া, উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় বন্যার কারণেও সবজির বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, বিক্রেতারা নানা যুক্তি দেখালেও, ক্রেতারা সবজির দাম নিয়ে ‘নাখোশ’।
শনিবার যেমন ছিল সবজির দরদাম
গেল এক মাসের বেশি সময় ধরে সবজির বাজার চড়া। বাজারে আলু, কুমড়ো ও কাঁচা পেঁপে ছাড়া প্রায় সব সবজির দামই ৮০ থেকে ১০০ টাকা কিছু কিছু সব্জি তারও বেশি।
শনিবার নারায়ণগঞ্জের দিঘুবাবুর কাঁচাবাজারে চিকন লম্বা আকৃতির প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আর বড় গোল আকৃতির বেগুনের দাম ১২০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত চাইছেন বিক্রেতারা।
অন্যান্য সবজির দামও চড়া। আগের সপ্তাহের মতো করলা ও ঢেঁড়সের কেজি পড়ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। পটল ৮০ থেকে ১০০, ধুন্দল ৮০, চিচিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এর বাইরে ঝিঙা ৭০ থেকে ৮০, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ ও কাঁচামরিচ প্রকারভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
শীতকালীন সবজির মধ্যে আকৃতিভেদে
একেকটি লাউ ৫০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটোর কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, গাজর ৮০ থেকে ১২০ টাকা, দেশি শসা ১০০ ও হাইব্রিড শসা ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বাজারে মাঝারি আকারের লেবুর হালি মিলছে ২০ টাকাতেই। আর বড় আকারের লেবু ৫০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
আকারভেদে একেকটি চাল কুমড়ার দাম ৫০ থেকে ৮০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। ধনেপাতার কেজি পড়ছে ৪০০ টাকা।
অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁকরোল ১০০ থেকে ১২০, মুলা ৬০ ও মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি আলু মিলছে আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকায়।
কাচামালের ‘দাম বেশি, কেনা কমিয়ে দিয়েছি’ ক্রেতা সাধারণ।
দিঘুবাবুর কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে আসা ফরহাদ আহমেদ বলেন, “আগে সবজির দাম ভালোই কম ছিল। এখন দাম বেড়ে গেছে, তাই বাধ্য হয়ে কেনাও কমিয়ে দিয়েছি। বরবটি কিনতে গেলাম। দাম শুনে হাফ কেজি নিয়েছি মেয়ে পছন্দ করে বলে। নাহয়, নিতাম না।
এবাজারে সবজি কিনতে এসেছিলেন পোশাক কারখানার কর্মী লিপি আক্তার। সবজির দাম শুনে শাক কিনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
“ কাচা সবজির যা দাম। একটু কম দামে পেঁপে কিনছি দুইদিন আগে। এখন আর খাইতে ইচ্ছে করতাছে না। যে বেতন পাই, অন্য সবজি কিনলে টানাহেঁচড়া খাইতে হবে মাস চালাইতে গিয়া। তাই শাক কিনলাম আরকি।
একই বাজারে আসা আরেক ক্রেতা আলেপ মিয়া বলেন, “সবজির দাম অনেকদিন ধরেই বাড়তি। পোটল কিনলাম এক কেজি ৮০ টাকা। অন্য সবজিতে তো হাতই দেওয়া যায় না। দামের জন্য কেনা কমিয়ে দিয়েছি।”
যা বলছেন বিক্রেতারা:
সবজির দাম নিয়ে জানতে চাইলে মহাখালী কাঁচাবাজারের বিক্রেতা ছলিম হোসেন বলেন, সবজির দাম গেল সপ্তাহের মতোই আছে। আমরা বেশি দামে কিনেছি। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
এই বাজারের আরেক বিক্রেতা জামিল হোসেনও বললেন একই কথা। তিনি বলেন, “আমি কমে কিনতে পারলেই তো কাস্টমাররে কমে দিমু। এখন দাম চড়া।”
এর মধ্যে হাত ঘুরে-ঘুরে আসায় দাম আরও বেশি বেড়ে যায়।
এছাড়াও “গেল কয়েকদিনের বৃষ্টি আর উত্তরাঞ্চলে বন্যার কারণে সবজি ক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে বিক্রেতাদের কাছে শুনেছি।”
তিনি বলেন, “আরেকটা জিনিস হল মৌসুম। মাসখানেক পর ধীরে-ধীরে শীতকালীন সবজি বাজারে ঢুকতে শুরু করবে। তখন হয়তো দামটা কমে আসবে বলে আশা করি।